পোড়া লাশের কারসাজি

পোড়া লাশের কারসাজি রানা জামান

সাইদুল সাকিব তাকালো দেয়াল ঘড়ির দিকে। পাঁচটা বাজতে পাঁচ মিনিট বাকি। ঠিক পাঁচটায় উঠলো জিপে। আশুলিয়া ফ্যাক্টরিতে যেতে হবে। পাশের সিটে একটি পেপার কাটিং পড়ে থাকতে দেখে তুলে নিলো। পেপারটা আগামীকালের; তাতে লেখা-তাঁর স্ত্রী ও একমাত্র মেয়ে চারটার মধ্যে খুন হবে। আগামীকালের পত্রিকার কাটিং আজ তাঁর গাড়িতে কেনো, এই ভাবনা উবে গেলো স্ত্রী-কন্যার দুশ্চিন্তায়। দ্রুত ফোন করলেন স্ত্রী সিমিকে। কয়েকবার ফোন করেও সাড়া না পেয়ে স্টার্ট দিলো জিপ। ঢাকা শহরে ইচ্ছে করলেই কি দ্রুত গাড়ি চালানো যায়? কাওরান বাজার থেকে মিরপুরের রূপনগর আসতে লেগে গেলো দেড় ঘন্টা। দ্রুত হাতঘড়ি দেখলো সাইদুল সাকিব। সাড়ে ছ’টা! তার মানে আড়াই ঘন্টা পরে এসেছে! কী দেখবে সে এখন বাসায় গিয়ে? বাসার সামনে গাড়ি রেখে দ্রুত উঠে এলো তিন তলায়। উত্তেজনায় কলবেল টিপে ধরলো বেশ জোরেই। কিছু সময় অপেক্ষা করেও দরজা না খোলায় এবার পরপর কয়েকবার কলবেল টিপলো। দরজা খুললো না তবুও। অজানা আশঙ্কায় বুক কাঁপছে সাইদুল সাকিবের। আর কলবেল না টিপে ব্যাগ থেকে চাবি বের করে দরজা খোলে দ্রুত ভেতরে ঢুকতে গিয়ে হোচট খেয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে গেলো মেঝেতে। ব্যথা গায়ে না মেখে দ্রুত উঠে দাঁড়ালো। হাতের ব্যাগ কোথায় পড়েছে তা না দেখে ছুটলো শয্যাকক্ষের দিকে। শয্যাকক্ষে ঢুকে দৃশ্য দেখে বেড়ে গেলো শ্বাসকষ্ট। সাইদুল সাকিব হাপানির রোগী। শ্বাসটান শুরু হয়ে গেলে পকেট হাতড়ে  ইনহেলার না পেয়ে মনে পড়লো হাতের ব্যাগে আছে ওটা। শ্বাসকষ্ট চরমে উঠে যাওয়ায় জ্ঞান হারিয়ে পড়ে গেলো মেঝেতে।

রাতে জ্ঞান ফিরলো সাইদুল সাকিবের। আস্তে আস্তে সব কথা মনে পড়তে লাগলো। চিৎকার দিতে গিয়ে স্ত্রী সিমি ও মেয়ে নিম্মিকে সামনে দেখে ভূত দেখার মতো চমকে উঠলো। এরা জীবিত থাকলে বাসায় ও কাদের লাশ দেখলো?

বিছানায় উঠে বসে সিমিকে জিজ্ঞেস করলো সাইদুল সাকিব, তোমরা এখানে? তাহলে বাসায় আমি কাদের লাশ দেখলাম?

সিমি অবাক হয়ে বললো, কিসের লাশের কথা বলছো তুমি? আমরা মা মেয়ে বাইরে থেকে এসে দেখি তুমি সেন্সলেস হয়ে পড়ে আছো ফ্লোরে। ঘরে কোন লাশ দেখতে পাইনি তো!

মেয়ের দিকে তাকালে নিম্মিও বললো, বাসায় কোন লাশ ছিলো না ড্যাড।

সাইদুল সাকিব দ্রুত বিছানা থেকে নেমে ছুটতে থাকলো। পেছনের স্ত্রী ও কন্যার ডাক অগ্রাহ্য করে গাড়িতে উঠে দিলো ছেড়ে। সোজা চলে এলো ক্রিমিনাল ইন্ভস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট সংক্ষেপে সিআইডি অফিসে। ঘটনা শুনে সাথে সাথে সিআইডি’র একটি ক্ষুদে দল সাকিবের সাথে চলে এলো রূপনগরের বাসায়। বিছানা পরিপাটি দেখার পরও বাসার প্রতিটি কোণা তন্ন তন্ন খোঁজেও কিছু না পেয়ে পেপার কাটিং দেখতে চাইলো।

সাইদুল সাকিব দ্রুত নেমে গাড়ির কাছে এলো। দরজা খুলে দেখলো সিটের উপর কিছু নেই। তন্ন তন্ন করে গাড়ি খুঁজে পেপার কাটিং-এর ছিটে টুকরোও পাওয়া গেলো না।

সাব-ইন্সপেক্টর সঞ্জয় বিরক্ত হয়ে বললো, পুলিশের সাথে ঠাট্টা করেন! ভালো হয়ে গেছি বলে আমাদের সাথে যা খুশি তা করা ঠিক না। কথাটা মনে রাখবেন।

পরদিন সকালে দৈনিক পত্রিকার ভেতরে পেপার কাটিং পেলো একটা। তারিখ আগামীকালের এবং তাতে লেখা সকাল ন’টার মধ্যে ব্যবসায়িক অংশীদার সুপ্রিয়া খুন হবে।

সিমি ড্রয়িংরুমে এসে পেপার কাটিং সহ কাঁপা হাত দেখে জিজ্ঞেস করলো, তোমার হাত কাঁপছে কেনো সাকিব? কিসের পেপার কাটিং এটা?

সাইদুল সাকিব কিছু না বলে পেপার কাটিংটা সিমির দিকে বাড়িয়ে ধরলো। সিমি একবার চোখ বুলিয়েই বললো, যত্তসব ভুয়া! আগামীকালের পেপার আজকে পাবে কিভাবে? ওসব মাথায় না নিয়ে তুমি স্বাভাবিকভাবে অফিসে যাও।

কিন্তু সাইদুল সাকিব স্ত্রীর নিষেধ না মেনে ঝটপট কাপড় পাল্টে বেরিয়ে পড়লো গাড়ি নিয়ে। পকেট হাতড়ে বুঝতে পারলো তাড়াহুড়োয় মোবাইল ফোন রেখে এসেছে বাসায়। ফোনটা থাকলে সুপ্রিয়াকে সতর্ক করা যেতো। এখনো ন’টা বাজতে এক ঘন্টা বাকি। ধানমন্ডি পৌঁছা যাবে অনায়াসে। কিন্তু প্রত্যেক ট্রাফিক মোড়ে জ্যাম থাকায় ধানমন্ডির ঐ বাসায় পৌঁছলো সোয়া ন’টায়। ভেজানো দরজা খুলে গেলো মৃদু ধাক্কায়। ‘সুপ্রিয়া’ ডাকতে ডাকতে সাকিব শয্যাকক্ষে ঢুকে দেখতে পেলো মেঝেতে পড়ে আছে সুপ্রিয়ার লাশ। সাথে সাথে বাসায় ঢুকলো সিআইডি পুলিশ। সুপ্রিয়ার বুকে আমূল বিদ্ধ হয়ে আছে একটি ছোরা।

ভয় পেয়ে গেলো সাইদুল সাকিব। কাঁপা কণ্ঠে বললো, আজ সকালে এই পেপার কাটিং পেয়ে আমি এখানে এসেছি।

সাব-ইন্সপেক্টর সঞ্জয় বললো, আমার সাথে সিআইডি অফিসে চলুন। যা বলার সেখানেই বলবেন।

লাশ, কিছু আলামতসহ সাইদুল সাকিবকে সিআইডি কেন্দ্রীয় অফিসে নিয়ে এলো। সুপ্রিয়ার বুকে গেঁথে থাকা ছোরার হাতল পরীক্ষা করে সাইদুল সাকিবের হাতের ছাপ পেয়ে ওকে গ্রেফতার করলো সিআইডি পুলিশ।

সিআইডি’র সহকারী পুলিশ সুপার কবীর রূপম ভ্রু কুচকে ভাবছেন: পেপার কাটিং-এর সংবাদ সত্য হলে খুনটা আগামীকাল ন’টায় হবার কথা। একদিন আগে হলো কেনো? আর এই পেপার কাটিং কে দিচ্ছে সাইদুল সাকিবকে? ক্লু পাবার দুশ্চিন্তায় নিদ্রা হারাম কবীরের। রাত একটায় বিছানায় যাবার সময় ওর মোবাইল ফোনে একটি কল ফের নিদ্রাহীন করলো ওকে। দল নিয়ে বেরিয়ে পড়লো রাস্তায়। অপারেশন যাবার সময় পুলিশভ্যানের সাইরেন বাজানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে-এখন সাইরেন বাজায় শুধুমাত্র এম্বুলেন্স। এক ঘন্টায় পৌঁছে গেলো সাইদুল সাকিবের রাজেন্দ্রপুরের বাগানবাড়িতে। ঘরগুলোতে কিছুই পাওয়া গেলো না; তবে সামনের চত্বর খুড়ে পাওয়া গেলো আধাপোড়া দুটো লাশ। লাশের সাথে একটি ইনহেলার ও রক্তমাখা রড পেয়ে কবীর রূপম বক্র দৃষ্টিতে তাকালো এমনভাবে যেনো সাইদুল সাকিব পাশেই দাঁড়ানো। সকল নিয়ে ওরা চলে এলো সিআইডি’র কেন্দ্রীয় ল্যাবরেটরিতে।

ডাক্তার আসিফ কায়েস পিএইচডি কাজ পাগল মানুষ। নমুনা পেয়ে লেগে গেলো কাজে। আধাঘন্টা পর কবীর রূপমের দিকে তাকিয়ে বললো, তোমাকে হতাশ হতেই হচ্ছে বন্ধু এএসপি কবীর।

সহকারী পুলিশ সুপার কবীর রূপম রগচটা না হলেও বাড়তি কথা পছন্দ করে না। বললো, সরাসরি বলো দোস্ত। বেশ টেন্সে আছি।

লাশের সাথে সাইদুল সাকিবের ইনহেলার পাওয়া গেলেও রক্তমাখা রডে ওর হাতের ছাপ নেই!

কী বলছো তুমি ডক্টর?

তুমি ঠিকই শুনেছো কবীর।

আর ইনহেলার?

ইনহেলারে সাইদুল সাকিবের হাতের ছাপ আছে। তবে ইনহেলারটা খালি। আর রক্তমাখা রডে যে হাতের ছাপ আছে, তার সাথে আমাদের সংরক্ষণ করা কারো হাতের ছাপের সাথে ম্যাচ করে না।

অর্থাৎ নয়া ক্রিমিনাল। তুমি ঝটপট পোড়া লোক দুটোর চেহারা বানাও। আজই পেপারে দিতে হবে; ফেসবুক টুইটার ইউটিউবেও দিতে ভুলবে না সঞ্জয়।

ঐদিন রাত বারোটায় এক ব্যক্তি ফোন করে কবীরকে জানালো যে ইউটিউবে পোস্ট করা দুজনকে সে চেনে। ভোর ছটায় লোকটাকে সিআইডি অফিসে আসতে বললো কবীর রূপম। এবং ঘুমের ঔষধ খেয়ে তলিয়ে গেলো গভীর ঘুমে।

ভোর ছটায় সিআইডি অফিস জ্যান্ত। সঞ্জয় ফোনকরা লোকটাকে উপরে নিয়ে এলো। লোকটির নাম আব্দুস সাত্তার। আব্দুস সাত্তার বললো যে সাইদুল সাকিবের বাংলোর উল্টোদিকের মুদি দোকানটা ওর। পরশু ট্যাক্সি করে একজনের সাথে এই ছবির দু’জন বাংলোয় ঢুকেছিলো। তৃতীয় লোকটির চেহারা মনে নেই; তবে ট্যাক্সিচালকের চেহারা মনে আছে; কারণ ও টাকা ভাংগাতে ওর দোকানে এসেছিলো। ট্যাক্সিচালকের স্ক্যাচ বানিয়ে খুব সহজেই ওকে পেয়ে যায় সিআইডি। ট্যাক্সিচালকের বর্ণনা অনুযায়ী তৃতীয় লোকটির স্ক্যাচ বানিয়ে চমকে উঠে সবাই: লোকটি সাইদুল সাকিবের অফিসের এক দারোয়ান-নাম সোহেল আহমেদ। ছুটে যায় সিআইডি দল ওর খোঁজে। ওর বাসায় ওকে পাওয়া যায়, তবে মৃত অবস্থায়;অর্থাৎ ওকেও ছোরা মেরে খুন করা হয়েছে। এই ছোরাতে সাকিবের হাতের ছাপ পাওয়ায় চমকে উঠলো সিআইডি: সাইদুল সাকিব জেলে থাকা অবস্থায় মানুষ খুন করলো কিভাব? অর্থাৎ ঘাপলা!

মন্ত্রণাকক্ষে বসে গেলো সিআইডি’র উর্ধতন কর্মকর্তাগণ। চারটি লাশ এবং খুনি হিসেবে ইঙ্গিত করা হচ্ছে সাইদুল সাকিবের দিকে। ফাঁকগুলো কী? নম্বর এক: যে লাশ দুটো সাকিবের বাংলোয় পাওয়া গেলো, সেই দুই ব্যক্তির সাথে সাইদুল সাকিব উপস্থিত ছিলো না; নম্বর দুই: রক্তমাখা রডে সাকিবের হাতের ছাপ নেই; নম্বর তিন: খালি ইনহেলার রাখা; নম্বর চার: সাইদুল সাকিব জেলে থাকাবস্থায় তৃতীয় ব্যক্তিকে খুন করে সাকিবের হাতের ছাপ থাকা ছুরি রাখা। মানে ষড়যন্ত্র করে সাইদুল সাকিবকে খুনি হিসেবে ফাঁসানোর প্রচেষ্টা চলছে। ষড়যন্ত্র নম্বর এক: গত পরশু সাইদুল সাকিবের বাসায় বেডরুমে দুটো লাশ রেখে সরিয়ে ফেলা; ষড়যন্ত্র নম্বর দুই: একদিন আগের পেপার কাটিং-এ খুনের আভাস দিয়ে সাইদুল সাকিবকে অকুস্থলে উপস্থিত করিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করা; ষড়যন্ত্র নম্বর তিন: সাইদুল সাকিবের বাংলোয় দুটো পোড়া লাশ পুতে রাখা; ষড়যন্ত্র নম্বর চার: সুপ্রিয়া, তৃতীয় লাশের বুকে সাইদুলের হাতের ছাপমাখা ছোরা রাখা ও দুই পোড়া লাশের সাথে ইনহেলার রাখা।

সহকারী পুলিশ সুপার কবীর রাপম সহকর্মীদের দিকে তাকিয়ে বললো, তাহলে একবাক্যে আমরা সিদ্ধান্তে আসতে পারি যে সাইদুল সাকিব কোন খুনের সাথে জড়িত না।

সাব-ইন্সপেক্টর সঞ্জয় রায় বললো, তাহলে সাইদুল সাকিবকে ছেড়ে দিতে পারি আমরা স্যার!

কবীর রূপম বললো, ওকে খুনি সাজানোর ষড়যন্ত্র চলছে। যদি ষড়যন্ত্রকারীরা বুঝতে পারে যে ওকে খুনি সাজানোর ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হচ্ছে; তাহলে ওরা ওকেই খুন করে ফেলতে পারে। তাই ষড়যন্ত্রকারীদের পাকরাও করার আগ পর্যন্ত ও হাজতেই থাকুক। আর ওর স্ত্রী সিমিকে নজরে রাখো।

ডক্টর আসিফ কায়েস বললো, কারণ?

প্রথম দিন সাইদুল সাকিব তার বেডরুমে ঠিকই দুটো লাশ দেখেছিলো। কিন্তু পরে আর পাওয়া যানি।

পরদিন সঞ্জয় রায়ের ফোন পেয়ে কবীর রূপম দল নিয়ে চলে এলো গুলশানের হোটেল এরোমায়। পরিচয় দিয়ে রুম নম্বর নিয়ে সরাসরি চলে এলো ৫২২ নম্বর কক্ষের সামনে। দরজা খোলার পর ভেতরে সিমি ও চতুর্থ এক পুরুষকে দেখে সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার কবীর রূপম দুই ভ্রু উপরে তুলে কিছু জানতে চাইলো।

সিমি প্রথম প্রশ্ন করলো, আপনারা এখানে কেনো? এভাবে কারো প্রাইভেসি নষ্ট করতে পারেন না আপনারা!

সহকারী পুলিশ সুপার কবীর রূপম বললো, আমরা পারি। তাছাড়া আপনি কার সাথ প্রাইভেসি মেনটেন করতে হোটেলে এসেছেন? উনি কে হন আপনার? আপনার স্বামী তো জেলে যাকে আপনারা খুনের দায়ে ফাঁসাতে চাচ্ছেন।

খুনের দায়ে ফাঁসাতে চাচ্ছি মানে? সাইদুল খুন করে নি? আপনারাই বলেছেন সুপ্রিয়া ও সোহেলের খুন করার অস্ত্র ছোরা দুটোয় সাইদুলের হাতের ছাপ পাওয়া গেছে?

আমরা দুই-এ দুই-এ চার মিলিয়ে ফেলেছি।

মানে?

সাইদুল সাকিবের বাংলোয় যে দুটো লাশ পাওয়া গিয়েছে তার মধ্যে মহিলাটির স্বামী এই ভদ্রলোক যার সাথে আপনি এই হোটেলে অভিসার করছেন মিজ সিমি!

কী বলছেন আবোল তাবোল! আর অন্য লাশটা?

অন্য লাশটা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বেওয়ারিশ লাশ কিনে এনেছেন। দারোয়ান সোহেল আহমেদকে বেয়াদপির সাজা দেয়ায় তাকে সাইদুলের বিরুদ্ধে কাজে লাগিয়ে তাকেও আপনারা খুন করেছেন।

লোকটি এবার বললো, এগুলো আপনাদের কপোল কল্পিত কাহিনী। প্রমাণ করতে পারবেন না!

প্রমাণ আমাদের হাতে আছে। শুধু ব্যাকগ্রাউন্ডটা জানতে চাই কেনো আপনারা সাইদুলকে খুনি বানাতে চাচ্ছেন। সাইদুলের সাথে সংসার জীবনে আপনার একটা বারো বছরের মেয়ে আছে মিজ সিমি। মেয়েটার বিষয়ে কিছুই ভাবলেন না আপনি?

মেয়েটার বাবা সাইদুল সাকিব না, এই রব্বানী আলম ওর বাবা।

চমকে উঠে কবীর রূপম বললো, কী বলছেন আপনি?

রব্বানী আলম বললো, কলেজ লাইফ থেকে আমাদের প্রেম যা শারীরিক সম্পর্ক পর্যন্ত গড়িয়েছিলো। একসময় অসাবধানতায় ও কনসিভ করে ফেললে আমি বিয়ের প্রস্তাব পাঠাই। কিন্তু আমি বেকার থাকায় ওর বাবা আমার সাথে বিয়ে না দিয়ে ব্যবসায়ী সাইদুল সাকিবের সাথে তড়িগড়ি করে বিয়ে দিয়ে দেয়। মনের দুঃখে আমি কোটিপতি বাবার বোবা মেয়েকে বিয়ে করে আমেরিকা চলে যাই….।

রানা জামান
রানা জামান