একজন এনামুল কবির বিশ্বাসের লতা পাতা ফুল প্রেম – শাহজাহান চঞ্চল

একজন এনামুল কবির বিশ্বাসের লতা পাতা ফুল প্রেম - শাহজাহান চঞ্চল

একজন মরুপ্রবাসী বাঙালির শরীর রোদে ঝড়ে বিধ্বস্ত হলেও তার মনে নিরাপদেই বহমান থাকে ধানসিঁড়ি, আগুনমুখা, চিত্রা,পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, সন্ধ্যা নদী। তার বুকের জমিনে থাকে দিগন্তভরা সবুজ,বৃক্ষরাজি। চোখ ভরা থাকে স্মৃতির বৃষ্টি, লতা পাতা, ফুল পাখি। 

এনামুল কবির বিশ্বাস একজন সৌদি প্রবাসী, রিয়াদস্থ বাঙালি কম্যুনিটির একজন সুপরিচিত ব্যক্তি। জড়িয়ে আছেন সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে । সবুজপ্রেমী মানুষ,  নিজের ব্যালকনিতে গড়ে তুলেছেন এক চিলতে বাগান। লতা-পাতা, গন্ধরাজ,বেলি, ছোট্ট বাঁশঝাড়, মরিচ, পুঁই, বেগুন, টমেটোর সাথে আছে আরো কিছু গাছ। গতকাল তিনি আমাকে আনন্দভরে জানালেন, তার শ্রম সার্থক হয়েছে। কোন সে সার্থকতা ? তাহলে বলি সে কথা। এনাম বিশ্বাস দেশ থেকে খুব কষ্ট করে নিয়ে এসেছিলেন কয়েকটি ‘ডালিয়া’ ফুলের চারা। লাগেজের ভিতর টবসহ বিশেষ কায়দা করে এগুলো এনেছিলেন। ঢাকা থেকে রিয়াদ আসতে আসতে লাগেজের ভিতর দম বন্ধ হয়ে ভবলীলা সাঙ্গ হয়েছিল কয়েকটার। বাকিরা গলার মধ্যে শেষ দমটুকু নিয়ে কোনমতে বেঁচে ছিলো। এনাম বিশ্বাস এবং তার অর্ধাঙ্গিনী ব্যালকনির টব হাসপাতালে রেখে এই ডালিয়া চারাদের সেবা শুশ্রুষা করে দু’তিনটিকে জীবন ফিরিয়ে দিতে পেরেছিলন। সেই ডালিয়ার চারাগুলো ছোট থেকে বড় হয়েছে। তার-ই একটি ফুলবতি হয়েছিলো। গতকাল সেটি পূর্ণাঙ্গভাবে পাঁপড়ি সকল মেলে দিয়েছে ফাগুন বাতাসে। চোখ খুলে ব্যালকনি দিয়ে দেখছে পীচঢালা পথ, দ্রুত লয়ে ধাবমান গাড়ি। ডালিয়ার চোখকাড়া ফুল দেখে এনাম পরিবার আনন্দে আত্মহারা। আহা কত কষ্ট করেছে এনাম পরিবার, ডালিয়ার এই রূপ সৌন্দর্য দেখার জন্য। ব্যালকনির এই বাগানের যত্ন নেয়াতে পুরো এনাম পরিবার সজাগ। বিশেষ করে এনাম কবিরের সহধর্মীনী নীলা কবির ব্যালকনি বাগানের যত্ন নেন অকৃপণ। দিনে রোদের আলো দিয়ে লতা পাতা গাছদের স্নান করান, জল -সার খেতে দেন। রাতে নিয়নবাতির মিষ্টি আলো দিয়ে গাছদের ঘুম পাড়ান। এনাম কবির ব্যালকনির এই বাগানে দাঁড়িয়ে দিনান্তের ক্লান্তি ভুলে যান, বুক ভরে তাজা বাতাস নেন, চোখে ভরে নেন সবুজ। বাতাসের সাথে ডালিয়া ফুলের মাথা হেলানো -দুলানো দেখে তিনি এবং তার পরিবার এখন মুগ্ধ।