ভূতুড়ে হোটেল / রক্তবীজ ডেস্ক

ভূতুড়ে হোটেল/ রক্তবীজ ডেস্ক

মজার ব্যাপার হচ্ছে , ভূতকে ভয়  পেলেও অধিকাংশ মানুষ মনে মনে ভূত দেখতে চায়। ভৌতিক ব্যাপারে কম- বেশি সবারই আগ্রহ আছে।  শোনা যায় পৃথিবীতে নাকি বেশ  কয়েকটি ভৌতিক হোটেল আছে। সেখানে  ভূতের আনাগোনা আছে। তেমন কয়েকটি হোটেল  নিয়ে আজকের এই আলাপ।

আমেরিকার সবচেয়ে নামকরা হোটলগুলো ঘিরে রয়েছে কিছু ভূতুড়ে ঘটনার আলোচনা। হলিউডের রুজভেল্ট হোটেলে বিখ্যাত অভিনেত্রী ম্যারিলিন মনরোর প্রেতাত্মা আছে বলে শোনা যায়।   আমেরিকার গৃহযুদ্ধে নিহত সেনাদের প্রেতাত্মার উপস্থিতির কথা শোনা যায় জর্য়ার সাভানার মার্াল হাউসে।

ভূতুড়ে ব্যাপার স্যাপারে যাদের আগ্রহ আছে তারা জেনে নিন এই হোটেলগুলোর কথা।  যদি আপনার ভাগ্যে এই শহরগুলোর কোনটিতে যাবার সুযোগ ঘটে তবে একবার একটি রাত কাটিয়ে  ভূতের অভিজ্ঞতা নিয়ে আসতে পারেন। আর যারা ভূতের থেকে দশ হাত দূরে থাকেন তারাও জেনে নিতে পারেন যাতে  এড়িয়ে চলতে পারেন ভূতকে।

ওমনি পার্কার হাউজ, ম্যাসাচুসেটস

যুক্তরাষ্ট্রের এই হোটেলটিতে  দু চারটি ভূতের আনাগোনা আছে বলে শোনা যায়। বোস্টনের অভিজাত  এ হোটেলের  প্রতিষ্ঠাতা হার্ভি পার্কারের প্রেতাত্মা নাকি হোটেলে অতিথিদের সেবা ঠিকমতো হচ্ছে কিনা তা নিজে যাচাই করার জন্য রুমে রুমে ঘোরাফিরা করেন। লেখক চার্লস ডিকেন্স  হোটেলটির তৃতীয় তলার একটি রুমে কিছুদিন অবস্থান করেছিলেন। জনশ্রুতি ডিকেন্সের প্রেতাত্মাও নাকি হোটেলের লবি ও বিভিন্ন কক্ষে যাতায়াত করেন।

হোটেল চেলসি, নিউ ইয়র্ক

হলিউডের নামি দামি তারকারা এই  হোটেলের প্রশংসা করেছেন। তবে প্রশংসা করলেও  কেউ কেউ এই হোটেলে ভূত আছে বলে জানিয়েছেন। ২০১১ সাল থেকে  অনেকদিন  সংস্কারের জন্য হোটেলটি  বন্ধ ছিল।  নতুন করে চালু হবার পর হোটেলের  অনেক কর্মী ও অতিথি দাবি করেছেন , তারা  নানান সময় হেটেলটিতে সিড ভিশাস নামের একজন খুনির প্রেতাত্মা দেখেছেন। সিড বান্ধবীসহ এই হোটেলে অবস্থান করেছিলেন। তখন তাকে খুনের দায়ে অভিযুক্ত করা হয়।  এছাড়া অনেকে নাকি বিখ্যাত কবি ডিলান থমাসকেও দেখেছেন। হোটেলটির বাইরে একটি ফলকে ডিলান থমাসের একটি উদ্বৃতি আছে, যাতে লেখা আছে, ‘ডিলান থমাস হোটেল চেলসিতে থেকেছেন ও লিখেছেন এবং এখান থেকেই তিনি মৃত্যু উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছেন।’

দ্য রেড লায়ন ইন, ম্যাসাচুসেটস

এই হোটেলের বিভিন্ন স্থানে ভৌতিক কর্মকাণ্ডের দেখা মেলে। তবে  সবচেয়ে বেশি দেখা মেলে  চতুর্থ তলায়। হোটেলের অতিথি এবং পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের দাবি,  তারা ফুল হাতে একটি ভৌতিক একটি মেয়েকে’ দেখেছে। এছাড়াও  ‘ উঁচু হ্যাট মাথায় একজন লোককে’ দেখেছেন। অতিথিরা অনেক বলেছেন- কেউ কেউ ভয়ে বিছানা  ছেড়ে  দৌড়ে পালাচ্ছে  এমন দৃশ্যও তারা দেখেছেন।

 

দ্য ড্রিস্কিল, টেক্সাস

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের অস্টিন শহরে অনেক ভূতুড়ে জায়গা আছে। তারমধ্যে  দ্য ড্রিস্কিল হোটেলটি  রয়েছে  তালিকার শীর্ষে । এই হোটেলে অনেক রকম  ভুত বসবাস করে। তবে সবচেয়ে বেশি  ঘোরাঘুরি করে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট লিন্ডন বি জনসনের প্রেতাত্মা। ১৯৩৪ সালে এই হোটেলেই প্রেসিডেন্ট জনসন ও তার স্ত্রী প্রথম ডেট করেছিলেন। ১৯৬৪ সালের প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার সময়ও তিনি এই হোটেলেই অবস্থান করছিলেন। ওই নির্বাচনে  বিজয়ী হয়ে এই  হোটেলের বলরুমে  বিজয় উদযাপন করেছিলেন। কাজেই এই হোটেল সাবেক প্রেসিডেন্টের অনেক স্মৃতি। সেই স্মৃতির মায়ায় তিনি জাযগাটিকে ছাড়তে পারেননি বলে অনেকে বলেন।  এছাড়াও সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়ে চার বছরের একটি শিশু মৃত্যুবরণ করেছিলেন। তার প্রেতাত্মাকেও হোটেলে বিভিন্ন সময় দেখা গেছে বলে শোনা যায়। হোটেলটিতে  দূর থেকে আসা বলের পিং-পং শব্দ পাওয়া যায় , অথচ এই শব্দের উৎস খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে সব ভূতকে ছাপিয়ে  এই হোটেলের সবচেয়ে  পরিচিত হচ্ছে দুই দম্পতির ভূত, যারা কয়েক দশকের ব্যবধানে এই হোটেলে থাকার সময় আত্নহত্যা করেছিলেন।

এমিলি মরগ্যান হোটেল, সান অ্যান্টোনিও

হোটেলটি ১৯২৪ সালে  তৈরি করা হয়। প্রথমাবস্থায় এটি ছিল একটি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র। এর ১২ ও ১৪ তলায় ছিল হাসপাতাল ও সার্জারি বিভাগ। এই  দুই তলায় অবস্থানরত অতিথিরা বলেছেন, তারা সাদা পোশাকের নারীদের  প্রত্যক্ষ করেছেন, মাঝরাতে হঠাৎ করে ফোন পেয়েছেন  অথচ অন্যপাশ থেকে কেউ কোনো কথা বলেনি। এই হোটেলটি নিহত সেনাদের কবরস্থান দ্য অ্যালামোর ঠিক বিপরীত দিকে অবস্থিত। দ্য অ্যালামোও ভৌতিক নিদর্শনের জন্য পরিচিত।