সময়ের কাহন / অনুপা দেওয়ানজী
ধারাবাহিক রচনা
সময়ের কাহন / অনুপা দেওয়ানজী
পর্ব –৩
ইন্দুরের লাইগ্যা পাকঘরে কিছু থউন যায়?এই বলে সে নির্বিকার মনে চা নিয়ে চলে গেলো।
কী জায়গায় যে এসে পড়লাম! রাতে ইঁদুরের উৎপাত ছাড়া দিনের বেলায় কাকের উৎপাতও কী কম? কলতলায় সাবান রেখে হাত ধোবার জো নেই।চায়ের কাপ,প্লেট, চামচ ধোবার উপায় নেই।
নিপাট ভালোমানুষের মতো ঠিক তখন রাজ্যের কাকগুলি উড়ে এসে সীমানা দেয়ালের ওপর চুপ করে বসে ইতিউতি তাকাতে থাকে। সুযোগ পেলেই ছোঁ মেরে সাবান, চায়ের চামচ বা ছাঁকনি নিয়ে সাথে সাথে হাওয়া।এসব জিনিস ওদের কোন কাজে লাগে কে জানে?
মা বলতেন, গ্রামের কাকের চেয়ে শহরের কাক বেশি ধুরন্ধর।
কথাটা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি।
কিন্তু ব্রাশ ছাড়া এখন বোতলটা কিভাবে ধুই? হঠাৎ মনে পড়লো মাকে দেখেছি বোতল ধোয়ার সময়ে বোতলের তলায় ব্রাশের আগাটা যখন পৌঁছাতোনা তখন বোতলে সামান্য চাল ফেলে বোতলটা ঝাঁকিয়ে নিতেন। তাতে পরিষ্কারের কাজটা বেশ ভালোভাবেই হয়ে যেতো।
আমি সেই পদ্ধতিটাকেই কাজে লাগিয়ে কলতলায় বোতলটা ধুয়ে, দুধ বানিয়ে মেয়েকে খাইয়ে দিতে গিয়ে শুনি বড় ভাশুর কলতলায় দাঁড়িয়ে সাঁচির বাপকে উচ্চস্বরে বকাবকি করছেন,
“সাঁচির বাপ কলতলায় এত চাল পড়লো কিভাবে?
এভাবে চাল নষ্ট করার মানেই বা কি?রোজ রোজ এভাবে চাল নষ্ট হলে মাসের শেষে কত চাল নষ্ট হচ্ছে তার হিসেব আছে”?
ভাশুরের বকা শুনে সাঁচির বাপ মিনমিন স্বরে বললো, “আমি তো চাইল ফালাই নাই দাদা । বউরাণী মনে অয় বাইচ্চার বোতল ধুইত গিয়া ফালাইছে”।
বড় ভাশুর অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন,” বোতল ধোবার জন্যে চাল কেন? ব্রাশ নেই বউমার?”
সাঁচির বাপ আবারও মিনমিন স্বরে বললো,“ পত্যেকদিন তো বেরাশ দিয়াই ধোয়। আইজ তাড়াহুড়াত বেরাশ খুইঁজ্যা পায় নাই মনে অয়।”
বুড়ো লোকটা ইঁদুরের কথাটা কেন যে ভাশুরের সামনে একবারও উচ্চারণ করলো না বুঝতে পারলাম না।
এ বাড়িতে বড় ভাশুরকে সবাই ভয় পায়। রান্নাঘরে ইঁদুর এসে কি কি ক্ষতি করে যায় তার হিসাব দেবার ভয়ে হয়তো কথাটা সে বলেনি।
ভয় শুধু সেই পায়নি, আমি নিজেও তার ভয়ে চুপ করে আছি।
ভাশুর বললেন, “একটা বোতল ধুতে গিয়ে যদি এতটা চাল নষ্ট হয় তাহলে বউমা সারাজীবন সংসার করবে কি করে”?
ছোট্ট একটা কথা। সেই বয়সে বড় ভাশুরের কথায় মনে কষ্ট পেয়েছিলাম ঠিকই কিন্তু পরিণত বয়সে এসে বুঝতে পারি আমার ভালোর জন্যেই তিনি সেদিন একথা বলেছিলেন।
বড়দের কাছে কত কিছু যে শেখার আছে!
যাই হোক মেয়েকে খাইয়ে দিয়ে তাড়াহুড়ো করে সেদিন শাড়ি পরতে গিয়ে কাপড়চোপড়ের সুটকেসটা মনের ভুলে খোলা রেখেই বেরিয়ে গেলাম।
স্কুটারে বসে সেকথা মনে পড়তেই মনে মনে ভাবছিলাম, বাড়ি ফিরে গেলে ঠিক দেখবো আজ আরেক প্রস্থ বকুনি আছে আমার কপালে।
ক্লাশে সেদিন মঞ্জুর মোর্শেদ স্যার আরাকান রাজসভার প্রধান কবি সৈয়দ আলাওলের পদ্মাবতী কাব্যের ওপর প্রশ্ন করবেন। অথচ আমি কিছুই পড়ে আসিনি।
অগত্যা স্কুটারে বসেই বইয়ের পাতা উল্টে মনে মনে মুখস্থ করতে থাকি
” কার্যহেতু যাইতে পন্থে বিধির ঘটন
হুনদের নৌকা সঙ্গে হইল দরশন।
বহুযুদ্ধ আছিল শহীদ হইল তাত
রণক্ষেত্র ভোগযোগে আইলু এথাত।
পদ্মাবতী কাব্যটি মূলত হিন্দি কবি মালিক মুহাম্মদ জায়সীর ‘পদুমাবৎ কাব্যের অনুবাদ।
বাস্তব ও কল্পনার চমৎকার সংমিশ্রণ কাব্যগ্রন্থটি। মাগন ঠাকুরের আদেশে কবি রচনা করেছিলেন এটি।
নোট ঝালিয়ে নিতে নিতেই দেখি বাসস্টপেজ এসে পড়েছে।
বইখাতা গুছিয়ে স্কুটার থেকে নেমেই ভার্সিটির বাসে উঠতে গিয়ে দেখি একগাদা ছাত্র-ছাত্রীর ভিড়ে আমার স্কুলের দুজন শিক্ষক শ্রদ্ধেয় আবুল কাশেম আর সন্তোষ মজুমদার স্যার!
তাঁদের দুজনকে দেখে আমার তো থতমত খাওয়ার উপক্রম হল । মনে মনে ভাবতে লাগলাম, স্যার দুজন ভার্সিটির ছাত্রছাত্রীদের বাসে কেন?
চলন্ত বাসে বসা এতগুলি ছাত্রছাত্রীর ভিড়ে স্যার দুজনকে আমার প্রণাম করতে খুব ইচ্ছে করলেও সেই সুযোগ আমার ছিলো না। আবার প্রণাম করতে পারছিলাম না বলে মনে একটা অস্বস্তি আর অপরাধবোধও কাজ করছিলো।
সন্তোষ স্যার ভিড়ের মধ্যেই কোন একজনের সাথে কথা বলতে বলতে চকিতে আমার দিকে এক পলক তাকিয়েই কেন জানি না দেখার ভান করে মুখ ফিরিয়ে নিলেন আর কাসেম স্যার একটু মিষ্টি হাসলেন।
এত ছাত্রছাত্রীর ভিড়ে আমি ঠিক কি করবো বুঝতে পারছিলাম না।
মনে মনে ভাবলাম, বাস থেকে নেমেই আগে স্যার দুজনকে প্রণাম করে নেবো।
পরে বুঝতে পারলাম স্যার দুজনও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় তখন সবেমাত্র স্থাপিত হয়েছে। নানা অসুবিধার কারণে যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পারেননি তাঁরা তখন ভার্সিটিতে পড়ার এই সুযোগটা হাতছাড়া করেননি। কারণ ব্রেক অফ স্টাডির কোনরকম ব্যাপার তখন ছিলো না।
আসলে লেখাপড়ার জন্যে ব্রেক অফ স্টাডির এই নিয়ম থাকাও উচিত নয়। কী সব অদ্ভুত নিয়ম!
আমি বুঝতে পারলাম, আমার স্যার দুজনও মাস্টার্স পড়ার জন্যে এই সুযোগে ভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছেন।
সন্তোষ স্যার তাই কী তাঁর ছাত্রীর সামনে একটু অস্বস্তি বোধ করলেন?এজন্যেই কি তিনি মুখ ফিরিয়ে নিলেন?
হবে হয়তো। কিন্তু লেখাপড়ার জন্যে বয়স কোন বাধা হতে পারে না এটা তো আমরা শিক্ষকদের কাছ থেকেই শিখেছি।
ছাত্রছাত্রীদের কথাবার্তা, হাসি, গল্পের মধ্যেই বাস যখন স্টপেজে এসে থামলো তখন সন্তোষ স্যার নেমেই কোথায় যে হাওয়া হয়ে গেলেন। আমি টেরই পেলাম না।
কিন্তু কাসেম স্যার নিজেই আমার কাছে এগিয়ে এসে সস্নেহে জিজ্ঞেস করলেন, আমি কেমন আছি? কোন বিভাগে ভর্তি হয়েছি?
স্যারের মুখে শুনলাম ওনারা দুজনেই আগের বছরে বাংলা বিভাগে ভর্তি হয়েছেন।
কাসেম স্যার ছিলেন অত্যন্ত কোমল মনের মানুষ। আমার আজও মনে পড়ে নবম শ্রেণিতে মীর মোশাররফ হোসেনের বিষাদ সিন্ধুর একটা অংশ আমাদের পাঠ্য ছিলো।স্যার তা পড়াতে গেলেই তাঁর চোখ দুটি অশ্রুসজল হয়ে উঠতো।।
ভার্সিটি থেকে বাসায় ফিরে এসে দেখি স্যুটকেস ঠিকই বন্ধ আছে। তারপরও কেন জানি বারবার মনে হচ্ছিলো, আমি স্যুটকেসের ডালা খোলাই রেখে গিয়েছিলাম।
ফিরে এসে বন্ধ দেখে নিশ্চিন্ত হলাম। কারণ আসার সময়ে আমি টাকা পয়সা গহনাগাঁটি যা কিছু সাথে নিয়ে এসেছিলাম সবই ওই সুটকেসের মধ্যেই রাখা আছে।
জায়গাটা খুব একটা ভালো এলাকায় নয়। যখন তখন যে কেউ দরজা খোলা পেলে ঢুকে যেতে পারে।
রোজকার কাজ সেরে রাতে যখন শুয়ে পড়েছি তখন নমিতা আমাকে ফিসফিস করে বললো,”কাকী তুমি চলে যাওয়ার পরে ঠাকুমা আজ তোমাকে খুব বকাবকি করেছে”।
নমিতার কথায় আমার বুকটা ধড়াস করে উঠলো। না জানি কী অপরাধ করলাম আমি!
ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করলাম, কেন বলতো?
সকালে বোতল ধুতে গিয়ে চাল ফেলেছিলাম বলে?
নমিতা বললো,” না তুমি সুটকেশ খোলা রেখে গিয়েছিলে সে জন্যে।
ঠাকুমা তোমার সুটকেশের সব শাড়ি উলটে পালটে দেখে বললো, তোর কাকার কাণ্ড দেখ।বাপের জন্মে কেউ যেন আর বিয়ে করে না।বিয়ে করাতে যখন চাইলাম তখন সে বিয়ে করবে না বলে আমাকে কী জ্বালাটাই না জ্বালিয়েছে। তারপর জোর করে যখন বিয়ে করালাম তখন বউয়ের পরণে দামী দামী শাড়ি ছাড়া সস্তা শাড়িতে তার মন ভরে না।এত শাড়ি লাগে মেয়েমানুষের?
ছেলে যে এত শাড়ি কিনে দেয় বউয়ের সেদিকে কোন খেয়াল আছে?
আমরাও তো বউ ছিলাম।আমাদের দিন যায় নি?
আমি বললাম, কিন্তু আমি তো সুটকেস বন্ধ পেয়েছি।
নমিতা বললো,” সে তো ঠাকুমা বন্ধ করেছে তোমার তোষকের নিচ থেকে চাবি নিয়ে”।
নমিতার মুখে একথা শুনে আমি শাশুড়ি মায়ের বকার জন্যে মনে মনে প্রস্তুত হয়েই ছিলাম কিন্তু অবাক হয়ে দেখলাম, স্যুটকেস খোলা রাখার জন্যে আমাকে তিনি তেমন বকলেন না। শুধু বললেন, কোথাও যাবার আগে সুটকেসে যেন তালা দিতে ভুলে না যাই। জায়গাটা ভালো নয়, সাবধানের মার নেই। দরজা খোলা পেলে হুটহাট করে যে কেউ সুটকেস থেকে কিছু চুরি করে নিয়ে যেতে পারে।
শাড়ি নিয়ে নাতনির সাথে তিনি এত কথা বললেও আমাকে কিছুই বললেন না।
তবে ছেলে বউকে দামী দামী শাড়ি কিনে দেয় এ নিয়ে তিনি আক্ষেপ করলেও সত্যিকার অর্থে আমাদের সময়ে এখনকার মতো এত বৈচিত্র্যপূর্ণ শাড়িতে বাজার সরগরম ছিলো না।
১৯৬৫-এর যুদ্ধের পরে ভারতীয় শাড়ি তো পাওয়াই যেতো না। সবাই তখন দেশী শাড়িই পরতো।
বিশেষ করে পাবনা আর টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি পরতেই সম্ভ্রান্ত মহিলারা ভালোবাসতেন।
ভালো মানের তাঁতের শাড়ির দাম ছিলো তখন বিশ কি পঁচিশ টাকা।
সিল্কের শাড়ি তখন এদেশে হত না। তাই এখনকার মতো সিল্কের শাড়ির এত ব্যাপক ব্যবহারও ছিলো না।
ঘরে পরবার জন্যে আটপৌরে একজোড়া বি টি শাড়ির দাম ছিলো মাত্র দশ টাকা। শাড়ির জমিও ছিলো খুব ভালো।
নিম্নজীবি মহিলাদের এক জোড়া শাড়ির দাম ছিলো তিন থেকে চার টাকা।
আমার বিয়ের প্রধান শাড়ি শ্বশুর বাড়ি থেকে যেটা দেয়া হয়েছিল তার দাম ছিলো আশি টাকা আর বাবা যেটা দিয়েছিলেন তার দাম ছিলো একশ দশ টাকা।
সোনার ভরি ছিলো একশো বিশ টাকা ।
মনে আছে বাবা একবার মার জন্যে বিশ টাকা দিয়ে ঘরে পরবার জন্যে একজোড়া শাড়ি এনেছিলেন। মা সে শাড়ি দোকানে ফেরত দিয়ে ষোল টাকার শাড়ি আনিয়ে নিয়েছিলেন।
সেদিন এর অর্থ কিছুই বুঝিনি। আজ বুঝি সফল একটা সংসারের পেছনে মায়েদের এই ধরনের কত যে নিঃস্বার্থ আত্মত্যাগ থাকে যার কোনরকম দামই মায়েরা পান না।
ছোট্ট এই উদাহরণের মধ্যেই কত বড় শিক্ষা লুকিয়ে আছে ভাবলে শ্রদ্ধায় মাথা নুয়ে আসে!
এদিকে দেখতে দেখতে ভার্সিটিতে প্রথম সেমিস্টার শেষ করে ফেললাম।
দ্বিতীয় সেমিস্টার আরম্ভ হবার আগে তাই লম্বা একটা ছুটি পেয়ে গেলাম।
ছুটি পাওয়ার সাথে সাথে আমার কর্তা সেইদিনই আমাকে আর মেয়েকে সিলেটে নিয়ে যাবার জন্যে চট্টগ্রামে এসে পড়লো।
বাবাকে দেখেই মেয়ে তো বাবার কোলে ঝাঁপিয়ে পড়ে অর্থহীন ভাষায় সমানে বকবক করতে শুরু করলো । সে বকবকানির আর থামাথামি নেই।
অনেকদিন পরে আবার সিলেটে যাবো বলে নিজেরও খুব ভালো লাগছিলো।
যাওয়ার আগে স্যুটকেসে কাপড় চোপড় গোছাতে গোছাতে হঠাৎ মনে হল আমার ননদকে দেবার জন্যে কয়েকটা ভালো শাড়ি আমার শাশুড়িকে দিয়ে যাই।
সেই বয়সে কেন যে এটা আমার মাথায় এসেছিলো আজ আর তা মনে নেই। কেউ শিখিয়ে দেয় নি।
ইচ্ছে হয়েছিলো ব্যাস এতটুকুই ।
একটা প্যাকেটে কয়েকটা শাড়ি ভরে আমার শাশুড়ির কাছে গিয়ে বললাম, ” মা আপনি গ্রামের বাড়িতে গেলে এই প্যাকেটটা দিদিকে দেবেন “
আমার শাশুড়ি বিধবা মানুষ। একবেলা ভাত খান।নিজের ভাত, তরকারি আলাদা কেরোসিনের স্টোভে নিজেই রান্না করেন।
তরকারি কুটতে কুটতে মুখ তুলে জিজ্ঞেস করলেন, “ওতে কি আছে?”
আমি বললাম কয়েকটা নতুন শাড়ি।
জানি ননদকে কয়েকটা শাড়ি দেয়া আহামরি কোন কিছু নয়, কিন্তু আমার সেই বয়সে ননদকে ভালোবেসে এইভাবে শাড়ি দেয়াটা আমার শাশুড়ির খুব ভালো লেগেছিলো।
শুধুমাত্র তাঁর মেয়েকে আমি ভালোবেসে দিয়েছিলাম বলে।
পাঁচ ছেলে আর ওই একটিমাত্র মেয়ে তার। মেয়ের শ্বশুরবাড়িও খুব একটা স্বচ্ছল ছিলো না।
বিয়ে দেবার পরেও প্রায়ই তাই মেয়েকে নিজের কাছেই এনে রাখতেন।
একেবারেই মাটির মানুষ বলতে যা বোঝায় আমার ননদ ছিলেন ঠিক তাই।
নিজের বড়দাদাকে তিনি এতটাই ভয় পেতেন যে একবার তাকে ধমক দেবার সাথে সাথে তার হাত থেকে ভাতের থালাটাই মাটিতে দুম করে পড়ে গিয়েছিলো।
মেয়েকে বিয়ে দিলেও আমার শাশুড়ি চাইতেন তার একটিমাত্র মেয়েকে বাপের বাড়ির সবাই একটু আদর করুক কিন্তু স্বার্থপর সংসারের নিষ্ঠুর কষাঘাত অনেক সময় তা হতে দেয় না।
বিশেষ করে আমার জায়েরা বিয়ের পরে শাশুড়ির বিবাহিতা মেয়ের ছেলেমেয়েসহ বাপের বাড়িতে বেশিদিন থাকাটা একেবারেই পছন্দ করতেন না।
সিলেট থেকে আসার সময় আমার কর্তা পরদিন রাতের মেলের টিকিটও সাথে নিয়ে এসেছিলো।
আমরাও আর দেরি না করে পরদিন সিলেটের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম।
(চলবে)
Facebook Comments Sync