বিখ্যাতদের রসিকতা রক্তবীজ ডেস্ক

সৃষ্টিশীল মানুষমাত্রই রসিক মানুষ! জীবনের সাধারণ ও বিরক্তিকর ঘটনাগুলোকে হাস্যরসে পরিপূর্ণ করে তোলার ক্ষমতা তাঁদের থাকে। বিখ্যাত লেখকদের জীবনেও আছে এমন কিছু হাসির ঘটনা । চলুন, জেনে আসি-

 

কঠিন পিঠা

এক মহিলা কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্য কিছু পিঠা বানিয়ে নিয়ে  যান। কেমন লাগল পিঠা জানতে চাইলে কবিগুরু উত্তর দেন-

‘লৌহ কঠিন, প্রস্তর  কঠিন, আর কঠিন ইষ্টক,

তাহার অধিক কঠিন কন্যা তোমার হাতের পিষ্টক!’

 

আপদ-বিপদ

ইংরেজ শাসনামলের প্রথম বাঙালি ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন বঙ্কিমচন্দ্র চট্রোপাধ্যায়। ম্যাজিস্ট্রেট হতে গিয়ে আর সবার মতো তাকেও ইন্টারভিউর মুখোমুখি হতে হয়েছিল। স্বভাবতই পরীক্ষক ছিলেন একজন ইংরেজ। ইংরেজ মহাশয় ইন্টারভিউর এক পর্যায়ে বঙ্কিমচন্দ্রকে প্রশ্ন করলেন,

– হোয়াট ইজ দ্য ডিফারেন্স বিটুইন আফদ (আপদ) অ্যান্ড বিফদ (বিপদ)?

বঙ্কিমচন্দ্র উত্তর দিলেন,

– ধরুন, আমি নৌকায় চড়ে নদী পার হচ্ছি এমন সময় প্রচণ্ড ঝড় উঠল, এটা হচ্ছে বিপদ। আর এই যে আমি একজন বাঙালি হয়েও ইংরেজের কাছে বাংলার পরীক্ষা দিচ্ছি এটা হচ্ছে আপদ।

দে

এলাকার অন্যতম ধনী দেব নারায়ন দে’র বাড়িতে একটা বড়সড় অনুষ্ঠানের আয়োজন চলছিল। লেখা হচ্ছিল দেনাপাওনা ও খরচাপাতির ফর্দ। সেখানে উপস্থিত ছিলেন রসিক লেখক প্যারীচাঁদ মিত্র। খরচের ফর্দ দেখে প্যারীচাঁদ মিত্র বললেন-,

– একি! মিষ্টান্নের জন্য এতো কম টাকা? ব্রাম্মণকেও তো তেমন দেয়া হচ্ছে না। এসব খরচ কিছু বাড়িয়ে দিন।

দেবনারায়ন বললেন,

– প্যারীচাঁদ বাবু, আপনি শুধু খরচ বাড়াতে বলছেন। টাকাটা কে দেবে শুনি?

– কেন? আপনি দেবেন। আপনার নামের আগে দে, নামের পরেও দে। দিতে আপনাকে হবেই।

চোরের উপর বাটপাড়ি

লেখক প্রেমেন্দ্র মিত্র তখন নামকরা চিত্রপরিচালক। তার নতুন একটা ছবি মুক্তি পেয়েছে। কিন্তু ঐ ছবির কাহিনি নিয়ে কথা উঠেছে! বুদ্ধদেব গুহ পত্রিকায় বিবৃতি দিয়েছেন যে. কাহিনিটি তার, প্রেমেন্দ্র মিত্র যা নিজের নামে চালিয়ে দিয়েছেন। সবাই উদগ্রীব, প্রেমেন্দ্র মিত্র কী বলেন? ক’দিন পর প্রেমেন্দ্র মিত্র বিবৃতি দিলেন। তিনি বললেন,

– চলচ্চিত্রের কাহিনিটি আমার না সেটা সত্যি, তবে বুদ্ধদেব গুহ যেখান থেকে গল্পটি নিয়েছেন- আমিও ঐ একই জায়গা থেকে নিয়েছি।

মানুষের উপকার

একবার এক ছাত্র মার্ক টোয়েনের কাছে এসে বলল,

– আমি ডাক্তারি পড়া ছেড়ে দিয়েছি। এখন সাহিত্যচর্চার মধ্য দিয়ে মানুষের উপকার করতে চাই।

মার্ক টোয়েন উত্তর দিলেন,

– তুমি ডাক্তারী পড়া ছেড়ে দিয়ে এমনিতেই মানবজাতির অনেক উপকার করেছ। আর উপকার না করলেও চলবে।

(সংগৃহীত)