হ্যাপি ভ্যালেনটাইন ডে!/ শারমিনা পারভিন

হ্যাপি ভ্যালেনটাইন ডে!

হ্যাপি ভ্যালেনটাইন ডে!

ভ্যালেনটাইন ডে ভালবাসার  দিন, প্রেম নিবেদনের  দিন। মূলত প্রেমময় যুগলের একটা উপহার আদান প্রদানের দিন।

এই প্রথা হাজার বছর ধরে চলে আসছে। বাংলাদেশও এর থেকে বাইরে নয়। বরং সাড়ম্বরে  পালন করা হয়।

ভ্যালেনটাইন দিবসের কাহিনিটি বড়ই করুণ, বেদনাময়।

যা মনকে ব্যাথিত করে তোলে।

 

ঘটনাটি ঘটে ২৬৯ খ্রিষ্টাব্দে । ইউরোপের রোম ছিল তখন বিশাল শক্তিশালী  রাষ্ট্র। রোমের  সম্রাটের নাম ছিল  ক্লোরিয়াস। ক্লোরিয়াস ছিলেন  অত্যন্ত নিষ্ঠুর প্রকৃতির একজন মানুষ। নিষ্ঠুরতর ছিল তার কাজ। হৃদয়  ছিল কঠিনতম।

 

তিনি একবার জানতে পারলেন, তার রাজ্যে অবিবাহিত  পুরুষরা, বিবাহিত  পুরুষের  চেয়ে শক্তিশালী। এ খবর পাওয়ামাত্র  সম্রাটের মাথা খারাপ হয়ে গেল। তিনি ঘোষণা দিলেন  এ রাজ্যে কোন অবিবাহিত পুরুষ, নারীর বিয়ে হবে না। এতে করে সবাই অত্যন্ত রুষ্ট  হন।

 

সেন্ট ভ্যালেনটাইন ছিলেন খ্রিষ্টীয় তৃতীয় শতাব্দীর একজন পুরোহিত। তিনি এই আদেশ মেনে নিতে পারেননি।

তিনি অবিবাহিত  যুবকদের বিবাহের  জন্য  উৎসাহিত করতেন। এ খবর রাজার কানে পৌঁছায়। তিনি ভ্যালেনটাইনকে বন্দী  করেন। শুরু  হয় ভ্যালেনটাইনের বন্দী জীবন।

 

ভ্যালেনটাইন যে জেলে ছিলেন, ঐ জেলের জেলারের একটি অন্ধ  মেয়ে ছিল। ভ্যালেনটাইন যেহেতু পুরোহিত ছিলেন জেলার তার মেয়ের অন্ধত্ব  ঘোচানোর জন্য তাকে প্রার্থনা  করতে বলেন। সেন্ট  ভ্যালেনটাইন একনিষ্ঠভাবে  প্রার্থনা করেন। মেয়েটির  অন্ধত্ব  ঘোচে। মেয়েটি ভাল হয়ে যায়।

মেয়েটির  চোখ ভাল হবার পর, মেয়েটি ভ্যালেনটাইনের সাথে  কারাগারে দেখা করতে আসে। প্রথম দেখায় তাদের  দুজনের  দুজনকে ভাল লেগে যায়। তারা গভীরভাবে ভালবেসে ফেলে দুজন দুজনকে। ভ্যালেনটাইন মেয়েটিকে বিবাহের   প্রস্তাব দেন। এখবর রাজার কানে পৌঁছায়। রাজা ভ্যালেনটাইনকে এ প্রস্তাব প্রত্যাখান করতে বলেন। ভ্যালেনটাইন ঘোরতরভাবে অস্বীকৃতি জানান। রাজা ভীষণয়রুষ্ট  হন। তিনি ভ্যালেনটাইনকে মৃত্যুদন্ড প্রদান করেন। ২৬৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ ফেব্রুয়ারি 

ভ্যালেনটাইনের মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা

 হয়।

মৃত্যুর আগে ভ্যালেনটাইন তার প্রিয়তমা প্রেমিকাকে  চিঠি লিখে যান। চিঠির উপরে তিনি প্রিয়তমা প্রেমিকাকে লেখেন, “From your Valentine”.

যা অত্যন্ত বেদনাদায়ক, বেদনাবিধুর! 

এ ঘটনা মানুষকে কাঁদিয়েছিল।

তখন থেকেই ভ্যালেনটাইন ডে পালন শুরু। সেই থেকে পৃথিবীতে  শত শত  বছর ধরে এ দিবসটি পালন করে আসছে পৃথিবীবাসী। এই দিনে অনেক উইস করে তার প্রিয়জনকে। লেখে,  হ্যাপী ভ্যালেনটাইন ডে From your valentine. 

এই দিনে কেউ কেউ প্রেমপত্র 

 লেখে। যার যেমনভাবে ইচ্ছে  সেভাবেই ভালবাসা প্রকাশ করে, উপহার পাঠায়।

প্রতিটি দিনই ভালবাসার দিন। ফোকাসের  দিন নয়।

ভালবাসা  চিরন্তন। শুধু  প্রেমিক যুগল নয়, মা,বাবা,ভাই  বোন, স্বামী, আত্মীয় স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, সন্তান,পৃথিবীর  সমস্ত মনুষ্যজাতি, প্রাণিকূল, আকাশ বাতাস,সমুদ্র  পাহাড় সব কিছুকে ভালবাসি।

 

চিৎকার করে বলি ভালবাসি, অনেক  ভালবাসি।

 

ভালবাসি ভালবাসি

সেই সুরে 

কাছে দূরে 

জলে স্থলে বাজায় বাঁশি। 

হ্যাপি ভ্যালেনটাইন ডে!

শারমিনা পারভিন 
শারমিনা পারভিন
%d bloggers like this: