নড়াইল জেলাবারের বিজ্ঞ আইনজীবীপ্রয়াত মোঃ ওয়ালিয়ার রহমান – কামরুজ জামান খান (তুহিন)
মোঃ ওয়ালিয়ার রহমান।নড়াইল জেলার লোহাগড়া থানার চর শামুকখোলা গ্রামে/১৯৩৭ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মৃত মোঃ মোজাম মোল্লা ১৯৫৭ সালে যশোর এমএম কলেজ থেকে বিএ পাশ করেন ১৯৫৯ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হতে এল এল বি ডিগ্রী লাভ করেন ১৯৬১ সালে নড়াইল বারে আইনজীবী হিসেবে যোগদান করেন। আইনাঙ্গনে তার সরব উপস্থিতি ও সৃজনশীল কর্মকান্ডের মাধ্যমে একজন স্বনামধন্য আইনজীবী হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন।
পেশাজীবনের শুরু থেকেই আইনজীবীদের অধিকার আদায় ও পেশার মানোন্নয়নে তিনি ছিলেন সোচ্চার।স্বাধীনতা পূর্ব সময়ে তিনি বারের সহ- সম্পাদক নির্বাচিত হন।রাজনীতি সচেতন বিজ্ঞ আইনজীবী ছিলেন। ছিলেন আওয়ামীলীগের একজন নিবেদিতপ্রাণ নেতা।স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে তিনি দুইবার বারের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ও দুইবার নির্বাচিত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।তিনি সভাপতি থাকাকালীন নড়াইলে পূর্ণাঙ্গ জেলা জজশিপ স্থাপনের জন্য আন্দোলন গড়ে তোলেন। যার ফলশ্রুতিতে /১৯৮৭ সালে নড়াইলে পূর্ণাঙ্গ জজ আদালত স্থাপিত হয়। নড়াইল বারের বর্তমান সংবিধান রচয়িতা তিনি।
প্রয়াত এই বিজ্ঞ আইনজীবী নড়াইলের সবধরনের সামাজিক আন্দোলন ও কর্মকান্ডের সাথে সম্পৃক্ত থেকেছেন আমৃত্যু।জীবদ্দশায় তিনি নড়াইল পাবলিক লাইব্রেরীর সম্পাদক ও কার্যকরী সহ – সভাপতি নির্বাচিত হন।১৯৭০ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে সম্পাদক,সভাপতি ও সহ- সভাপতি নির্বাচিত হন। নড়াইল মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার দুইবারের নির্বাচিত সম্পাদক ছিলেন। নড়াইল ক্লাবের যুগ্ম- সম্পাদক, সম্পাদকও সহ- সভাপতি নির্বাচিত হন। পৌর মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা কমিটির সদস্য ছিলেন। মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠা কমিটির আহবায়ক কমিটির একজন সদস্য ছিলেন। নড়াইল জেলা জাতীয় অন্ধকল্যাণ সমিতির সভাপতি ছিলেন।১৯৭৩থেকে ১৯৭৭ পর্যন্ত সরকারী কৌঁসুলীর দায়িত্বে ছিলেন। ১৯৮২থেকে ১৯৯৩ পর্যন্ত অর্পিত সম্পত্তির সরকারী কৌঁসুলী হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন।সোনালী ব্যাংক নড়াইল অঞ্চলের মনোনীত আইনজীবীর দায়িত্ব পালন করেন। নড়াইল পাবলিক লাইব্রেরী, নড়াইল ক্লাব ও বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির জীবন সদস্য ছিলেন। নড়াইল রাইফেলস ক্লাবের সহ- সভাপতি ছিলেন। নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজের ১৯৬২-৬৩ মেয়াদে, গবর্ণিংবডির সদস্য ছিলেন। ভিক্টোরিয়া কলেজের শতবর্ষ উদযাপন কমিটির সম্পাদক ও ২০০৩ সালে নড়াইল জেলা আইনজীবী সমিতির শতবার্ষিকী উদযাপন কমিটির সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন।
আওয়ামীলীগের জাতীয় কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্ণাঢ্য কর্মজীবনের অধিকারী নড়াইলের এই গুণী সন্তান একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযোদ্ধা মরহুম লেঃ মতিউর রহমান ও তৎকালীন জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মরহুম বজলুর রহমানের সাথে তিনি দুইটি মুক্তিযোদ্ধা প্রশিক্ষণ ক্যাম্প পরিচালনা করেন।
আমরা নড়াইলের এই কৃতিসন্তানকে হারিয়েছি।নতুন প্রজন্মের জন্য তাঁর বর্ণাঢ্য জীবনের আলোকপাত কিছুটা করার চেষ্টা করলাম। সাথে সাথে সৃজনশীল এই মানুষটির রূহের মাগফেরাত কামনা করছি। মহান আল্লাহ তাঁকে বেহেশত নসীব করুন। আমিন।
Facebook Comments Sync