সাঈফ ফাতেউর রহমান-এর দুটি কবিতা

সাঈফ ফাতেউর রহমান-এর দুটি কবিতা

সাঈফ ফাতেউর রহমান-এর দুটি কবিতা

সাঈফ ফাতেউর রহমান-এর দুটি কবিতা

 

 রক্তাক্ত শরীরটিই এখন আত্মপ্রভ বাংলাদেশ          

 

একটি শরীররকে রক্তে রঞ্জিত করা যায়

একটি শরীরকে ক্ষতবিক্ষত ভূমি শয়ান করা যায়

স্বপ্নকে চেতনাকে আকাঙক্ষাকে হত্যা করা যায়না, পতিত করা যায়না।

 

যখন বত্রিশ নম্বরে রক্তাক্ত তান্ডব

যখন অবিমৃষ্যকারী নরাধমেরা পাশব উল্লাসে

যখন কীটানুকীটেরা  উদ্ধত তান্ডবে আত্মপ্রসাদ মুখরতায়

জানেনা তারা পতিত রক্তাক্ত শরীর থেকে নেপথ্য উঠে দাঁড়িয়েছে আত্মপ্রভ আকাশ।

 

দর্পমগ্ন হন্তারকেরা জানেনা

আস্তাকুড়ের নরাধমদের স্থান ইতিহাসে মীরজাফর অভিধা পায়

জানেনা তারা শরীর পতন মানেই মৃত্যু নয়, বিনাশ নয়, নিশ্চিহ্নতা নয়

অযুত নিযুত আকাঙক্ষার সাহসী পল্লবে পল্লবে বিকশিত তরুর জন্ম হয়।

 

আগ্রাসী পশুরা তা জানেনা

তাদের মানস অন্ধত্ব বুঝতে দেয়না তাদের

রক্তের প্রবহমানতায় বিজয় অর্জিত হয়না, হয়নি কোনদিনই

কেবল নিজেকেই মনুষ্যেত্বের কীটানুকীটে রূপান্তরিত ঘৃণ্য করে তোলা যায়।

 

পতিত রক্তাক্ত শরীরের মহা উত্থান

অন্ধচোখের দানবেরা তা দেখেনা, দেখতে পায়না

প্রতি ফোঁটা রক্তের থেকে সহস্র মানবীয় মানুষের জন্ম দেখেনা, দেখতে পায়না

আপন অতি ক্ষুদ্র আণুবীক্ষণিক মনো-পরিসরে উপলব্ধির সক্ষমতা তাদের থাকেনা।

 

পতিত দেহটি উঠে দাঁড়িয়েছে

বিস্তৃত হয়ে গেছে বাংলাদেশের সবুজে শ্যামলে

পতিত রক্তাক্ত ধূলিলুণ্ঠিত দেহটি এখন স্বদেশের কোনে কোনে পৌঁছে গেছে

চেতনার অবিনাশী কোষে ক্রমেই মহীরুহ বিস্তারে অবিনশ্বর প্রভাময় হয়ে গেছে।

 

আর অন্ধ পশুরা আস্তাকুড়েই

ইতিহাসে অধমতম নিকৃষ্ট স্থানেই তাদের অভিবাস

পশ্যেতর অধমাধমদের জন্য ইতিহাস সেই স্থানই নির্ধারিত রাখে।

 

আর অত্যুজ্জ্বল আলোক শিখায় ওই রক্তাক্ত শরীরই এখন আমার সোনার বাংলাদেশ।

 

========================================================

 

 মানবিক পৃথিবীর স্বপ্নদ্রষ্টা -মুজিব, ক্যাস্ট্রো  

 

দুই মহাদেশ আলিঙ্গনাবদ্ধ এখন

বিপরীত প্রান্তের দুই জনবাদী মহানায়কের হৃদ-সংরাগ

অবিসম্পাদি জনতা-বান্ধব মহামানবের উষ্ণ করমর্দন

মানবীয় সম্প্রীতি আর জনতা-প্রেমী উজ্জ্বল নক্ষত্র দুই।

 

ফিদেল ক্যাষ্ট্রো এগিয়ে আসেন

সাম্রাজ্যবাদী নিপীড়ন আগ্রাসন নির্যাতন থেকে মুক্ত করেছেন কিউবাকে

শাসন শোষনে অবলুণ্ঠিত  মাতৃভূমিকে রক্তমূল্যে স্বাধীন করেছেন মুজিব।

ক্যাষ্ট্রো জনমানুষের নেতা, মেহনতী জনতার প্রাণের সুহৃদ, অমিত যোদ্ধা

মুজিব জনমানুষের আত্মার স্পন্দন, কণ্ঠের ধ্বনি, আত্মানুভবের অহংকার।

 

কিউবা আর বাংলাদেশ

ভূগোলের দূরত্ব অনেক

তবু কোন দূরত্বই নেই আজ প্রাণের দ্যোতনায়

কোন বিভাজন নেই গণমানুষের প্রাণ চেতনার শুভময়তায়

এক পৃথিবীর আলো বাতাসে সব সম্পদে সব মানুষের অধিকার

আধিপত্য আর আত্মকরণের একাধিপত্যের কারো কোন অধিকার নেই

মানুষ বাঁচবে মানবীয়তায় সমতা সম্প্রীতি সাম্য আর মর্যাদার সম অধিকারে

দুই প্রান্তের জননায়কের কণ্ঠোচ্চারণে হৃদস্পন্দনে বেজে ওঠে একই সুস্বরে।

 

সংঘাতে রক্তে যুদ্ধে মুক্ত কিউবায় ওড়ে শ্রমী মানুষের প্রতীকি পতাকা

বাংলাদেশের রক্তাক্ত মানচিত্রেও ওড়ে লাল সবুজের পতাকা অবিনাশী।

শৃঙ্খলহীন শোষণহীন বঞ্চনাহীন সমাজ চাই

শান্তি মুক্তি সাম্য আর সমানাধিকারের জীবন চাই

স্বস্তি সখ্য সম্প্রীতি আর মুক্ত আলো বাতাসের অধিকার চাই

বর্বর পাশবীয় শোষণ শাসন পুঁজি আধিপত্য সামন্ততন্ত্রের অবসান চাই।

 

স্বপ্নালু চোখ মুজিবের স্বপ্নালু চোখ ক্যাষ্ট্রোরও

প্রত্যয়দৃঢ় শপথের অনির্বাণ আলো জ্বলে ওঠে

বাংলাদেশ আর কিউবার মানসানুভব একাকার হতে থাকে

মানবিক পৃথিবীর স্বপ্নদ্রষ্টা দুই মহানায়কের চোখে আলো জ্বলে ওঠে।

সাঈফ ফাতেউর রহমান
সাঈফ ফাতেউর রহমান