সংসারে মানব-স্বাস্থ্য // আফরোজা অদিতি

 

স্বাস্থ্য বলতে কী বুঝায়? বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুযায়ী স্বাস্থ্যের সংজ্ঞা হলো ‘পূর্ণ শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক সুস্থ্যতা , কেবলমাত্র ব্যাধি বা বৈকল্যের অনুপস্থিতি নয়’।  বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সংজ্ঞা অনুযায়ী স্বাস্থ্য বলতে শুধু রোগমুক্ত জীবনই বুঝায় না, মানুষের শারীরিক, মানসিক সুস্থতার সঙ্গে সামাজিক সুস্থতাও

  বুঝায়। সামাজিক পরিবেশ যদি সুস্থ্য বা বাসযোগ্য না হয় তাহলে মানুষকে নিরোগ পাওয়া যাবে না। মানসিক অসুস্থতা কিংবা মানব-শরীরে একটা একটা অস্বস্তি বা অসুস্থতা দেখা যাবে। সুস্থ সামাজিক-পরিবেশ স্বাস্থ্য রক্ষার বড় হাতিয়ার। অস্থির সমাজ অর্থাৎ হত্যা, খুন-জখম, ধর্ষণ, উচ্ছেদ, গুম, রাজনৈতিক অস্থিরতা মানুষকে ভালো থাকতে দেয় না তেমনি পরিবেশ ভালো না হলে মানবকুলও সুস্থ্য থাকতে পারে না। যেমন ইঁটের ভাটার ধুঁয়া, নদীর জলের দুর্গন্ধ, যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ফেলা, রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির ধুলা আচ্ছন্ন পরিবেশ মানুষের অসুস্থতা আনয়ন করে। বিষণ্নতাও মানুষের রোগ ডেকে আনে, কর্মক্ষমতা কমিয়ে দেয়।  

 

ভালো স্বাস্থ্য চেনা বা জানার কয়েকটি উপায় আছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিরিখে ভালো স্বাস্থ্যের মানদণ্ড হলো : 

 

১. কর্মশক্তি সম্পন্ন, স্বাভাবিকভাবে জীবনের বিভিন্ন কাজ মোকাবেলা ও সম্পন্ন করতে পারা। 

২. আশাবাদী, সক্রিয় দৃষ্টিভঙ্গিতে কাজ করতে সক্ষম হওয়া।

৩. নিয়মিত বিশ্রাম ও ভালো ঘুম হওয়া।

৪. পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে বিভিন্ন অবস্থার মোকাবেলা করতে পারা।

৫. সাধারণ সর্দি ও সংক্রামক রোগ প্রতিরোধের শক্তি থাকা।

৬. সঠিক ওজন ও সঠিক শারীরিক কাঠামো।

৭. উজ্জ্বল চোখ, কোন প্রদাহ রোগ না থাকা।

৮. দাঁত পরিষ্কার ব্যথাহীন ও সুন্দর মাড়ি থাকা।

৯. উজ্জ্বল খুশকিহীন চুল।

১০.শক্ত হাড়, ত্বক ও পেশি নমনীয়।

 

বাংলাদেশের অধিকাংশ কিশোরী  দৈনিক চাহিদা থেকে কম পরিমাণে আমিষ, লোহা ও ক্যালসিয়াম গ্রহণ করে শিশুকাল থেকেই। তাদের শরীরে অভাব থাকে আয়োডিন ও ভিটামিনের। পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের বিশ্লেষণের তথ্য অনুযায়ী এ দেশের ৪৩% কিশোরী রক্তস্বল্পতায় ভুগছে। আর বাংলাদেশে ৬৬% মেয়ের বিয়ে হয় কিশোর বয়সে অর্থাৎ ১৮ বছরের নিচে। এই বাল্যবিবাহের কারণে সন্তান ধারণের জন্য একজন নারী শরীর প্রস্তুত হওয়ার আগেই তাকে সন্তান ধারণ করতে হয়। নিজের অপুষ্টিজনিত শরীরে অন্য একটি শরীর ধারণ ও বহন করায় গর্ভের সন্তানকেও অপুষ্টির শিকার হতে হয়। এতে কী প্রমাণিত হয় না যে বাংলাদেশের মানুষ জন্মগতভাবেই অপুষ্টির শিকার ? অপুষ্টির কারণে বাংলাদেশের শিশুদের এক তৃতীয়াংশ খর্বাকৃতি অর্থাৎ তাদের বৃদ্ধি রহিত হয়, অর্ধেক শিশু বয়সের থেকে কম ওজনে এবং শিশু বয়স থেকেই অপুষ্টিতে বেড়ে ওঠে। কিন্তু মানুষ সব সময় শিশু থাকে না। তার বয়স বাড়ে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে কাজ, কাজের পরিধি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে টেনশন। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ে রোগ, স্বাস্থ্যহীনতা। কারণ বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শিশুকালের পুষ্টির ঘাটতি আরও বাড়তে থাকে। তাইতো হেলদি-লাইফ রাখতে হলে শিশু বয়স থেকেই তাদের যত্ন নিতে হবে এবং তরুণ বয়স থেকেই নিজেদেরই স্বাস্থ্য সচেতন হতে হবে। 

 

একজন মানুষ যদি প্রবীণ বয়সেও ভালো থাকতে চায় তাহলে তাকে অবশ্যই স্বাস্থ্য সচেতন হতে হবে। প্রবীণ বয়সের রোগ-বালাই দূর করতে  কিংবা রহিত করতে হয় তাহলে শিশুবয়স থেকেই তা শুরু করতে হবে। একজন শিশুই দেশের ভবিষ্যত নাগরিক। তার শারীরিক যত্ন মায়ের পেটে থাকতেই করা প্রয়োজন। শিশু গর্ভে থাকাকালীন অবস্থাতে মায়ের হাইপারটেনশন, ডায়াবেটিস, ঝগড়াঝাটি, পারিপার্শ্বিক অবস্থা গর্ভাবস্থাতেই শিশুর ওপর প্রভাব ফেলে এবং স্বাস্থ্যগত সমস্যা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। আর যে শিশু স্বাস্থ্যগত সমস্যা নিয়েই জন্ম নেয় সে যতো বড় হবে তার স্বাস্থ্যগত সমস্যা ততো বাড়বে। এই জন্য শিশুকাল থেকেই শরীরের যত্ন নিতে হবে। এখন কথা হচ্ছে, শিশু তো নিজের যত্ন নিজে নিতে পারে না। তা’হলে কে যত্ন  নেবে? শিশুর যত্ন নিতে হবে শিশুর বাবা, মা পরিবারের সদস্যদের। আর এই শিশু বড় হয়ে যত্ন নেবে নিজের, সেই সঙ্গে তার বাবা, মা, এবং পরিবারের অন্যান্য বয়স্ক  সদস্যদের। কিন্তু  শিশু যদি রোগাক্রান্ত থাকে তাহলে সে না পারবে নিজের যত্ন নিতে না পারবে বয়স্ক  বাবা-মায়ের যত্ন নিতে । সে হবে অন্যের ওপরে বোঝা ! এজন্য শিশুর জন্মের আগে থেকেই যত্ন নিতে হবে মায়ের, যাতে জন্ম  হয় একজন সুস্থ স্বাভাবিক শিশু।  

 

বাংলাদেশের নারী সামাজিক অসংগতির কারণে অপুষ্টির শিকার। পরিবারের মধ্যেই শিশুবয়স থেকে একজন নারী স্বাস্থ্যসহ সকল ক্ষেত্রেই বৈষম্যের শিকার হয়। তারপর কিশোর বয়সের প্রকৃতিগত কারণ (মাসিক) এবং বিয়ের পর সন্তান ধারণে, নারী-শরীরে অপুষ্টি বাড়তে থাকে। শরীরের এই অপুষ্টি তার নিজের সংসার হলেও পুরণ হয় না। কারণ অনেক সংস্কারে আমাদের দেশের নারীরা আবদ্ধ। এই সংস্কার এবং স্বামী সন্তান ও পরিবারের প্রতি ভালোবাসার ফলে কোন ভালো খাবার সে খায় না বা খেতে পারে না। তাছাড়া স্বাস্থ্য সম্পর্কে নারী অসচেতন। একজন মানুষ সুস্থ স্বাস্থ্য নিয়ে বেঁচে থাকতে চায় তাহলে নিজের পাশাপাশি তার পরিবারের  নারীকে সচেতন করে তুলতে হবে। নারীকে সচেতন করার দায়িত্ব পুরুষের, কারণ যুগ যুগ ধরে যে সংস্কার এ সমাজ নারীর মনে গেঁথে দিয়েছে তা দূর করা শুধু নারীর একার পক্ষে সম্ভব নয়, এর জন্য সহায়তা প্রয়োজন পুরুষের। শুধু নারী একা যদি এ সংস্কার কাটিয়ে উঠতে চায় তাহ’লে এই প্রতিবন্ধী সমাজের গায়ে আঁচড় লাগবে। জ্বলে উঠবে এ সমাজ আর সেই আগুনে নারী শুধুই পুড়বে না, পুড়বে সংসার পুড়বে দেশের নাগরিকের ভবিষ্যৎ। আর্থ-সামাজিকভাবে নিরাপত্তাহীন নারী তার সন্তানের কথা ভেবে এই সংস্কার ভাঙতে চায় না।    

 

আমাদের উন্নয়নশীল দেশ। এ দেশে পুষ্টিকর খাদ্য পাওয়া তো দুষ্কর, এরপরেও আছে খাবারে ভেজাল ; তবুও সচেষ্ট থাকতে হবে। নিজের এবং নিজের পরিবারের পুষ্টি চাহিদা নিজেরাই যাতে মিটিয়ে ফেলা যায় তার জন্য সচেষ্ট হতে হবে সকলকেই। সবাই যদি স্ব স্ব ক্ষেত্রে খাদ্যগুণ সমৃদ্ধ সব্জি, ফলের গাছ লাগায় তবে টাটকা সব্জি ও ফল-ফলাদি তো পাবেই, তার পাশাপাশি কমবে পরিবেশ দূষণ, কমবে খরচ। ক্যালোরি সমৃদ্ধ খাবার যে শুধু দামি খাবারেই পাওয়া যায় তা নয়, কোন খাবারে কতো ক্যালোরি আছে তা জানতে পারলে খুব কম খরচে প্রয়োজনীয় ক্যালোরি সংগ্রহ করা সম্ভব। এ জন্য প্রয়োজন কোন খাদ্যে কী পরিমান পুষ্টি এবং ক্যালোরি আছে তা জানা। মেয়েশিশুকে তার চাহিদামাফিক ক্যালোরি সমৃদ্ধ খাবার দিতে হবে। বাল্য বিবাহ বন্ধ করতে হবে। নারী দুর্বল বলে শারীরিক মানসিক অত্যাচার থেকে বিরত থাকতে হবে। নারীর ওপর অত্যাচার প্রসঙ্গে সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) তার ‘ভায়োলেন্স অ্যাগেইন্সট উইমেন সার্ভে ২০১১’ নামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এই প্রতিবেদনে দেখা যায় যে বিবাহিত নারীদের ৮৭%  স্বামীর দ্বারা কোন না কোন ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে ৬৫% শারীরিক নির্যাতন,৩৬% যৌন নির্যাতন, ৮২% মানসিক এবং ৫৩% অর্থনৈতিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এখানে উল্লেখ্য যে একজন নারী গৃহস্থালী ও সেবামূলক কাজে পুরুষের থেকে বেশি শ্রম দেয়; এই শ্রম ভাগাভাগি করে নিতে হবে। কারণ সংসার উভয়ের এবং কাজ শুধু নারীর নয়, নারী পুরুষ উভয়ের।     

 

মানুষ জীবনের গতি যদি সময়ের আগে থেমে না যায় তাহলে তাকে প্রবীণ হতেই হবে; অন্যের ওপরে বোঝা হতে না চাইলে তার স্বাস্থ্য ভালো রাখতে হবে। আর প্রবীণ বয়সে স্বাস্থ্য ভালো রাখতে হলে মানুষের প্রয়োজন পানি, আমিষ, শর্করা, চর্বি, আয়রন, ভিটামিন-১২, ক্যালসিয়াম ও জিংক। এবং দৈনিক ৪০মিনিট হাঁটা। কিছু অসুখ এবং সমস্যা আছে যা শুধু প্রবীণ বয়সেই হয়ে থাকে। এই বয়সকালীন সমস্যা যাতে ত্বরান্বিত না হয় সেজন্য যে বয়স থেকে মানুষ নিজের শরীরের যত্ন নিজে নিতে পারে সে বয়স থেকেই নিজের শরীরের যত্ন নিজেকেই নিতে হবে। প্রত্যেক মানুষেরই চিন্তা হওয়া উচিত ‘আমি সুস্থ স্বাভাবিক জীবন যাপন করবো, পরিবেশ ভালো রাখবো।’ পরিবেশ যে মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে তা সকলেরই জানা।  যে মানুষ তরুণ বয়স থেকে নিজেকে প্রবীণ বয়সে শারীরিক, মানসিকভাবে সক্রিয় থাকার জন্য পরিবেশ সচেতন হবে, শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকার চেষ্টা করবে এবং অপরকে সচেতন করবে সেই মানুষ বয়সকালীন সময়ে অপরের ওপর নির্ভরশীল  হবে না এবং সে সক্রিয় এবং কর্মময় বার্ধক্যের জীবন যাপন করতে পারবে। এমন কি অপরকে সহায়তা করতেও পারবে। বয়সকালীন সময়ে  ভালো থাকতে হ’লে ধুমপান বর্জন করতে হবে, চর্বিজাতীয় খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। হাঁটতে হবে, শারীরিক ব্যায়াম করতে হবে। সময়মতো ঘুম এবং সময়মতো ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস করতে হবে। বেশী ঘুম এবং বেশী খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। কথায় আছে, ‘কম খেলে বাঁচন, বেশী  ঘুমালে মরণ’। স্বাস্থ্য শুধু শরীর ভালো রাখা নয়, মনও ভালো রাখা। তাই দেহ, মন  ভালো রাখতে হলে খাবার আর ব্যায়াম করার সঙ্গে সঙ্গে  বিভিন্ন ধরণের ভালো বই পড়তে হবে। বই পড়লে  মনের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। মনের স্বাস্থ্য ভালো থাকলে ভালো থাকবে স্বাস্থ্য।

 

 আমাদের দেশে বিনোদনের তেমন ব্যবস্থা নেই তবুও নিজেদের মধ্যে নিজেদের মতো ক’রে বিনোদনের ব্যবস্থা করে নিতে হবে। যেমন, পরিবারের সকলকে নিয়ে বেড়ানো, গল্প করা, খেলা।  কাজের চাপে পরিবারের সদস্যদের একত্রে বসা হয় না। এ জন্য রাতে খাবার টেবিলটাকে বিনোদনের জন্য বেছে নিলে  ভালো হয়। খেতে খেতে ছেলে-মেয়ে, বাবা, মা সকলেই কথা বলতে পারবে, সবার সঙ্গে সবার বিষয় কিংবা সমস্যা  শেয়ার করতে পারবে। ছুটির দিন বাইরে বের হওয়া না গেলে ঘরের ভেতরেই গল্প করা, খেলা যেতে পারে। বাচ্চাদের নিয়ে চোর-পুলিশ খেলা, শব্দ তৈরি করা, লুডু, ব্যাগাডুলি,ক্যারাম, মনোপলি এসব খেলা যেতে পারে। মানুষ যা অভ্যাস করে মানুষ তাই করতে পারে। পরিবার ছাড়াও সংগঠনের মাধ্যমে বিনোদনের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। অনেক সংগঠন আছে, সেই সংগঠনগুলো যদি তাদের কাজের পাশাপাশি কম্পিউটারের ব্যবস্থা করতে পারে তাহ’লে বয়সি মানুষেরা কম্পিউটারেও  সময় কাটাতে পারবে। কারণ অনেকেরই কম্পিউটার কেনার সংগতি নেই। কম্পিউটারে সামাজিক যোগাযোগ খুবই সহজ। বয়সী মানুষ এইসব সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থাকলে তাদের মন ভালো থাকবে, ভালো থাকবে স্বাস্থ্য। এছাড়াও বর্তমানে অণুপরিবার পছন্দের হওয়ায় বয়স্ক সদস্যের কাছে রাখতে চায় না অনেকে। কিন্তু মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে হলে বাড়ির বয়স্ক সদস্যদের নিজেদের কাছে রাখতে হবে।

 

আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট বিচার করলে দেখা যায়, আমাদের দেশের মানুষ যতোটা স্বাস্থ্য সচেতন হওয়া প্রয়োজন ততোটা স্বাস্থ্য সচেতন নয়।  সুষম খাবারের অভাব তো আছেই তার সঙ্গে আছে অসচেতনা। যেমন, যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলা, প্রাকৃতিক কাজ সম্পন্ন করা, কফ, থুথু, পানের পিক ফেলা। এসব কারণে পরিবেশ দূষিত হয় এ ধারণা এ দেশের মানুষের নেই। কিংবা থাকলেও কেউ মানতে রাজি নয়। মানুষের স্বাস্থ্য এবং পরিবেশ  ভালো রাখার জন্য গাছের প্রয়োজন, কিন্তু  কিছু অসাধু, অসচেতন মানুষ গাছ কেটে বন সাফ করে ফেলছে, কেউ তামাক চাষ করে, সেই তামাক পাতা শুকানো কাজে গাছ কেটে খড়ি করছে। ইটের ভাটায় গাছ কেটে দিচ্ছে, ফসলের ক্ষেত বা মানুষের বসবাসের কাছাকাছি উড়ছে সেই ভাটার কালো ধুঁয়া। আবার কেউ বা বিবাদের রেশ ধরে অপর পক্ষের তৈরি বাগান কেটে ফর্সা করছে। এসবই অসচেতন মানুষের কাজ, ওই সব অসচেতন মানুষকে সচেতন করতে হবে। তারা যেন গাছ না কাটে, একটা গাছ কাটলে যেন তিনটা গাছ লাগায়, নদী ও খাল, বিল,ঝিল আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক প্রয়োজন।  এগুলো যেন ভরাট না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। মানুষ স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সচেতনা নিয়ে কাজ করলে এ দেশে অসচেতন জনগন অচিরেই নিজের স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন হয়ে উঠবে। বাংলাদেশের মানুষ সব পারে। এ দেশের মানুষ ভাষার জন্য রক্ত দিয়েছে, স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধে করেছে, প্রাণ দিয়েছে নির্দ্বিধায়।  তারা স্বাস্থ্য সচেতন হবে না  এ কথা ভাবাই যায় না, তাদের শুধু সঠিক দিক নির্দেশনার প্রয়োজন।  

 

তথ্যসূত্র : বিভিন্ন পত্রপত্রিকা