মটকু ভাই

মটকু ভাই

মটকু ভাই  

বিজ্ঞানী মেয়ে

মটকু ভাইয়ের বয়স বেড়েছে। এখন সে অনেক বুড়ো হয়েছে। একদিন মটকু ভাই তার বিজ্ঞানী মেয়ের কাছ থেকে একটা চিঠি পেল, যে বাইরে কাজ করে। প্রিয় বাবা-মা, আমি তোমাদের অনেক মিস করছি। আমি একটা প্রোজেক্টে কাজ করছি যেটার কাজ শেষ হতে অনেকদিন লাগবে। কিন্তু আমি তোমাদের বয়স্ক দেখতে চাই না। আমি তোমাদের ওরকমই দেখতে চাই, যেরকম আমি দেখে গিয়েছি। আমি তোমাদের একটা ওষুধ পাঠালাম যেটা আমি বানিয়েছি। এটা খেলে তোমাদের বয়স কমে যাবে। তোমরা দুইজন এটা এক ফোঁটা করে খেও। যাতে বয়স কমে যায়। আর আমি ফিরে এসে তোমাদের ওরকমই দেখতে পারি, যেরকম আমি দেখে গিয়েছি। তোমাদের অনেক ভালবাসি।

ইতি

তোমাদের মেয়ে

(চিঠির সাথে একটা ছোট বোতল। 

মটকু ভাই স্ত্রীকে বলল,  তুমি আগে খাও। স্ত্রী খেল ওষুধ এক ফোঁটা, তার বয়স ৫ বছর কমে গেল। এরপর,মটকু ভাই খেল এক ফোঁটা। সেও কমবয়স্ক হ্যাণ্ডস্যাম হয়ে গেলো। যাই হোক,  এক বছর পর তাদের মেয়ে ফিরে এল। সে এসে দেখল তার বাবা খুব যুবক আর হ্যান্ডসাম হয়েছে, আর তার কোলে একটা বাচ্চা। 

মেয়েতো মহাখুশি। সে ভাবল তার বাবা মার বয়স কমে গিয়ে আরেকটা বাচ্চা নিয়েছে।মটকু ভাই মেয়েকে দেখে খুশি হয়ে বলল,  তোমার ওষুধ অনেক কাজ করেছে। মেয়ে জিজ্ঞেস করল, মা কোথায়? বাবা বলল , তোমার মা আমাকে কমবয়স্ক দেখে আরও ঈর্ষান্বিত হয়ে সে চাইল তার বয়স আরও কমে যাক। তাই সে পুরো বোতল ওষুধ খেয়ে ফেলে। যাতে আমি আর খেতে না পারি। আর তার বয়সও আরও কমে যায়। আর এখন সে আমার কোলে।

 

 

গতবর্ষের খতিয়ান 

 

মটকু ভাই তার স্ত্রীকে লিখল,

হে আমার প্রিয়তমা স্ত্রী,

 

গত বছর আমি তোমার সাথে তিনশো পঁয়শট্টি দিনই মিলিত হতে চেয়েছি, কিন্তু সফলকাম হয়েছি মাত্র ছত্রিশবার। অর্থাৎ গড়ে, প্রতি দশ দিনে একদিন। নিচে কারণগুলো তুলে ধরছি।  যেগুলোর কারণে আমি তোমার সাথে খায়েশমাফিক মিলিত হতে পারিনি।

 

তোমার গোঙানির চোটে বাচ্চারা জেগে গেছে- চুয়ান্ন বার

অনেক রাত হয়ে গিয়েছিল পনেরো বার

তুমি খুব ক্লান্ত বেয়াল্লিশ বার

সবেমাত্র সন্ধ্যা, এইবেলা ক্যাম্নে কী- বারো বার

খুব গরম পড়েছে, আজ না- আঠারো বার

তুমি ঘুমের ভং ধরে পড়ে ছিলে- একুত্রিশ বার

প্রতিবেশীরা আঁড়িপেতে ছিল- নয় বার

তোমার মাথাব্যথা নয়তো মাজাব্যথা ছাব্বিশ বার

তোমার কুঁচকিতে ফোঁড়া দশ বার

তোমার আম্মা আশ-পাশে আজাইরা পায়চারি করছিল- নয় বার

তোমার মুড নাই- একুশ বার

কাহিনী-ঘার-ঘার-কী, মিস হয়ে গেল বলে- সতেরো বার

চুলের ফ্যাশন নষ্ট হবে- ছয় বার

আজকের রাতে এসব করা গুণাহ চৌদ্দ বার

তোমার বাথরুম পেয়েছে- ঊনিশ বার

যে ছত্রিশবার তাও কষ্টে সৃষ্টে মিলিত হয়েছি, সেটাও সবসময় উপভোগ্য ছিল না কারণ-

-ছয়বার তুমি শুধু বুড়ো কচ্ছপের মত শুয়েই ছিলে। একটু ছলাকলা করে আমাকে তাতিয়ে দেবার কোন বালাই ছিল না।

-আটবার তুমি এমনভাবে উপরে তাকিয়ে ছিলে যে আমিই ভয়ে ছিলাম স্ক্রু ঢিলা সিলিং ফ্যানটা আমার গর্দানে এসে পড়ে কিনা।

-চারবার, তুমি উঠে যেতে এমন পইপই করছিলে, যেন আমি একটা ধর্ষক।

-সাতবার আমার তোমাকে ঘুম থেকে জাগিয়ে তুলে বলতে হয়েছে যে- কাজ সেরেছে।

-একবার তো তোমার হুটোপুটি মোচঙামোচড়ি দেখে ভয়ই পেয়ে গিয়েছিলাম, কিছু ফাটিয়ে ফেলেছি কিনা।

 

জান, আমার একটাই অনুরোধ। এই ব্যাপারটাকে একটু পুঃ:পৌনিক আর আরেকটু আনন্দঘন করে তোলা কী যায় না?

 

ইতি, তোমার আদরের স্বামী।

 

মটকু ভাই স্ত্রী লিখল,

 প্রিয়তমেষু মটকু ভাই ওরফে স্বামী,

 

আমার মনে হয়, হিসেবে তুমি বেশ বড়সড় গণ্ডগোল করেছ। এখানে আমি আসল কারণগুলো তুলে ধরছি, যার কারণে তোমার-আমার মধুর মিলন বাধাগ্রস্থ হয়েছে।

মাতাল হয়ে বাড়ি ফিরেছ আর ঘরজুড়ে মাদী বেড়াল খুঁজে বেড়িয়েছ- তেইশ বার

দেরী করে বাসায় ফিরেছ- তেত্রিশ বার

একেবারে ঘরেই ফেরোনি- ছত্রিশ বার

জামাকাপড় না ছেড়েই সোফায় ঘুমিয়ে পড়েছ- একুশ বার

দুনম্বর মুভি দেখে দুর্বল হয়ে ফিরেছ- ষোল বার

ভরা বিকেল, বাড়িভর্তি মানুষ, এটাও কী সম্ভব!- আটত্রিশ বার

চরমে পৌছুনোর আগেই নরম- ঊনিশ বার

 

তোমার রানের গোড়ায় খাজুলি- ষোল বার

আনিতম্ব ছোট ছোট ফুঁসকুড়ি, কীভাবে জানিনা ঊনত্রিশ বার

ইয়েতে চেন আটকে ফেলেছ- পনেরো বার

তোমার নাক দিয়ে সর্দি গড়িয়ে পড়ছিল- একুশ বার

চা খেতে গিয়ে ঠোঁট পোড়া গেছে- নয় বার

আঙুলে ব্যথা- এগারো বার

রাত জেগে জুলিয়ার নাচ দেখেছো- বিশ বার

স্টাইল নির্বাচন করতে করতেই টাইম শেষ- বাইশ বার

 

এতদসত্ত্বেও তোমার সাথে শুয়েছি কারণ- নিতান্তই তোমাকে ভালোবাসি বলে। যতবারই মিলিত হয়েছি, চেষ্টা করেছি তোমাকে সর্বোচ্চ প্রহ্লাদিত করতে। আর আমি সিলিং ফ্যানের দিকে তাকাই নি। তোমার মুখের অসহ্য গন্ধ থেকে বাঁচতে মুখটা একটু তোলা দিয়ে ছিলাম। আর হুটোপুটি-মোচরামুচড়ি করার কারণ একটু বিশুদ্ধ বায়ু সেবনের চেষ্টা। কারণ তুমি ওসময় অপদার্থের মত বাজে রকমের বায়ু নির্গত করেছিলে।

 

আশা করি ভবিষ্যতে তুমি তোমার এই টুকটাক সমস্যাগুলো কাটিয়ে উঠবে।

 

ইতি, তোমার আদরের বউ।