সময়ের কাহন -৭/ অনুপা দেওয়ানজী

সময়ের কাহন 10

সময়ের কাহন

সময়ের কাহন -৭/ অনুপা দেওয়ানজী

 

  কয়েকদিন পরে শুনি অফিসারদের জন্যে বেশ কিছু নূতন কোয়ার্টার নাকি তৈরি  হচ্ছে। সেই কোয়ার্টারের কাজ শেষ হলেই সে আমাকে নিয়ে যাবে।

খবরটা শুনে আমার মন খারাপ হয়ে গেলো।

 কবে কোয়ার্টার শেষ হবে আর কবে সে আমাকে নিয়ে যাবে!

 ভাবছিলাম বটে পড়াশোনা করতে যাবো তবে সেই সাথে এটাও ভাবছিলাম, চট্টগ্রামে গিয়ে দ্বিতীয় সেমিস্টার শুরু করার পরে যদি সে কোয়ার্টার পেয়ে যায় তখন আমি কি করবো? 

বড় ভাশুর নিশ্চয় তখন  আমাকে যেতে দেবেন না।

বলবেন বেড়ানোর অনেক সময় আছে। এতগুলো টাকা পয়সা খরচ করে  পড়তে শুরু করেছো। এক সেমিস্টার শেষও করে দ্বিতীয় সেমিস্টারও শুরু করে ফেলেছো। পড়াটাই আগে শেষ করে নাও।

 কি করে আমি তখন তাকে বলবো যে এখন পড়ার ইচ্ছে আমার মোটেই নেই। ফিরে এসেই পড়বো।

 

পড়ার চেয়েও সম্পূর্ণ নূতন একটি দেশ দেখার ইচ্ছেই  তখন আমার বেশি। 

এই সব ভাবনার দোলাচলের মধ্যেই  মেজোভাশুর হঠাৎ একদিন অফিস থেকে ফিরে এসে বললেন, আমার কর্তা নাকি রেডিও মেসেজে বলেছে,  কোয়ার্টার কবে শেষ হবে  তার ঠিক নেই। তবে কোম্পানি এই মুহূর্তে তাকে কোয়ার্টার না দিলেও আমার যাবার ব্যবস্থা নাকি হয়ে গেছে।

 হয়তো এক সপ্তাহের মধ্যে আমাকে চলে যেতে হবে। 

 

বেলুচিস্তানে অবস্থিত স্যুই গ্যাস ফিল্ড পাকিস্তানের সর্ববৃহৎ  একটি প্রাকৃতিক গ্যাস ফিল্ড। তৎকালীন পশ্চিম  পাকিস্তানের সিংহভাগ আয় এই ফিল্ড থেকেই হত। যতদূর মনে হয় স্যুই গ্যাস ফিল্ড সেই সময়ে বিশ্বের ষষ্ঠ গ্যাস ফিল্ড ছিলো । 

ফিল্ডটিতে সেই সময়ে  তোফাজ্জল সাহেব, ড. মতলুব আর মজুমদার সাহেব নামে মাত্র তিনজন বাঙালি অফিসার  ছিলেন। তিনজনই সিলেটের মানুষ । 

এদের মধ্যে বয়সে প্রবীণ ছিলেন তোফাজ্জল সাহেব। তাঁর পরিবার থাকতো সিলেট শহরে। 

 মেজোভাশুরের বিশেষ বন্ধু ছিলেন তিনি।

তিনিই নাকি আমার কর্তাকে বলেছেন,”দেওয়ানজী  তুমি অফিসার্স মেস ছেড়ে দিয়ে  বউমাকে এখানে নিয়ে আসো।আমার কোয়ার্টার তো খালিই পড়ে থাকে। যতদিন তুমি নতুন কোয়ার্টার না পাচ্ছো ততদিন না হয় আমার কোয়ার্টারেই তোমরা থাকবে  “ 

 

তোফাজ্জল সাহেব সম্পর্কে একটা কথা না বললেই নয়। 

হরিপুরের প্রথম গ্যাস ফিল্ডে যখন আগুন লাগে তখন তিনি একাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রায় সাত আটটি গাড়ি আগুনের হাত থেকে  রক্ষা করে তারপর নাকি বুক চাপড়াচ্ছিলেন আর বলছিলেন, আমার বউ বাচ্চারা কোথায়? ওরা বেঁচে আছে তো?

কোম্পানী  এই আনুগত্যের জন্যে তাকে ফোরম্যান থেকে  লেবার অফিসার পদে সম্মানিত করে তার প্রতিদান দিয়েছিলো।

তোফাজ্জল সাহেবের কথায় আমার কর্তা আর দেরি না করে  রেডিও টেলিফোনের মাধ্যমে আমাদের পাঠাবার জন্যে আমার ভাশুরকে জানিয়ে দিলেন।

 দুদিন পরেই অফিস থেকে আমার আর আমার মেয়ের জন্যে পাকিস্তানে যাবার টিকিটও এসে গেলো।

আমিও নিশ্চিন্ত আর খুশি মনে যাত্রার জন্যে  সব কিছু গুছিয়ে নিলাম।

 

পশ্চিম পাকিস্তানের পথে

————————————-

নির্দিষ্ট দিন  সকালবেলা ঢাকার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লাম। সাথে ছিলেন মেজোভাশুর। 

জীবনে সেই প্রথম প্লেনে চড়ার অভিজ্ঞতা। সিলেট এয়ারপোর্ট তখন খুব ছোট্ট একটা এয়ারপোর্ট। শুধুমাত্র ফকার প্লেনগুলিই সেই পোর্টে ওঠানামা করতো।

প্লেনে উঠে বসতে না বসতেই আধ ঘন্টার মধ্যে ফকার ঢাকার তেজগাঁ বিমান বন্দরে এসে নামলো।

আমার ভাশুর আমাদের এয়ারপোর্টে  বসিয়ে রেখে লিচু আর আনারস কিনতে গেলেন। কর্তার বন্ধুরা নাকি বলে দিয়েছে আনারস আর লিচু নিয়ে যাবার জন্যে। ওখানে নাকি এসব ফল সহজে মেলে না। পেলেও খুব দাম।

তোফাজ্জল সাহেব খুব পান খেতেন।

লিচু আর আনারস ছাড়াও ভাশুর তাই তার বন্ধুর জন্যে এক বিড়ে পানও কিনে   যখন ফিরে এলেন তখন প্লেন ছাড়ার আর খুব বেশি সময় ছিলো না। আমার মেয়েকে কোলে তুলে তিনি আদর করে দিয়ে বললেন,বৌমা প্লেন ছাড়ার আর দেরি নেই।  আমি তবে আসি।সাবধানে যেও।

 

সেই মুহূর্তে আমার ইচ্ছে করছিলো এই শ্রদ্ধাভাজন ও স্নেহশীল  মানুষটির পা দুখানি  ছুঁয়ে একটা প্রণাম করি।

কিন্তু সেই সময়ে  সমাজের  উদ্ভট কিছু  নিয়ম  রক্ষণশীল পরিবারগুলিকে মেনে চলতে হত বলে  ইচ্ছে থাকলেও তা  করা সম্ভব হত না। এজন্যে ভাশুরকে হাত জোড় করে প্রণাম করা ছাড়া আমার আর কোন উপায় ছিলো না।

আমি ভাশুরকে  প্রণাম করে একহাতে হ্যান্ডব্যাগ আর মেয়েকে ধরে আর অন্য  হাতে একটা  লাগেজ নিয়ে ধীরে ধীরে জেট প্লেনের সিঁড়ি বেয়ে  উঠে গেলাম।

প্লেনে সিট বেল্ট বাঁধার নির্দেশ এলে সিট বেল্ট বাঁধতে বাঁধতেই জেট প্লেনটি রানওয়ে দিয়ে চলতে চলতে এক সময়ে তীব্র গতি নিয়ে আকাশ পথে উড়ে চললো।

 প্রায় আড়াইশো যাত্রীর প্লেন। তবে বেশির ভাগ যাত্রীই  পশ্চিম পাকিস্তানের। এমন কি বিমানবালারাও ছিলেন উর্দুভাষী। বাংলা কথা হঠাৎ করে আর শুনতে পাচ্ছি না। এমন পরিবেশ আমার জন্যে একেবারেই নূতন।

এদিকে আমার মেয়েকে নিয়ে পড়েছি মুস্কিলে। সে আমার কোলে ছাড়া কিছুতেই তার সিটে বসবে না। এজন্যে তাকে কোলেই রাখতে হচ্ছিলো।

আমাদের সারিতে পাশাপাশি তিনটে সিটের মধ্যে একজন তরুণ বাঙ্গালি ইঞ্জিনিয়ার বসেছিলেন।মেয়ের সাথে কথা বলতে দেখে তিনি নিজেই যেচে আমার সাথে আলাপ করলেন।

তার সাথে টুকটাক কথা বলছি।

একটু পরেই  আমাদের  কথা শুনে আমাদের আগের সারিতে বসা তার এক বন্ধু নিজের সিট ছেড়ে আমার মেয়ের খালি সিটে এসে বসলেন।

তিনজনে বেশ  গল্প করতে করতে চলেছি। ওরা আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, পশ্চিম পাকিস্তানে এটা আমার প্রথম ভ্রমণ কিনা? আমার কর্তা কোথায় আর কোন পদে চাকরি করেন? 

আমি তাঁদের প্রশ্নের উত্তরে বললাম, জি এটা আমার প্রথম পশ্চিম পাকিস্তান ভ্রমণ। আমার কর্তা বেলুচিস্তানের স্যুই গ্যাস ফিল্ডে প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়াররের দায়িত্বে আছেন। আমি সেখানেই যাচ্ছি।

ওরা বললেন, ভাবি পূর্ব পাকিস্তান থেকে  আমরা পশ্চিম পাকিস্তান সম্পর্কে আসলে কিছুই  জানি না। জানি না বললে ঠিক হবে না। আসলে আমাদের বুঝতে দেয়া হয় না।

আপনি যখন এসেছেন তখন পশ্চিম পাকিস্তানের  যেদিকেই তাকাবেন মনে হবে নামেই শুধু আমরা এক দেশের অধিবাসী ।পূর্ব ও পশ্চিম এই দুই অংশের  তফাৎটা যে কি তা নিজের চোখেই দেখবেন এবার।

 

 কথা বলতে বলতে একসময়ে ভারতের আকাশসীমানায় প্রবেশ করতেই ককপিট থেকে লাউডস্পিকারে কণ্ঠ ভেসে এলো,

“সম্মানিত যাত্রীবৃন্দ আমরা এখন ভারত সরকারের অনুমতিক্রমে ভারতের আকাশসীমার ওপর দিয়ে চলছি “ইত্যাদি ইত্যাদি। 

আমি ভারতীয় সীমান্তের কাছাকাছি জায়গায় থাকলেও ভারতে  তখনও যাইনি। সেই ভারতেরই আকাশ সীমার ওপর  দিয়ে  উড়ে চলেছি পাকিস্তানে। 

মনে মনে ভাবছিলাম যে পাকিস্তান আমার দেশ,যার এক অংশ ভারতের একদিকে আবার অন্য  আরেক অংশ ভারতের অন্যদিকে। 

কী অদ্ভূতই না এই দেশ বিভাজন!

শুধু তাই নয়, দুই অংশের ভাষা,সমাজ,সংস্কৃতি, ইতিহাস, ভৌগলিক অবস্থান সব কিছুই একেবারে আলাদা।

না জানি কেমন হবে আমার দেশের সেই অন্য অংশ? 

জেট প্লেন ঢাকা থেকে করাচি পৌঁছাতে তখন আড়াই ঘন্টার মতো সময় নিতো।

করাচি বিমানবন্দরে প্লেন অবতরণ করলে আমার সহযাত্রী ইঞ্জিনিয়ারদের একজন আমার মেয়েকে কোলে তুলে নিলেন আর অন্যজন আমার হ্যান্ড লাগেজটা হাতে নিয়ে বললেন, ভাবি চলুন ভাইয়ের সাথে আমাদের আলাপ করিয়ে দেবেন।

কেন জানি সেই মুহূর্তে বঙ্কিম চন্দ্রের উক্তি ” বিদেশে বাঙালি মাত্রই সজ্জন” কথাটি মনে পড়ে গেলো।

যদিও পশ্চিম পাকিস্তানও সেই সময়ে আমার দেশই ছিলো।তবুও কেন জানি মনে এলো কথাটি।

করাচি বিমানবন্দরে নামার সাথে সাথে আমার মেয়ে তার বাবাকে দেখেই, বাবা বাবা বলে  আহ্লাদে আটখানা হয়ে বাবার কোলে ঝাঁপিয়ে পড়লো। 

আমি প্রকৌশলী দুজনের সাথে কর্তার পরিচয় করিয়ে দিলাম। 

ওরা আমার কর্তার সাথে পরিচয় পর্ব সেরে নিজেদের ঠিকানা জানিয়ে সেই সাথে আমাদের ঠিকানা নিয়ে বিদায় নিলেন।

ওরা চলে যেতেই আমি করাচির বিশাল বিমানবন্দর ছেড়ে ঝাঁ চকচকে শহরটাতে পা দিয়েই প্রথমেই একটা ধাক্কা খেলাম তেজগাঁ বিমান বন্দর আর করাচি বিমানবন্দরের এতটা তফাৎ দেখে।

সেই সাথে ঢাকা শহরের সাথে করাচি শহরের তুলনা করতে গিয়ে মনে হল আমাদের ঢাকা কেন এমন দীনহীন ? 

 দুই দেশের প্রধান শহর আর  বিমানবন্দরের মধ্যেই বা কেন এই বিশাল পার্থক্য? 

 

সেই মুহূর্তে কেন জানি পূর্ব বাংলার জন্যে আমার বুকের ভেতরে একটা কষ্ট চিন চিন করে উঠলো!

বার বার মনে হচ্ছিলো,  একই  দেশের দুই অংশের মধ্যে কেন এই তফাৎ? এ যেন ঠিক বিমাতাসুলভ আচরণ। 

গাড়িতে যেতে যেতে দেখি শহরের রাস্তায় উট। উট আমি এর আগে দেখিনি। কেমন যেন চার পা মুড়ে বসে, ওঠার সময়ে পিঠের কুঁজের দুপাশে ঝোলানো মালপত্র নিয়ে হেলেদুলে উঠতে দেখে মনে হয়  তার খুব কষ্ট হচ্ছে। 

আরব সাগরের তীরে অবস্থিত পাকিস্তানের প্রথম রাজধানী করাচি জানতাম।

 তবে  প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান নতুন রাজধানী নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়ে ইসলামাবাদে নাকি ১৯৬৭ সালের ১৪ই আগষ্ট আনুষ্ঠানিকভাবে পাকিস্তানের রাজধানী সেখানেই নিয়ে গিয়েছেন।

কথা বলতে বলতে  এক সময়ে অফিস থেকে আমাদের জন্যে বুক করা তাজ হোটেলে  এসে পড়লাম।

রাতে ডিনার খেতে খেতে আমি আমার কর্তাকে জিজ্ঞেস করলাম, ঢাকার তেজগাঁ  বিমান বন্দরও আমাদের আর করাচি বিমান বন্দরও আমাদের। দুটোর মধ্যে এমন আকাশ পাতাল তফাৎ কেন? রাস্তা দিয়ে আসার সময় দেখেছি ঢাকা শহর আর করাচি শহরের মধ্যেও  কী বিশাল পার্থক্য। নিজের চোখে না দেখলে জানতেই পারতাম না।

আমার কর্তা হেসে ফেলে বললো, এইটুকু দেখেই তোমার মন খারাপ হয়ে গেলো?

সবে তো পা দিয়েছো এখানে। এখনো তো নূতন রাজধানী ইসলামাবাদ,লারকানা, কোয়েটা,মারী এসব কিছুই দেখো নি।এতো কিছুই নয়। 

সেই বয়সে দেশের জন্যে বুকভরা ভালোবাসা আর আবেগ ছাড়া   রাজনীতির অ আ ক খ কিছুই আমি জানি না বা বুঝি না। তবে এই পার্থক্য দেখেই  মনে খুব ক্ষোভ জমেছিলো , একই দেশ অথচ  পূর্ব বাংলার সাথে  এমন বিমাতাসুলভ আচরণই যদি করা হয় তাহলে আমরা স্বাধীন হলাম কেন?

কেন জানি বিমানে আসার সময়েই মনে পড়ছিলো স্কুলে পড়ার সময়  দেশের মানচিত্র আঁকতে গেলে আমাদের দুটি মানচিত্র আঁকতে হত।

একই দেশের দুখানা  মানচিত্র কি আর কোন দেশের ছাত্রছাত্রীরা কখনো এঁকেছে বা আঁকে?আমার ঠিক জানা নেই। তবে র‍্যাডক্লিফের ওপরে এই ভেবে আমার খুব রাগ হচ্ছিলো যে কিনা তার ঠাকুমার নিপুণ হাতে কাঁচি দিয়ে কাপড় কাটা দেখতে খুব ভালোবাসতো।পরবর্তী সময়ে সে তার সেই ভালোলাগাটা এমন ভাবেই আমাদের ওপরে  প্রয়োগ করলো যেখানে ম্যাপ ধরে ধরে সুক্ষ্মভাবে কাটতে গিয়ে আমাদের পূর্ববঙ্গের মানুষের কারও বসতবাড়ি পড়ে গেলো ভারতে আর রান্নার ঘর পড়ে গেলো  পূর্ব পাকিস্তানে!

 যে ছিলো তার প্রিয় প্রতিবেশী সে হয়ে গেলো ভারতের নাগরিক। 

ঠিক একই অবস্থা পশ্চিম বঙ্গের লোকেরও।

এ কেমন দেশভাগ হোলো?যেখানে নিজের দেশে যেতে হলে অন্য আরেকটা  দেশের ওপর দিয়ে যেতে হয়?

ডিনারের মেন্যুতে কী ছিলো তা আজ আর মনে নেই। আমরা রুম সার্ভিস নিয়েছিলাম।তবে এটা মনে আছে, তাজ হোটেলের মত হোটেল থেকে ফিশ ফ্রাই নামে যে বস্তুটি দেয়া হয়েছিলো তাতে আমি মাছের আঁশ পেয়েছিলাম। যা আমার খেতে রুচি হয় নি।

পরদিন সকালে উঠেই আবার করাচির আন্তর্জাতিক জিন্নাহ বিমান বন্দরে এসে পি,আই,এর বিমানে উড়ে চললাম স্যুই যাবো বলে।

 প্লেনটি স্যুই যাওয়ার পথে কাশ্মোর বিমানবন্দর আর সাক্কার বিমান বন্দর হয়ে তারপর স্যুই যায়।

এই প্লেন দিনে দুবার স্যুই আসা যাওয়া করে। প্লেনের সাতটা সিট কেউ যাক বা না যাক স্যুই গ্যাস ফিল্ডের যাত্রীদের জন্যেই সংরক্ষিত থাকতো। স্যুই বিমান বন্দরটাও  ছিলো গ্যাসফিল্ডের নিজস্ব বিমানবন্দর। 

দেড় ঘণ্টার ভ্রমণ শেষে  স্যুই বিমানবন্দরে এসে প্লেন থেকে যখন বাইরে বেরিয়ে এলাম তখন সাথে সাথে মরুপ্রদেশের এক ঝলক তপ্ত হাওয়া ছুটে এসে আমার চোখ মুখ  যেন ঝলসে দিতে লাগলো।

  মনে হচ্ছিলো আমি যেন রুটি সেঁকা কোন তন্দুরে  দাঁড়িয়ে আছি।

অনুপা দেওয়ানজী 
অনুপা দেওয়ানজী