একটু উষ্ণতা
জনার কথায় আসিফ মিজানের প্রতিটি রোম খাড়া হয়ে উঠল। উত্তেজনায় রীতিমতো কেঁপে উঠছে আসিফের পুরো শরীর। শিরদাঁড়া বেয়ে নেমে যাচ্ছে হিমশীতল বরফ। কথা বন্ধ হবার উপক্রম, অনেক কষ্টে উচ্চারণ করল,
-তুমি কি বলছ জনা! আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না, কি ভাবে কি হ?। আর এরকম যদি কিছু হয়েই থাকে এখন এই চলে যাবার মুহুর্তে বলছ কেন? আগে বললে একটা ব্যবস্থা করা যেতো।
আসিফ যতটা উত্তেজিত জনা ফুলার স্টোন ততটাই শান্ত, ধীর, নিশ্চল। আসিফ তুমি এত উত্তেজিত হচ্ছো কেন? আমি তোমাকে কোন কমপ্লেইন করছি না, তোমাকে কোন দোষও দিচ্ছি না। এটা আমার জন্য তোমার দেয়া ভালোবাসার উপহার,আমি খুব খুশি মনে তা গ্রহণ করেছি।
কিছুক্ষণ দু’জনই চুপচাপ, শুরু করল জনা,
-আগে বললে কি লাভ হতো, আর এখন বলাতেই বা কি ক্ষতি হলো? বুঝলাম না। তোমাকে হাগ করে অভিবাদন জানাতে ইচ্ছে করছিল । সুখবরটা তোমাকে জানাতে ইচ্ছে হচ্ছিল, তাই জানালাম, এর বেশি কিছু নয়। তুমি এ নিয়ে ভেবে না।
– না জনা, আমি তোমাকে এভাবে একা চলে যেতে দিতে পারি না। এখনও তোমার লাগেজ ইমিগ্রেশন থেকে চেক আউট হয়ে যায়নি। অফিসারকে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে জানিয়ে দাও আজ তুমি যাচ্ছ না। দেরি করো না জনা। প্লিজ যাও, যেয়ে না করে দাও। আমার ফ্লাইটের এখনও চার ঘন্টা বাকি আছে।
– কেন এমন অস্থির হচ্ছ,, শান্ত হও আসিফ, কিছুই হয় নাই। আমরা যে যার গন্তব্যে চলে যাব। দুজনে ভালো বন্ধু ছিলাম এবং থাকব। কিছু ভেবো না, মন খারাপ করো না সুইট হার্ট।
– ওহ মাই গড! আমার মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছে। তুমি এখনও উঠছ না কেন? যাও, জানিয়ে দাও তুমি আজ যাচ্ছ না। না হলে তোমার লাগেজ চলে যাবে আর তোমার ডাক পড়বে। যাও প্লিজ যাও।
-আসিফ আমি আজই যাব এ সিধান্ত চূড়ান্ত। তুমি কি খেয়াল করনি আমি লাগেজ দিয়ে বোর্ডিং পাস নিয়েই তোমার সাথে কথা শুরু করেছি। কনসিভের বিষয়টা আমি আন্দাজ করেছিলাম। এরপর মেডিকেল সেন্টার থেকে টেষ্ট করে নিশ্চিত হই। তোমাকে জানাই নি, আজও না জানিয়ে চলে যেতে পারতাম। কিন্তু তা আমি করিনি, কারণ আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি।
আসিফের মুখে কোন কথা নেই, দুহাতে মাথার চুলগুলো বার বার পিছনে নিচ্ছে, যেন উত্তজনা প্রশমনের উপায় খুঁজছে। শরীরের সব রক্ত মুখে এসে জমা হয়েছে। চোখ দুটো টকটকে লাল দেখাচ্ছে। দুহাতে জনাকে জডিয়ে ধরে শেষ চেষ্টা
-প্লিজ জনা, তুমি আমার একটা কথা শোন, আমি আর কোন দিন তোমাকে কোন অনুরোধ করব না। প্লিজ প্লিজ জনা, আমরা দুজনেই আজ দেশে যাওয়ার প্রোগাম বাদ দেই। চলো হোটেলে উঠে সামনা সামনি বসে এই সমস্যা থেকে বের হবার পথ বের করি।
– না, আসিফ, আমি তো এটাকে সমস্যা বলছি না। এটা আমার আনন্দ, আমার প্রাপ্তি। আমাকে আমার আনন্দ আরোহন থেকে বঞ্চিত করো না। খানিক দম নিয়ে আবার শুরু করল
-তুমিতো জানই আমার একটা বিয়ে হয়েছিল। সংসার করেছিলাম বছর পাঁচেকের মতো। কিন্তু চিন্তা-চেতনায়, নীতি-নৈতিকতার জায়গায় দুজনের অবস্থান ছিল দুমেরুতে। টেনেটুনে সংসারের স্থায়িত্ব কিছুকাল হলেও সন্তান নেবার কথা দুজনের কেউই ভাবিনি। এরপর কিছুদিন আমি একাই ছিলাম। তারপর এক বন্ধুর সাথে থেকেছিলাম কয়েক বছর। তার সাথে মনের মিল ছিল, পারস্পরিক বোঝাপড়াও ভালোই ছিল। তবে সেটা কেটে যেতেও সময় লাগেনি। দিন যত গড়াতে থাকে ভালোবাসার রঙ তত দ্রুত ফিকে হতে থাকে। তাই সন্তান পর্যন্ত আর যাওয়া হয়নি। তখন থেকে একাই ছিলাম। এরপরই এখানে এসে তোমার সাথে পরিচয়। তোমাকে বন্ধু হিসেবে পাওয়া আমার পরম সৌভাগ্য। তোমার সাথে আমার বিস্তর পার্থক্য। ভাষা,ধর্ম, আঞ্চলিকতা এবং সামাজিকতা সকলই ভিন্ন। তবুও তোমাকে আমার অনেক বেশি আপন লাগে,অনেক কাছের মানুষ মনে হয়। তোমার সাথে কাটানো এই কয়েকটা মাস, আমার জীবনের সবচাইতে উল্লেখযোগ্য সময়। এটা দীর্ঘ জীবনের ছোট্ট একটা অংশ হলেও বড একটা আস্থার জায়গা তৈরি হয়েছে। তোমাকে দেখেই আমি এশিয়ানদের চিনেছি, চিনেছি বাংলাদেশিদের। আমি তোমার সন্তান ধারনে গর্বিত বোধ করেছি। তোমার প্রতি আমার কোন রাগ অভিযোগ অনুযোগ নেই। আমরা দুজন দুজনকে ভালোবেসেছি, এতে কোন পাপ হয় কিনা আমি জানি না। আমি যে সমাজে বড হয়েছি সেখানে এটা বৈধ্য, অন্যায় নয়। আমি একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ, আমার পছন্দের মানুষের সন্তান ধারণের অধিকার আমি রাখি।
ক্রমাগত বলেই যাচ্ছে জনা ফুলার ষ্টোন
-আসিফ এই স্বর্গীয় সুখ থেকে আমাকে বঞ্চিত করো না। আমি নিজের পরিচয়ে আগত সন্তানকে বড করব। কোনদিন সন্তানের পিতার দাবি নিয়ে তোমার কাছে যাবো না। তুমি আমাকে নিয়ে হোটেলে উঠিয়ে কি করাতে চাইছো? নিশ্চই এবরশন করাতে চাইবে। ভালোবাসার কোন চিহ্ন রাখতে চাও না? কিন্তু আমি আমার ভালোবাসার জলন্ত চিহ্ন জীবনভর আগলে রাখতে চাই। আমি বুঝতে পারছি তোমার সমস্যা কোথায়। তুমি বিবাহিত, দুটো সন্তান আছে তোমার। আমি আমার সন্তান নিয়ে তোমার সাজানো গোছানো সংসারে প্রবেশ করব না,কথা দিলাম।
– জনা তুমি যে সমস্যার কথা বলছ, অবশ্যই তা সত্য। তুমি যদি এই সন্তান নিয়ে আমাদের সংসারে হাজির হও তাহলে হয়তো সংসারটা আর টিকবে না। কিন্তু অন্য আরেকটা কষ্ট এর চাইতেও বেশি পোড়াচ্ছে, যন্ত্রণা দিচ্ছে আমাকে। এই বেদনাটা তুমি ঠিক বুঝবে না। আমার রক্ত চিহ্ন, আমার দেহের অংশ, আমার সন্তান জন্ম হবে, বেড়ে উঠবে, আমার দৃস্টিসীমার বহু বহু দূরে। যার কিছুই আমি দেখতে পাব না। আমি আমার সন্তানের হাসি আনন্দের অংশদার হতে পারব না, তার দুঃখ বেদনা প্রশমনের ভাগিদার হতে পারব না। এ কেমন যন্ত্রণাকর বেঁচে থাকা। না জনা আমি পারব না। প্লিজ জনা, আমার কথা শোন…
জনার প্লেনের সময় হয়ে গিয়েছে, মাইক্রোফোনে ডাক পড়েছে ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার । আর দেরি করা যাবে না, উঠতে হবে জনাকে। কোন কথা না বলে উঠে দাঁড়ালো জন।, শেষ…শেষ চেষ্টায় আসিফ জনার হাতটা দু হাতে জডিয়ে ধরে…
– জনা তোমার প্লেন চলে যাক। ওদের জানিয়ে দাও তুমি আজ যাচ্ছ না। চলো দুজনে ঠান্ডা মাথায় বসে ভেবে দেখি, কথা বলি কিছুক্ষণ।
– শুধু শুধু দুঃশ্চিন্তা করো না। সব কিছু ঠিক থাকবে। আমাকে দেরি করিয়ে দি। তুমি ভালো থেকো। তোমার পরিবারের সাথে সুন্দর সময় কাটুক, এই শুভকামনা রইল আমার পও নাক্ষ থেকে।
(দুই)
সরকারিভাবে বিদেশ সফর সবার জন্যই লোভনীয়। এর ব্যতিক্রম নয় প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা আসিফ মিজান। স্বপ্নের নগরী প্যারিসে ট্রেনিং প্রোগামে অংশ নেবার জন্য অন্য অফিসারদের মতো আসিফেরও আগ্রহের কমতি ছিল না। প্রতি বছর তরুণ অফিসারদের জন্য ট্রেনিং প্রোগামের আয়োজন ও অর্থায়ন করে ফ্র্যান্স সরকার। নয় মাসের প্রোগামে যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ দেয় তাতে থাকা খাওয়ার পরও ভালো অর্থ দেশে আনা যায়।
আসিফ সিনসিয়ার অফিসার , কাজের প্রতি নিষ্ঠাবান। মাথার উপর যে কজন বস আছেন, সবাই মোটামুটিভাবে তার উপর সন্তুষ্ট। প্যারিসের প্রোগামে যাবার ব্যাপারে আসিফের আগ্রহের কথা জানে বলে ইমিডিয়েট বস তাকে চমকে দিয়ে বলল,
– এই নাও তোমার কাজের পুরস্কার, প্যারিসের প্রোগামের জন্য এবছর তোমার নাম প্রস্তাব করে ফাইল দিয়েছিলাম। আজ স্যার সাইন করে পাঠিয়ে দিয়েছেন। কংগ্রাচুলেসন্স! এবছর বাংলাদেশের প্রতিনিধি তুমি। আসিফ আনন্দে আত্মহারা, চোখে পানি এসে গিয়েছিল। কাজের প্রতি নিষ্ঠাবান হলে যে এত দ্রুত পুরস্কার আসবে ভাবেনি।
এয়ারপোর্টের গদিওয়ালা আরামের চেয়ারে বসেও কষ্টে কষ্টে জর্জরিত হচ্ছে আসিফ মিজান। স্বপ্নের প্যারিস নগরীকে কেমন বিবর্ণ ম্লান লাগছে। এয়ারপোর্টের ভেতর বাইরে এত আলোর উজ্জ্বলতা মিজানকে ছুঁতে পারছে না। এক গভীর অন্ধকার ওকে ঘিরে রেখেছে। সেন্ট্রাল এসি চলছে তবুও ঘেমে নেয়ে অস্থির। কি ভাবে মুক্ত হবে এই কঠিন চক্র থেকে। কোন পথ খুঁজে পায় না। ধ্বংস করে দিতে ইচ্ছে করছে নিজেকে নিজের।
একটা সাজানো সংসার, ভালোবাসার বৌ মিলি, আদরের মিষ্টি দুটো মেয়ে অধরা ও কাব্য। বৌ ও মেয়েদের প্রতি দায়িত্ব, কর্তব্য এবং ভালোবাসা কোনটিরই কমতি ছিল না। প্লেনে উঠবার আগে আগে মিলির হাত দুটো শক্ত করে ধরে বলেছিল, মিলি মেয়ে দুটোকে দেখে রেখো, নিজের খেয়াল করো। নয় মাস খুব কম সময় না হলেও অনেক বেশিও কিন্তু না। দেখবে দেখতে দেখতে চলে যাবে। আমাকে নিয়ে একটুও ভাববে না। কথা দিলাম, এই আমিই আবার ফিরে আসব তোমার কাছে। কথা দেবার পেছনে ছিল আগের রাতে স্বামীর বুকের ওমেও উষ্ম হতে পারছিলো না মিলি, কেঁদে কেটে স্বামীর বুক নিজের চোখে মুখ ভিজিয়ে একাকার…ওসব দেশে মদ খাওয়া, মেয়ে মানুষ নিয়ে ফূর্তি করা পার্টি করাতে কোন দোষ নাই। তুমিও কি ওদের মতো এইসব করবে?
আসিফ মিলিকে ভালোবাসার আবেগে আদরে ভরিয়ে দিয়ে বলেছিল,
– পাগল! আমাকে তোমার তাই মনে হয়! আমি আমার মতোই থাকব। ঐ দেশে গেলেও বদলে যাব না। আমি তোমার কথা মতো চলবো কথা দিলাম।
প্যারিসে এসে মিলির কথা মতো চলছিল, মদ মেয়ে মানুষ থেকে দূরেই থাকছিল। কিন্তু জনার ব্যাপারটা কি ভাবে যে কি হয়ে গেলো। জনার সাথে মেলা মেশায় মিলির কাছে দেয়া প্রতিজ্ঞা বাঁধা হয়ে দাড়ায়নি।
বিশ্বের পনেরটি দেশ থেকে পনের জন প্রতিনিধি এসেছিলো এই ট্রেনিং প্রোগামে। এদের মধ্যে বার জন পুরুষ এবং তিন জন মহিলা। প্রত্যেকের থাকা খাওয়াসহ অনান্য চাহিদা মেটানোর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ অংশগ্রহণকারীদের হাতে সরাসরি দিয়ে দেয়া হয়েছিল। জনা আসিফ এবং আরও জন দশেক অংশগ্রহনকারী মিলে একটা বাংলো টাইপ বাড়ি ভাড়া নিয়েছিল। যদিও ট্রেনিং ইন্সটিটিউট থেকে একটু দূরে
তবুও ভাড়া কম বলে ওরা উঠেছিল। সকাল আর সন্ধ্যায় হেঁটে আসতে খারাপ লাগত না, দূরও মনে হতো না। বাড়িটা অনেকগুলো সিংগেল রুমের । তবে একটা লম্বা বারান্দা দিয়ে সব রুমের সাথে যোগাযোগের ব্যবস্থা ছিল। যে যার মতোন সামনের দরজা দিয়ে বাইরে যেতো এবং ভেতরকার দরজা দিয়ে ডাইনিং, কিচেনার, লন্ড্রি, ওয়াশরুমে যাওয়া আসা করত। পাশাপাশি দুটো রুমে থাকত জনা ও আসিফ। সন্ধ্যায় ক্লাস থেকে ফেরার পথে দুজনে কথা বলতে বলতে বাড়ি ফিরত, ডাইনিংয়ে খেতে যেয়েও দুজনের দেখা হতো, কথা হতো। এভাবেই পাশাপাশি চলতে চলতে দুজনের জীবনের ভালো মন্দের জানাজানি হয়। জনার অতীত কষ্টের কথা শুনে সহমর্মিতার হাত বাড়িয়ে দেয় আসিফ। রাতের খাবারের পর ওরা ভেতরের বারান্দায় বসে গল্প করতে করতে রাত গভীর করে ফেলতো। তবুও কথা শেষ হতো না। পরিচয়ের প্রথম পর্বটা এমনিই ছিল। সম্পর্কটা সময়ের সাথে সাথে গাঢ় হতে থাকে। অনুঘটক হিসেবে কাজ করে প্রচন্ড ঠান্ডা এবং প্যারিস নগরীর মুক্ত অবাধ মেলামেশা। বারান্দায় গল্প করতে করতে ওরা এক সময় খেয়াল করে বিছানায় একই কম্বলের মাঝে দুজন দুজনের উষ্ণতা ভাগাভাগি করে নিচ্ছে। এভাবেই চলেছে ট্রেনিং শেষ সময়গুলো। ওরা দুজন দুজনের মাঝে বিলীন হয়ে যেতো পরম নির্ভরতায়, চরম আবেগে। কারও মধ্যে কোন অপরাধবোধ বা গ্লানি কাজ করত না।
তবে আজ কেন খুব কষ্ট হচ্ছে আসিফ মিজানের! কষ্ট হচ্ছে জনার জন্য, আবার মিলির জন্যও কষ্ট হচ্ছে। জনার ভেতরে বেড়ে ওঠা জীবনটার জন্য কষ্ট হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি কষ্ট হচ্ছে নিজের জন্য, ধিক্কার হচ্ছে নিজের উপর, প্রচন্ড ধিক্কার। নিজের রক্তচিহ্ন, পিতৃপরিচয়হীনভাবে বেড়ে উঠবে ভিন্ন কোন মহাদেশে, কিছুতেই মানতে পারছে না। মিলির নিস্পাপ মুখটা চোখের সামনে ভেসে উঠছে বার বার, আসিফ কি ভাবে পারল এই অপকর্ম করতে। দেশে ফিরে পারবে কি মিলিকে আগের মতো ভালবাসতে! জনা আর তার গর্ভের সন্তান কি এক দূর্ভেদ্য দেয়াল তৈরি করে বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে না! আসিফ আর ভাবতে পারছে না, মাথাটা অবশ লাগছে, ক্রমাগত সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ছে বিবশ ভাবটা, গা গুলিয়ে উঠছে।
এয়ারপোর্ট লাউঞ্জে মাইক্রোফোনে সুললিত নারী কন্ঠে জানান দিল, আসিফের প্লেন ঠিক সময় ছেড়ে যাবে ঢাকার উদ্দেশ্যে। প্রয়োজনীয় চেকিং-এর জন্য সবাইকে লাইনে দাঁড়ানোর অনুরোধ করা হচ্ছে। আসিফের শরীরের সমস্ত শক্তি কে যেন শুষে নিয়েছে। লাইনে যাবার জন্য উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে, কিন্তু নিজের শরীরকে নিজের বলে মনে হচ্ছে না।
সাহানা খানম শিমু
Facebook Comments Sync