পাখির পরকীয়া ও পরিযায়ি পাখি/ রক্তবীজ ডেস্ক

পাখির পরকীয়া ও পরিযায়ী পাখি/ রক্তবীজ ডেস্ক 

 পরকীয়া করা ঠিক নয় চেনেও বিয়ে করেও পরকীয়অয় জড়িয়ে পড়েন বহু মানুষ। বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ককে কেন্দ্র করে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা গোটা বিশ্বে কম নয়। পরকীয়ার কারণে  বিচ্ছেদের ঘটনাও ঘটে। বিচ্ছেদের পর অনেকে শুরু করেন  নতুন ঘর সংসার। কিন্তু মানুষ ছাড়াও আজকাল পরকীয়ায় জড়াচ্ছে পাখিরা! তাদের মধ্য়ে নাকি বাড়ছে বিচ্ছেদ।

শুনতে অবাক লাগলেও সাম্প্রতিক গবেষণায় তেমনটাই দাবি করেছেন খেচর বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের কথায়, পাখিদের ক্ষেত্রেও মানুষের মতোই সঙ্গীর থেকে বিচ্ছেদ নেওয়ার নির্দিষ্ট পদ্ধতি রয়েছে। তফাৎ শুধু একটাই। সেক্ষেত্রে আইনী কোন ব্যাপার নেই। নেই খোরপোশ দেয়ার পদ্ধতি।
 

অতিথি পাখি 

শীত এলেই বাংলাদেশে আসতে শুরু করে পরিযায়ী পাখি বা অতিথি পাখি। বিশেষজ্ঞদের মতে বাংলাদেশের হাওর ও উপকূলীয় এলাকা ছাড়াও সমতলের বেশ কিছু এলাকায় অতিথি পাখি এসে থাকে।

মূলত বর্ষার শেষে এবং শীতের আগে থেকেই এসব পাখি বাংলাদেশে আসা শুরু করে এবং দেশের বিভিন্ন এলাকায় মার্চ মাসের শেষ নাগাদ থাকার পর আবার ফিরে যায় পাখিগুলো।

বাংলাদেশে অবস্থানকালে মূলত টাঙ্গুয়ার হাওরসহ বিভিন্ন হাওর এলাকা আর কক্সবাজারের সোনাদিয়ার মতো বেশ কিছু দ্বীপের উপকূলে এসব পাখির ব্যাপক উপস্থিতি চোখে পড়বে।

শীতের সময়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় জলাশয়ে নানা রং বেরংয়ের পাখি চোখে পড়ে। ঢাকার কাছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জলাশয়ে এসব পাখি দেখতে ভিড়ও করেন অনেক দর্শনার্থী।

এছাড়াও মিরপুর চিড়িয়াখানার লেক, বরিশালের দুর্গাসাগর, নীলফামারীর নীল সাগর, সিরাজগঞ্জের হুরা, আর সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওর ছাড়াও নিঝুম দ্বীপ, ঢালচর, চরকুকরী মুকরী কিংবা দুবলার চরেও এসব পাখির ঝাঁক দেখা যায় শীতের সময়ে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার বলছিলেন যে শীতের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের জলাশয়গুলোতে অন্য রকম এক সৌন্দর্য তৈরি হয় পাখিগুলোর উপস্থিতিতে।

এতো সুন্দর লাগে যে বলে বোঝাতে পারবো না। খুব মায়াও লাগে যখন ওরা চলে যায়,” বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি।

এক সময় ধারণা ছিলো যে রাশিয়া ও সাইবেরিয়া থেকে অতিথি পাখি অর্থাৎ পরিযায়ী পাখিগুলো এ অঞ্চলে আসে কিন্তু এখন এর ভিন্নমত পাওয়া যাচ্ছে।

এসব পাখি নিয়ে গবেষণা করেছেন পরিযায়ী পাখি বিশেষজ্ঞ সারোয়ার আলম দীপু। তিনি বলছেন রাশিয়া ও সাইবেরিয়া থেকে এসব পাখি আসে বলে যে তথ্য প্রচলিত আছে সেটি ঠিক নয়।

বরং পাখিগুলোর মূলত আসে উত্তর মঙ্গোলিয়া, তিব্বতের একটি অংশ, চীনের কিছু অঞ্চল, রাশিয়া ও সাইবেরিয়ার তুন্দ্রা অঞ্চল থেকে। অর্থাৎ উত্তর মেরু, ইউরোপ ও এশিয়ার কিছু এলাকা ও হিমালয় পর্বতমালার আশে পাশের এলাকা থেকেই পাখিগুলো দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে ভারত ও বাংলাদেশে আসে যেখানে তুলনামূলক কম ঠাণ্ডা পড়ে ও খাবার পাওয়া যায়।

আবার মার্চের শেষ দিকে যখন এ অঞ্চলে গরম পড়তে শুরু করে ও শীতপ্রধান এলাকায় বরফ গলা শুরু হয় তখন আবার দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে পাখিগুলো নিজ এলাকায় ফেরত চলে যায়।

তবে বিশেষজ্ঞদের মতে পাখি শুধু এ অঞ্চলেই আসে তা নয় বরং নানা পরিস্থিতিতে পাখি বিশ্বের নানা অঞ্চলে পরিভ্রমণ করে যা মূলত তাদের বেঁচে থাকার সংগ্রামেরই অংশ।

বাংলাদেশে ১৯৯৪ সালে অতিথি পাখি এসেছিল ৮ লাখের বেশি। ২০১৪ সালে এ সংখ্যা নেমে এসেছে দুই লাখের নিচে। অর্থাৎ গত ২০ বছরে প্রায় ছয় লাখ পাখি আসা কমে গেছে। তবে এখন এ সংখ্যা সাড়ে তিন লাখের মতো বলে বলছেন গবেষকরা।

( সংগৃহীত )