আত্মাহুতি / আহমেদ মাহবুব ফারুক

একটি কাঙিক্ষত স্বপ্ন প্রতিদিন ঘুরপাক খায় আমাতে। আকাশ রঙিন হয়, পাখিরা পাখা মেলে সাঁতার কাটে আকাশে। শিশিরসিক্ত ঘাসে ফড়িংগুলো লাফিয়ে ছুটে বেড়ায়। সবুজ ক্ষেতে ঢেউ খেলা করে। নদীতে জোয়ার আসে। বাগানে ফুলের কুড়িগুলো উৎসুক দৃষ্টিতে মাথা উঁচু করে দাঁড়ায়। মনের অলিন্দে হৃদয় নাচতে থাকে। আমি স্বপ্নের প্রেমে পড়ে যাই।

ষ্বপ্নের চোখে চোখ রাখি। সবুজ দেখি। স্বপ্নের হাসিতে হেসে উঠি। কাঁদলে আমার চোখদুটোও অশ্রুসিক্ত হয়ে যায়। দুঃখে কষ্ট পাই, একাকীত্বের সঙ্গী হই। স্বপ্নের সুখ দেখতেই আমার চোখ দুটো আনন্দে নেচে উঠে। স্বপ্নের আকাশে মেঘ জমতেই আমাতে বৃষ্টি শুরু হয়। কষ্টের ভেলায় ভেসে চলি। ঝর্ণাধারা, বরফ নদী পেরিয়ে সমুদ্রে আত্মাহুতি দেই।

তবে সব কিছুই ঘটতে থাকে স্বপ্নের অগোচরে। এভাবে অনেকটা সময় গড়িয়ে যায়। সোনালী র্সূ্যটা ডুব দেয় স্বপ্নের ভূবনে। চাঁদ হেসে উঠে। তারারা জেগে রয় রাত ভর। পাখির কলতানে পৃথিবী আবারও আলো ফিরে পায়। চক্রাকারে চলতে থাকে সবকিছু নিয়ম মাফিক।

একসময় স্বপ্নের জীবনে আবির্ভাব ঘটে এক দু:স্বপ্নের। স্বপ্নকে জড়িয়ে ধরে। স্বপ্ন দেখায়, সুখ দেয়, দেয় ভালবাসা। স্বপ্ন নিখাঁদ আভিনয়ে সমর্পিত হয় দু:স্বপ্নের কাছে। আমার জমিয়ে রাখা আগামী  স্বপ্নগুলো ভেঙ্গে নিঃস্ব করে দেয় আমাকে। দুঃস্বপ্ন পরিতৃপ্তির ঢেকুর তোলে আর বুক উচিয়ে আড়াল করে রাখে স্বপ্নকে। মস্ত দেয়াল এটে দেয় আমার পৃথিবীতে। আমি ধারাপাত নামতা ভুলতে থাকি। পাখিরা গান বন্ধ রেখে গগন বিদারী মাতম তোলে। আমার হাসি-কান্না আর জোয়ার ভাটায় ছন্দপতন ঘটতে থাকে অনবরত।

দু;হাত কেবলই মুষ্ঠিবদ্ধ হয়। সমস্ত প্রতিবাদী শক্তি মিছিলে নামে। মনের ভেতর গভীর আম্পান ঝড়ে সমস্ত শিরা উপশিরায় তোলপাড় শুরু হয়। এরই মধ্যে স্বপ্নের নূপুর ঝংকার শুনতে পাই। পরিতৃপ্তির  ঢেউ তুলে পাশ কেটে ছুটে যায় সে। আমার সমস্ত প্রতিবাদে সহসা  ধ্বস নামে। আমি কেবল গুনতে থাকি এক  দুই  তিন…

( ছবি সংগৃহীত)