পৃথিবী নামের মেয়েটি/ ড. শাহনাজ পারভীন
পৃথিবী নামের মেয়েটি/ ড. শাহনাজ পারভীন
শ্রাবণের সকালের বারিধারায় বৃষ্টির পরিবর্তে আকাশ থেকে কি ঝরে পড়ে? ছোপ ছোপ কালসিটে গাঢ় লাল রং! ঠিক যেমনটি ও স্বপ্নের মধ্যে দেখেছিলো সুবহে সাদিকে। তড়িঘড়ি ঘুম ভেঙে গেলে ফজরের নামাজ শেষ করে আবার ঘুমাতে গিয়েছিলো পৃথিবী। হ্যাঁ, সম্মানিত পাঠক আজ আমাদের গল্পের নায়িকার নাম পৃথিবী। জন্মের পর অবশ্য ওর মা ওকে নাম দিয়েছিলো অবনী। কিন্তু বুঝতে শেখার পর ওর কেন যেন মনে হলো ‘অ’ শব্দের শুরুটা ওর পছন্দ হচ্ছে না। কেমন যেন, হোচোট খাওয়া ঘোর লাগা। এক বিকেলে ঠিক এমনি ঝুম বৃষ্টিতে ব্যালকনিতে ঘোর লাগা ফুলের সুবাস মেখে কাঁঠালের বিচি ভাজা খেতে খেতে ওর মাকে ও জিজ্ঞেস করলো
–আচ্ছা মা, তুমি আমার নামটা ‘অ’ বর্ণ অর্থাৎ ‘অশনি সংকেত’ দিয়ে কেন রাখলে?
হঠাৎ কোন ভূমিকা ছাড়াই মেয়ের এমন প্রশ্নে মা ঝিম ধরা গলায় বলে,
— কি সর্বনাশের কথা। অ তে অশনি সংকেত হবে কেন? অলিও তো হয়। সৌন্দর্যের, সৃষ্টির প্রথম সোপান।
–অজগর ও তো হয়। হিসহিস শব্দের। কলজে ঠান্ডা করা!
–ওমা, তোর কথার কি ছিরি! কি অবস্থা? কোথা থেকে এলো তোর মাথায় এইসব?
— কোথা থেকে আর? জীবন থেকে। জীবন দিয়ে শিখেছি, কিনেছি। আমার নাম আমি চেঞ্জ করতে চাই।
অবনীর কণ্ঠের দৃঢ়তায় মা বুঝে যায়, সে এই কথার মাধ্যমে তার অনুমতি চাচ্ছে না। বরং তার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিলো।
মায়ের আর কথা বলতে ইচ্ছে করে না। ও তারই মেয়েতো! তিনিও তো কম যান না। এই মেয়ের জন্য তাকে কত্তোবড় মাশুল দিতে হয়েছে, সে কি তা জানে না? নিজের ভেতর উথাল পাথাল ঝড়কে সে এক বাটনেই ডিলিট করে। ক্লিক করে নতুন অপসন।
–জানো, অবনী অর্থ কি?
-জানি তো, পৃথিবী। তাই আমি ঠিক করেছি আমার নতুন নাম হবে “পৃথিবী”। আগামীকাল আমার নাম রেজিস্ট্রেশান হবে এসএসসির। আমি আমার নাম চেঞ্জ করবো। শুধু একটি শব্দ হবে ‘পৃথিবী’। নামের আগে পরে কিচ্ছু থাকবে না।
শুধু যে ঐদিনই তা নয়, অবনী যখন ছোট ছিল তখন মাঝে মাঝেই দিনের শুরু হতো এক একটি নতুন নামের বাহানা নিয়ে। আজ যদি তার নাম ‘আনা’ হয় তো কাল সে ‘এনজেলা’। খুব কাছ ঘেঁষে পুশি বেড়ালের আদর মাখা কণ্ঠে সে বলবে,
–মা আজ আমার নাম আনা। তুমি আজ সারাদিন আনা নামেই ডাকবে আমাকে।
— সেটা আবার কি? মা আকাশ থেকে পড়ে!
–আজ আমার নাম হবে আনা।
অথবা আজ আমার নাম এনজেলা। সারাদিন তাকে ঐ নামেই ডাকতে হতো। এই হচ্ছে অবনী। আর আজ সে তার মূল নাম সে এক ঝটকায় বদলে ফেললো ‘পৃথিবী’।
ব্যস, অবনী সেই থেকে পৃথিবী। কারণ ও ওর নামের কারণেই হারিয়ে ফেলেছিল একজনকে। যে তাকে অস্বীকার করেছিলো, অথবা ও নিজেই যাকে এভোয়েড করেছিলো। পরে জেনেছে, তার অন্য একটি নামের প্রেমে পড়বার কথা! হা পৃথিবী!
তারপর! অনেক দিন পর এই স্বপ্নেই দেখা হয়েছিল ওর প্রথম সূর্যের সাথে। তারপর এক রাতে সূর্যের সাথে পৃথিবীর বাঁধনটা বেঁধেছিলো হঠাৎই, কাউকে কিছু না জানিয়ে। বাড়ি থেকে বের হয়ে গিয়েছিলো এক কাপড়ে। কি জিদ চেপেছিলো তার! সে জিদটা আসলে কার ওপর? সে কি কাজলের জন্য, না কি তার নিজের ওপর? তবে যখন সব শান্ত হয়, তখন ওর অনুশোচনার শুরু হয়। তখন ওর আর কিছু করার থাকে না। শুধু জানে, সূর্য ওর চোখে নয়, হৃদয়ে থাকে সারাক্ষণ!
অবশ্য ও আজও জানে না, সূর্য কি ওর নামেই প্রেমে পড়েছিলো। নাকি তার প্রেমে ছিল অন্যকিছু? কেন সে এতটা নাছোড়বান্দা ছিলো? অথচ, যার নাছোড়বান্দা থাকার কথা ছিলো সেই কাজল আজীবন ওর চোখেই মেখে থেকেছে, হৃদয়ে আসেনি, নাকি আসতে চায় নি। নাকি সেও চেয়েছে, আমার মতোই! আমিই তাকে হাত ধরে চোখ থেকে হৃদয়ে নামিয়ে আনি! থাক, সেসব কথা, আজ অতীত নিয়ে ঘাটতে চায় না আর। রাত পোহালেই তার বাবার সাথে দেখা হলে সব সে বলবে, মন খুলে বলে দেবে সব!
হুম, সেই পৃথিবীর সকালে দেখা স্বপ্নটা সারা দুপুর ওর গলার কাছে আটকে থাকে দুঃসহ কাটার মতো। ইদানীং ওর এমনিতেই কি এক অনুশোচনাবোধ মাথার মধ্যে সারাক্ষণ পিলপিল করে। কাউকে বলতেও পারে না। না সূর্যকে, না মাকে, না বাবাকে। ওর খুব মনে হয় বিষয়টা যদি ওর বাবার কাঁধে মাথা রেখে, সেই ছোটবেলার অবনীর মতো মায়ের চোখে চোখ রেখে অধিকার নিয়ে বলতে পারতো? কিন্তু ওর আর শেষ পর্যন্ত বলা হয় না।
চেষ্টা যে করে নি, তা নয়, বহুবার চেষ্টা করেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বলা হয়ে ওঠে নি । শুধু শুধু মাথার মধ্যে মনের মধ্যে ঘুণপোকার মতো কিলবিল করে। ইদানীং সূর্যকেও আর আগের মতো সবকিছু খুলে বলতে পারে না। যে সূর্যকে সাথে নিয়ে ওর পথচলা শুরু, যাকে এক নিঃশ্বাসে সব কথা বলা ছিলো ওর স্বভাব, সেই সূর্যকেও কিছু বলতে পারে না ইদানীং। সূর্যও নিজেকেই দায়ী ভাবে। পৃথিবীর পথে নিজেকেই বাঁধা মনে করে। ও যদি ওর জীবনে না জড়াতো তাহলে পৃথিবীর আজ এই দৈন্য দশা হতো না।
পৃথিবীর বাবা রাশেদ কথা দিয়েছিলো তার ধর্ণাঢ্য বন্ধুপত্নীকে। ঠিক ওর বাবা নয়, ওর বাবার বন্ধু মঈনুল সাহেবই চাইছিলো ভাবীর যদি কন্যা সন্তান হয়, তাহলে আমার ছেলের সাথে তাদের বিয়ে হবে। আমাদের বন্ধুত্বকে আজীবনের টেকসই করতে পরবর্তী প্রজন্ম তাদেরকে লালন করবে। তাদের চারজনের এক কথা মুখে মুখে ঘুরতে ঘুরতেই যশোর ফাতেমা হাসপাতালে কন্যা সন্তানের শুভ জন্ম সংবাদটি মুহূর্তেই সাত কানে চাউর হয়ে
মুখের কথাটি হৃদয়ে পাকাপোক্ত স্থান করে নেয়। ফুল, মিষ্টি আর আনন্দ কোলাহলে মৌ মৌ করে চারদিক। হাসপাতাল থেকেই বরণ করে নেয় দুই ভরি ওজনের সোনার চেন, জামা কাপড়, নবজাতকের প্রয়োজনীয় সবকিছু দিয়ে। সেই থেকে মঈনুল সাহেব অবনীকে তাদেরই এক সন্তান মনে করে। ঈদ, পার্বন, যে কোনো উৎসব, জন্মদিনে সবসময়ই কেনাকাটায় অবনীই প্রাধান্য পায় তাদের। আর অবনীর বাবামায়ের কাছে কাজলও তাদের আর এক সন্তান। কেউ কম যায় না। নিজেদের মধ্যে এই নিয়ে প্রতিযোগিতা চলতো মনে মনে। কে বা কারা জিতে থাকবে এই খেলায়।
ধনী বাবার একমাত্র পুত্র সন্তান কাজল ছিলো অত্যন্ত সুন্দর, রাজকুমারের মতো। রাজনৈতিক আবহে বেড়ে ওঠা ব্যক্তিত্বসম্পন্ন, চৌকস, মেধাবী। ছোটবেলা থেকেই খেলা ধুলা, কম্পিউটার, জিমনেসিয়াম সব মিলিয়ে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। সেই তুলনায় অবনী ছিলো কমলা ভোগের ভেতরের কালার, পরিপূর্ণ গোলাপের কুড়ির মতো লজ্জ্বাবনত এবং পড়াশোনায় কিছুটা ব্যাক বেঞ্চার। সব মিলিয়ে কাজলের পাশে নিজেকে বড় নিষ্প্রভ ভাবতো অগোচরে। বুদ্ধি হবার পর থেকেই হবু প্রিন্সের কাছে একধরনের লজ্জা তো ছিলোই। সব মিলিয়ে সহজ হতে পারে নি তারা। না কাজল, না অবনী। তারপর ধীরে এক সময় অবনী হয়ে ওঠে পৃথিবী। আর কাজল লেপ্টে থাকে তার আজন্ম লজ্জায়। কখনো জোর করে নিজস্ব ঘেরাটোপ থেকে বের হয়ে পৃথিবীকে ফিরিয়ে নেবার অবকাশ পায় না। ঠিক এই সুযোগেই সম্পর্কের নিগূঢ় বৈপরীত্ব থাকা সত্ত্বেও এগিয়ে আসে সূর্য। তারপর যা হবার তাই!
সূর্যের ফ্যামিলি বিষয়টি মানতে চায় নি। যেমনটি কখনোই মানবে না বলে ঘোষণা করেছিলেন রাশেদ সাহেব। মামলা মোকাদ্দমা শালিস বিচার এড়াতেই যৌবন ফুটবার আগেই কিশোরী মেয়েটা সহসা মা হয়ে যায়।
আর পাঁচটি সাধারণ মধ্যবিত্তের সংসারের টানাপোড়নে তাদের সূর্য সময়টা কখন যেন মাথার উপর ঢলে পড়েছিলো নিজেদেরই অজান্তে। তবে একটু অবসরে, সচেতন আর অবচেতনে পৃথিবীর চোখে লেপ্টে থাকে কাজল। আর সূর্যের কক্ষপথে ঘুরে ফিরে তার অক্ষমতার মায়াজাল বন্দী হয়। মেয়েটি ভাবে তার কৈশোরের একঘেয়েমিতা, একরোখা মনোভাব,অবহেলায় ধীরে ধীরে যৌবনের কাঁটা ঘায়ে নুনের ছিটা ছড়াতে ছড়াতে তার জীবনটাকে পুরো নোনতা বানিয়ে ফেলেছে নিজেই। বিস্বাদের এই জীবনটাকে উপলব্ধি করতে করতে এক সময় মা বাবার কষ্টটা বুঝতে শেখে। তার ভুল তার চোখে বড় হয়ে আঙুল দিয়ে দেখায়। তখন আর পেছনে ফিরবার কোনো রাস্তা খোলা থাকে না। শত ইচ্ছে আর চেষ্টা থাকা সত্ত্বেও কোনদিন বাবা মায়ের কাছে তাদের অপমানিত করবার জন্য ক্ষমা চাইতে পারে নি। নিজেই তিলে তিলে শেষ হয়েছে। বড় ব্যবসায়ী কাজলের প্রতিদিনের আভিজাত্য শুধু যেন পৃথিবীর চোখে ছটা হয়ে লেগে থাকবার জন্যই দিগ্বিদিক শূন্যে ঘুরে বেড়াতো। শত দৈন্যতার মাঝে পৃথিবী যতই সেগুলোকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিতে চাইতো ততই ঘূর্ণি ধুলোর মতো তাকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে রাখতো। এই জনমে তার বোধহয় এ থেকে আর মুক্তি নেই জেনে নিজেই এক অসুস্থতার গহ্বরে হারিয়ে যেতে বসেছিলো।
প্রতি রাতের মতো নানান অসঙ্গতিপূর্ণ স্বপ্নের সাথে সাযুজ্য রেখে আজকের স্বপ্নও পৃথিবীকে সারাটা দিন বড় আনমনা করে রাখে। সে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আগামীকাল সকালেই সে যাবে মায়ের বাড়িতে। বাবার জ্বর, কাঁশি, গলা ব্যথাসহ কোভিডের সব লক্ষণ পরিলক্ষিত। মায়েরও জ্বর ছিলো, কিন্তু এখন সুস্থ। বাবার সুস্থতার কোন চিহ্ন দেখা যাচ্ছে না। দিনদিন খারাপের দিকে। তার শারীরিক নিরাপত্তবার কথা চিন্তা করে মায়ের শত বারণ সত্ত্বেও সে যাবে বাবার কাছে জোড়হাতে ক্ষমা চাইতে। মায়ের কাছে ক্ষমা চাইতে। যে ভুল জীবনে সে করেছে, তাদেরকে অপমানিত করেছে, সমাজের চোখে হেয় করেছে তার শাস্তি সে সারাজীবন বয়ে বেড়াচ্ছে। কিন্তু এর থেকে সে পরিত্রাণ চায়। বাবা মাকে জড়িয়ে ধরে কান্নার মাধ্যমে তাদেরকেও কাঁদাতে চায়, চোখের জলে তাদের ভেতরের গুমোট পাথরকে ভেঙে দিয়ে সেখানে ঝরনার জল ছলাৎছলাৎ ছড়িয়ে দিয়ে বাকি জীবনটা তাদের অভিশাপ থেকে মুক্তি চায়। সে নিজে মা হয়ে বুঝতে শিখেছে, সন্তানের প্রতি একটি বাবা মায়ের দরদ, ভালোবাসা, দায়িত্ববোধ আজীবনের। সবকিছু ছকে সাজিয়ে পৃথিবী চায়ের টেবিলে বসে। ছেলে আজ তার মায়ের প্রিয় স্নাক্সস নাসোস আর ফালুদা অর্ডার করেছে। ফুড পান্ডর কর্মোদ্যিম ছেলেটি অর্ডারকৃত স্নাক্সস বাসায় পৌঁছে দিলে, ছেলেটি নিজে মায়ের জন্য সন্ধ্যার টেবিল সাজায়।
পৃথিবী দীর্ঘ সময় নিয়ে মাগরিবের নামাজ শেষ করে ফেসবুক থেকে এক দমকা ঘুরে আসতে চায়। ফেসবুক অন করার সাথে সাথে ওর চোখে টর্নেডো ভেসে ওঠে। “শোক সংবাদ। শোক সংবাদ। শোক সংবাদ। তরুণ রাজনীতিবিদ, প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী, উপজেলা চেয়ারম্যান মো. ফাহমিদুর রহমান কাজল আজ বিকাল পাঁচটায় এক মর্মন্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন।”
ও চোখ ডলে, আবার দেখে। সে চায় চশমাবিহীন চোখের দেখা স্ট্যাটাসটা ভুল হোক। ও আবার পড়ে। ও আবার পড়ে। ও তো এটা চায় নি। কখনোই চায়নি। ও সুখে থাকুক আজীবন। সেটাই চেয়েছে মনে প্রাণে। সব সময়।
খবরটির সত্যতা যাচাইয়ে পৃথিবী ফেসবুকের আর কিছু পৃষ্ঠায় এগিয়ে যায়। ফেসবুকের পাতায় পাতায় একই খবর আর ছবিতে ঠাসা। সেই কাজল কালো চোখে কি করুণ চাহনি নিয়ে তার দিকে অপলক তাকিয়ে আছে! পাশের ছবিতে তার সরকারি জীপের দোমড়ানো, মোঁচড়ানো ছবি, আর একটি ছবিতে তার স্ত্রী সংসদ সদস্যের অভিজাত কন্যা যুথিসহ তাদের ফুটফুটে দুটো সন্তানকে ঘিরে হাস্যোজ্জ্বল ছবি। ও আর দেখতে চায় না কিছু। চোখ বন্ধ করে।
–না, এ হতে পারে না।
হে আল্লাহ! তুমি কি না করতে পারো? শুধু এজন্যই কি আমার জীবনটা অন্য ভাবে সাজিয়েছিলে?
বর্তমান সময়ের গ্লোবাল পেন্ডামিকটা যেন সত্যিকারের একক পেন্ডামিক হয়ে সহসাই ওর একার হয়ে যায়। সাজানো চায়ের টেবিলে ও বাকরুদ্ধ হয়ে যায় । ছেলেটি বুঝতে পারে না কিছুই, হঠাৎ করেই মায়ের কি এমন হলো?
পৃথিবী ফোনের নব টেপে। সূর্যের ফোনটা ইদানীং এত সময় বিজি থাকে কেনো?
Facebook Comments Sync