যা চেয়েছি কেন তা পাই না! –  ফিরোজ শ্রাবন।

ফিরোজ শ্রাবন

বড় সাধ জাগে একবার তোমায় দেখি, কতদিন দেখিনি তোমায় একবার তোমায় দেখি। গানটা যতবার শুনি ততবারই মনে হয় কাকে যেন আমার খুব দেখতে ইচ্ছে করছে।  কাকে যেন বার বার মিস করে যাচ্ছি। আসলে আমরা ব্যক্তিজীবনে পাওয়ার তালিকা না দেখে কি পাই নাই তাই নিয়েই বেশি হাহুতাশ করি । আর সেই কি পাই নাই সেই চিন্তায় কি পেয়েছি তাও কিন্তুু মিস করে যাই । তার মানে আমার জীবনে আমি যা পেলাম তা চোখ মেলে দেখলাম না, আর আর যা পেলাম না তা পাওয়ার আশায় আমার বিনিদ্র রাত কাটে। ফলাফল কিন্তুু খুবই ভয়াবহ । বর্তমান সময়ে আমরা পেঁয়াজ সংকটে দিন কাটাচ্ছি। যেন পেঁয়াজ আমাদের সব সুখ কেড়ে নিয়েছে। একটা গল্প মনে পড়ে গেল। এক শিক্ষক ছাত্রকে বললেন, চোখ বন্ধ করে বলত আজকে কি বার? (মানে কোন দিন)। ছাত্র উত্তরে বলল, স্যার চোখ বন্ধ করে কিভাবে বলি, আমি পারবো না। এ যেন পেঁয়াজ ছাড়া পৃথিবী অচল এর মত। মনে পড়ে ২০০২ সালের কথা। তখন মানুষ ইলেকট্রিসিটির অভাবে ঘুমাতে পারতো না। আমার মনে পড়ে রাত ২/৩ টা পর্যন্ত বাড়ির ছাদে ঘুরতাম আর ইলেকট্রিসিটি আসলেই ঘুমাতে যেতাম । আর ২০১৯- এ এসে এখন মনে হয় কি লাভ এ জীবন রেখে বাসায় যদি পেয়াজই না থাকে । আসলেই কি পেঁয়াজ নিয়ে সবাই চিন্তিত নাকি যখন যে ইস্যু পায় মানুষ তাই নিয়ে হাপিত্যেস করে! এবার আমার কথা বলি। আমি সাধারণত কোন দুরপাল্রার বাসে চড়লে ঘুমাই না। আমি চিন্তিত থাকি ড্রাইভার ঠিকমত গাড়ি চালাচ্ছে কি না। আসলে আমি চিন্তা করি বা না করি গাড়ি তার নিজস্ব গতিতেই চলবে। মাঝে খামোখা আমার ঘুম নষ্ট করে কোন লাভ আদৌ হয় কি না জানি না। একটা পুরানো জোকস বলি, এক লোক লঞ্চে চড়ে পায়চারি করছে তো এক যাত্রি তাকে প্রশ্ন করলো ভাই আপনি লঞ্চ চড়ে হাটাহাটি করছেন কেন? উত্তরে লোকটা বলল, ভাই আমার সময় কম ,তাড়াতাড়ি বাড়ি যেতে হবে। আসলে আমি বা আমরা  চিন্তা করি বা না করি লঞ্চ তার নিজস্ব গতিতে চলবে এটাই স্বাভাবিক। আমরা আসলে নিজের নাক কেটে অন্যের যাত্রা ভঙ্গ করি। তবে এটাও খুবই দুঃখজনক যদি এমন হয় যে, পেঁয়াজ তুমি তুমি সময় মত আইলা না। এই দুঃসময়ে যারা শুভ বিবাহ করছেন তারা নিশ্চয়ই পেঁয়াজের কথা ভুলে যাবে না । হয়ত বাসরঘরে এমনও আলোচনা হতে পারে, শোনো পেঁয়াজ তোমাকে আমার কাছ থেকে কেড়ে নিতে পারবে না, সে যতই দামি হোক । যেমন স্বর্ণের কারণে অনেকে বিয়ে করতে দেরি করে। তারা কিন্তুু স্বর্ণের কাছে অসহায়। মেয়েরা মনে করে যে ছেলে ৫ ভরি স্বর্ণ দিতে পারবে না তাকে নিয়ে কিভাবে সংসার করবো। বিয়ের পরে সেই স্বণৃ আলমিরাতেই পড়ে থাকে । আবার কখনও মেয়েরা বাপের বাড়ি গেলে স্বণৃ সাথে করে নিয়ে যায়। আর স্বামীকে রেখে যায় তালা না মেরে। আমি কি বলি স্বণৃ যদি হারিয়ে যায় তাতে মনে হয় সামান্যই ক্ষতি। কিন্তুু স্বামী যদি হারিয়ে যায় তাতে মনে হয় একটু বেশিই ক্ষতি। যাই হোক একথা মনে হয় সবার বেলায় প্রযোজ্য নয়। আগে ভাল মন্দ বিচার করে বিয়ে করলেও লাভ নেই করলেও ক্ষতি নেই । বিয়ে করতেই হবে। তাই বলি কি পেঁয়াজ জীবনের সব কিছু না ভেবে আসুন কাচাঁমরিচ আদা রসুন সবাইকে নিয়ে আনন্দে দিন কাটাই তা না হলে আঁদা, রসুনও কিন্তুু আমাদের কাঁদাবে।