স্বাধীনতা আমার স্বাধীনতা – অনুপা দেওয়ানজী
বরিষ ধরা মাঝে শান্তির বারির মতো আমার স্বপ্নের স্বাধীনতা।
দীর্ঘ নয় মাসের কষ্টকর এক সংগ্রামের পরে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে তোমাকে পেয়েছিলাম। সেই থেকে আজও বুকে করে আগলে রেখেছি তোমাকে।
আমার স্বাধীনতা,
তোমার জন্যে আজও আমরা তেমনি করে আগুনে ঝাঁপিয়ে পড়তে পারি ।
তোমাকে পাবার জন্যেই যে শত শত বছর আমাদের সইতে হয়েছে রাজা বাদশাদের শোষণ।
সইতে হয়েছে দুশো বছর ধরে ইংরেজদের অত্যাচার।
তোমাকে নাগপাশে বন্দী করে যারা করেছে তোমার সম্পদ লুন্ঠন।
রাজা বাদশা গেলো, ইংরেজরা বিদায় নিলো !
তবুও তোমাকে মুক্ত করতে পারলাম কোথায়!
তারপর ২৪ বছর সইতে হল পাকিস্তানীদের দুঃশাসন,বঞ্চনা আর শোষণ সইতে সইতে আমরা করলাম ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ৬২র শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬র ছয় দফা,ঊনসত্তরের গণ অভ্যুত্থান, অবশেষে একসময়ে ৭০-এর ঐতিহাসিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয়ই আপামর বাঙালিকে পৌঁছে দিয়েছিলো তাদের স্বপ্নের গন্তব্যে।
সেদিনের কথা প্রতিটি বাঙালির হৃদয়ে প্রোথিত হয়ে আছে । ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু যেদিন রেসকোর্স ময়দানের জনসভায় ঐতিহাসিক ঘোষণা দিয়েছিলেন ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম,এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। ”
সেদিন থেকেই তো মুক্তিপাগল বাঙালি স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রস্তুতি গ্রহণ করতে শুরু করে।
মহাকালের যাত্রায় ১৯৭১ থেকে সেই সময় গড়িয়ে এখন ২০২০ সালে গড়িয়ে চলেছে।
পাকিস্তানের দুঃশাসন থেকে মুক্তির লক্ষ্যে ২৪ বছর পরে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের সাথে সেই মহাসমুদ্রটি পাড়ি দিয়ে বিশ্বের দুয়ারে যে দেশপ্রেমের আলো হাতে দাঁড়িয়েছিলাম এই সেই দিন।
শহীদের পবিত্র রক্তদানের মধ্যেই এই আলোকবর্তিকা আমরা পেয়েছি। এই আলো বয়ে নিয়ে যাবার ভার আমাদের প্রজন্মের সকলের।
আমরা দিয়ে যাবো পরের প্রজন্মকে। তারা দেবে তাদের পরের প্রজন্মকে। এভাবেই তোমার যথার্থ মূল্যায়ন হবে। এভাবেই আমরা তোমাকে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানাই।তুমিই যে আমাদের গৌরব। আমার পরিচয়।
এই তো আমার স্বাধীনতা।
Facebook Comments Sync