ইজ্জতের বেইজ্জতি/ প্রণব মজুমদার

প্রণব মজুমদার

– হেতে আরে খালি মারে! কাইল রাই ত মাইছে! য়ারে এটটু অ বালা বাসে ন। খালি মনয়ারা মনয়ারা করে। আই কোন কতা কই ন। হেরপর য় য়ারে চডে। মনয়ারারে বালাবাসে হুদু। হেতিরে সুনু দেয়। পাউটার দেয়। পিতা দেয়। কত কী আনি দেয়। আই কিচু চাইলে নানায় কয় টিয়া নাই। কাইল রাইতে কত কি অইলো! ইজ্জত নানার কোন লইজ্জা নাই। হারাদিন এতেরে মারে হেতির কিলায়। কতায় কতায় লতাবুরে অ চডে। য়ায়ারে কি মারাডা মাইলো আইজ।

একাদশী আকলিমার চোখে পানি। সর্দি বেশ। নাক দিয়ে ভারি পানি ঝরছে। পাতলা কফ শ্বাস নিয়ে ওপরে টানছে। সেমিপাকা ঘরের দেয়ালে টুকরো ইট দিয়ে আকঁছে সে। থেমে থেমে কাঁদছে। আর টানা অভিযোগের সশব্দ সুর তার। একা একা কথা বলছে। লতাও আকলিমার কথাগুলো মনযোগ দিয়ে শুনছিলো।

বিয়ে শাদীতে ইজ্জত মিয়ার জুড়ি নেই! বিয়ে আর শাদী! সবমিলিয়ে ১৭ খানা! সন্তান সংখ্যা? সন্তান ক’জন কেউ তা জিজ্ঞাসা করলে ইজ্জত মিয়ার উত্তর- ‘আতের কড় গনি লই! বরতির ঘরে পাউচগা, মাইজগার হাটটা, সাইজ্জতির চাইরগা আর হোডতির তিনগা, সাইজ্জতির হেডে আছে আরুগগা, হামনে বিয়াইবো! চাইরগা রাহি বেগগুন খেদাই দিচি! আর কইস ন বেগ্গুন ডেয়া আরে জালাই মারে! দ্যাশের বাইত, মারদাসাও আর ডাহায় মিলাই একষট্টিখান পোলাপাইন।’

চার বিবি আয়েশা, সফুরা, খোদেজা ও লতা! দুই স্ত্রী ঢাকায়। আয়েশা ও সফুরা গ্রামের বাড়ী লক্ষ্মীপুর চাটখিলের বানসায় থাকে। আয়েশা ছাড়া ১৬ বিবিই ছিলো গৃহ পরিচারিকা! দুই জন কাজের মেয়ে মনোয়ারা ও আকলিমা। মনোয়ারা পঞ্চদর্শী! আকলিমা মাত্র এগারোতে পা দিলো। ইজ্জত মিয়ার পুরো নিয়ন্ত্রণ ওদের ওপর, শুধু লতা ছাড়া! ধীরে ধীরে মনোয়ারা ইজ্জতের আঠারতম বিবি হতে যাচ্ছে!

শহীদবাগে খোদেজা ও লতাকে নিয়ে বাস করে ইজ্জত মিয়া। এদের তিন সন্তান ও দুই কাজের মেয়েসহ সাতজন সদস্যের সংসার এখানে। দুই কাঠার মধ্যে সেমিপাকা বাড়ী! নিজের দু’টি থাকার ঘর ছাড়াও চার ভাড়াটিয়া এবং ইজ্জত মিয়ার দর্জি দোকান রয়েছে। দূরে এক কোনে সবার জন্য দু’টি পায়খানা, খোলা গোসলখানা ও কূয়ো। ইজ্জত মিয়ার একটি ঘরে খোদেজা ও লতা ছেলেমেয়েদের নিয়ে থাকে। বাড়ীর সামনে ঢোকার মুখে তার নিজের ঘর ও দোকান। কাজের মেয়ে দু’টো দিনে কূয়ো থেকে পানি তোলে। থালা বাসন পরিস্কার করে। কাপড় ধোঁয়া, মসলা বাটা, মাছ কাটা ইত্যাদি কাজও করে তারা। আর রাতে ইজ্জত নানার সেবা দেয়া ও অন্যান্য কাজ। একটু এদিক সেদিক হলেই শাস্তি। শহীদবাগ মসজিদের পাশেই নাদুস নুদুস কালো পঞ্চাশোর্ধ ইজ্জত মিয়ার ঠিকানা। পুলিশ কনষ্টেবল ছিলেন। ইউনিফর্ম সেলাই করা ছিলো তার কাজ! নারী কেলেংকারির দায়ে ইজ্জতের চাকরি চলে যায়। তারপর বর্তমান ঠিকানার পাশে সে এক মেসে ওঠে। পাশেই নিবারণ রায়ের বাড়ী। ভাড়াটিয়া হয়ে স্ত্রী আয়েশা নিয়ে এ বাড়ীতে ওঠে ইজ্জত। তিন মেয়ের পিতা ভূমি নিবন্ধন অফিসের অবসরপ্রাপ্ত কেরানি নিবারণের সঙ্গে ইজ্জত সখ্য গড়ে তোলে। ইজ্জত মিয়া তাকে মাঝে মধ্যে টাকা ধার দেয়। সেও নেয়। শান্তশিষ্ট বেচারা বাড়ীওয়ালা নিবারণকে সুকৌশলে এক সময় জোর জবরদস্তি করে উঠিয়ে দেয়। অনেক টাকা পাবে এই অজুহাত তুলে নিবারণের এই দুই কাঠা জায়গা ইজ্জত নিজের নামে লিখিয়ে নেয়। তারপর এক আত্মীয়ের মাধ্যমে ইজ্জত নিবারণ পরিবারকে আখউড়া সিংগাইর বিল সীমান্তের চোরাপথে আগরতলা পাঠিয়ে দেয়। দূর সম্পর্কের এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নেয় বিপদগ্রস্ত নিবারণ। দুর্বলের জায়গা দখল করে নিজের নামে অধিভুক্ত করা ইজ্জতের চরিত্র। গ্রামেও একই কৌশলে জমির মালিক হয়েছে ইজ্জত মিয়া। ইজ্জতের চতুর্থ স্ত্রী লতা এসব কাহিনী ভাড়াটিয়াদের বহুবার বলেছে। ইজ্জতের হাতে মার খেয়েও লম্পট স্বামীর অন্যায়ের প্রতিবাদ করে স্ত্রী লতা একাই। তার অপকর্ম ঠেকায়। মুখের ওপর সত্যটা প্রকাশ করে দেয় লতা। চার ভাড়াটিয়ার প্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের চোখে লোলুপ দৃষ্টিতে তাকায় ইজ্জত। অসম্মান হবে ভেবে কথা বলে না কেউ। ভয়ে সবাই ঘর বন্ধ করে রাখে। দোকান ঘরে মেয়েদের ব্লাউজ ও ছায়া ইজ্জত মিয়া সেলাই করে। নিজের দর্জি দোকানে টুলে বসে তার লম্বা কাঁচা পাকা দাঁড়িতে চিরুনী দিয়ে আচড়ে থাকে ইজ্জত। ভাড়াটিয়া ওয়াজেদ গাজীর স্ত্রী সাজেদা গেইট দিয়ে তার ঘরের দিকে যাচ্ছিলো। এমন সময় ইজ্জত ভাবী বলে ডাক দেয় তাকে। সাজেদা দোকানের সামনে ছোট ছেলেটিকে নিয়ে দাঁড়িয়ে যায়। ইজ্জত তার খাড়া বুকের দিকে কামনার চোখে তাকায়। স্বামী ওয়াজেদ কুমিল্লা শহরে একটি শরীর চর্চা কেন্দ্রের প্রশিক্ষক। পরিবারের কাছে মাসে একবার আসেন। প্রাথমিক শ্রেণীতে পড়ুয়া ছেলেমেয়ে নিয়ে সাজেদা বলতে গেলে এখানে একাই থাকে। কারণে অকারণে ইজ্জত তার ঘরে ঢুকতে চায়। কিন্তু লতার কারণে পিছিয়ে যায়। ইজ্জত মিয়া ২৭ বছরের যুবতী সাজেদাকে বলে।

– এরওই ভাবী! আননের ব্লাউজ ঠিক মত মাপ লই বানাই দিমু, টিয়া লাইগদো ন। বুইজ্জেননি! লজ্জা পেয়ে মুখ লাল হয়ে যায় ভাড়াটিয়া সাজেদার। এ কথা বলার সময় লতা সামনে দাঁড়িয়ে ছিলো। লতা ঝাঁঝালো কণ্ঠে প্রতিবাদ করে।

– হেতি আননের কাচে আইচেনি এ কাজের লাই? বেশরম ব্যাটা! পোন মারেনি আননেরে? ইজ্জত মিয়া টুপিটা খুলে সেলাই মেশিনের ওপর তা রেখে লতাকে ধাওয়া দেয়। চলে যায় সাজেদা! দৌড়ে যায় ইজ্জত বাড়ীর ভেতর।

ঘর থেকে চুলের মুটি ধরে বের করে আনে লতাকে। তারপর মুষ্টিবদ্ধ হাত দিয়ে তার শরীরে সজোরে উপর্যুপরি কিল ঘুষি মারে। চিৎকার দিতে দিতে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে লতা। তারপর তার ক্ষীণকায়া শরীরের ওপর পা মাড়িয়ে চলে যায় ইজ্জত। মাটিতে পড়ে থাকে লতা। রাগ, ক্ষোভ ও ব্যথায় লতা চিৎকার করতে থাকে। প্রতিশোধ নেয়ার কথা ভাবে ক্রন্দনরত লতা। বেশ ক’বার ঘুমন্ত অবস্থায় স্বামীর লম্পট চরিত্রের উপযুক্ত বদলা নেয়ার চেষ্টা করেছে সে। পারেনি সামনে খোদেজা ও মনোয়ারা থাকায়।  

বানসা গ্রামের গরীব কৃষকের ষোড়শী রূপসী মেয়ে লতা। যক্ষাক্রান্ত অসুস্থ পিতার সংসার চলে না। তিন ভাই এক বোন। ভিটে মাটি ছাড়া কিছুই নেই। সাতজনের  খোরাকি যোগানো বেশ কষ্টের। বড় সন্তান তাই পিতামাতার ওপর লতার ওপর চাপ। পাশের ইজ্জত মিয়ার পিতা মরহুম ইন্নাস আলী বাড়ী। সেখানে এবং প্রতিবেশি সন্ধ্যা কাকীর বাড়ীতে সে কাজ করে। লতার প্রতি কুনজর পড়ে ইজ্জতের। লতার জন্য গ্রামের ভিটেবাড়ীতে আসা যাওয়া বাড়ে তার। এক রাতে জোর করে সুন্দরী লতার কুমারীত্ব ছিন্ন করে নেয় বয়স্ক ইজ্জত মিয়া। তারপর ইজ্জতের এ কাজ নিয়মিত হয়ে যায়। অসহায় লতা অনাকাঙিক্ষতভাবে গর্ভবতী হয়। ইজ্জত সটকে পড়ার পথ খোঁজে। কিন্তু গ্রামের সালিশে লতাকে বিয়ে করতে বাধ্য হয় ইজ্জত মিয়া।  

নিকট প্রতিবেশি যোগেন শীলের বিশাল বাড়ীর প্রতিও ইজ্জত মিয়ার লোভ দীর্ঘদিনের। ধর্মভীরু যোগেনের উপযুক্ত মেয়ে দীপালীকেও শ্লীলতাহানি করেছে ইজ্জত। বেয়াজ্জতির এমন আচরণ গ্রামের অনেক মেয়ের সঙ্গেই করেছে সে। ইজ্জত মিয়া পুলিশ, তাই তার অপরাধ ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পেতো না।

পরোপকারি যোগেন শীল। স্ত্রী সন্ধ্যা ও তার ছেলেমেয়েরাও লতাকে বেশ ভালোবাসতো। লতাদের বাড়ী থেকে যোগেন শীলের বাড়ী পাঁচ ছয় মিনিটের পথ। লতা বেশির ভাগ সময় এ বাড়ীতেই কাটাতো। ভালোমন্দ খেয়ে বড় হয়েছে এখানে সে। লতাকেও যোগেন কাকা ও সন্ধ্যা কাকী প্রায় সময়েই সহযোগিতা করতো। পূজা পার্বন ও নানা উৎসবে লতার নিমন্ত্রণ থাকতো। কাপড় চোপড় দিতো। যোগেন কাকা ও সন্ধ্যা কাকী পূজাভক্ত। সকালে ঘুম থেকে ওঠে দরজা খুলে তারা সূর্য প্রণাম করতো। প্রায় সময়ই দেখতো তার ঘরের দূয়ারের সামনে অপবিত্র ও ধর্ম বিরুদ্ধ নানা দ্রব্যাদি। ঠাকুর ঘরে বিভিন্ন দেব দেবীর মূর্তি ছিলো। ভিন্ন ধর্মের কাউকে এ ঘরে ঢুকতে দিতো না যোগেন শীলের পরিবার। লতা দূর থেকে পুজা দেখতো। সন্ধ্যা কাকী লতাকেও প্রসাদ দিতেন। লতা নিজে খেতো আবার মার জন্য নিয়েও আসতো। আগে থেকেই কিশোরী লতার প্রতি ছিলো ইজ্জতের খারাপ নজর। ইজ্জত মিয়ার মা ভালো ছিলো বলে সে বাড়ীতে লতার আসা যাওয়া ছিলো। ইজ্জত চাইতো শুধু তাদের বাড়ীতেই যেন লতা কাজ করে। যোগেন কাকা ও তার পরিবারেরও ভালো চাইতো লতা। কিন্তু এই ইজ্জত মিয়া ও তার বন্ধুদের অত্যাচারে পূজা পার্বন ছাড়াও কোন কাজ ঠিকমতো করতে পারতো না যোগেনরা। ইজ্জতের নিপীড়ন দিনের পর দিন বাড়তে থাকে। ইজ্জত লোক দিয়ে যোগেনের বাড়ীর দুধেল দু’টি গাভী চুরি করায়। তিন বছরে সাতবার যোগেন শীলের বসত ঘরে চুরি হয়। মৃত্যু হুমকির উড়ে চিঠি যায় তার কাছে। বসবাসে অনিরাপদ মনে করে সরল দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে ভিটেমাটি ছেড়ে যোগেন শীল রাতের আধাঁরে বনগাঁ চলে যায়। পরে সাঙ্গ পাঙ্গ নিয়ে এ বাড়ী দখলে নেয় ইজ্জত মিয়া। এসব কথা লতার বেশ মনে পড়ে। ভাড়াটিয়া সাজেদা ভাবীকেও সেসব গল্প বলেছে সে। আজও তার মনে পড়লো যোগেন কাকাদের কথা। মাটি থেকে আস্তে আস্তে ওঠে দাঁড়ায় লতা। তেড়ে যায় ইজ্জতের দোকান ঘরের সামনে। জোরে চেঁচিয়ে ওঠে সে।

– আর জীবনডাও নষ্ট করছস। কম মাইয়ার সব্বনাস করছস নাই! যোয়েন কাকারে কত্তো জালাইছস!। রাইতে কাহা গ টিনের চালায় ডিল মারি ডর দেহাইতি! আইল ঠেলি হেতা গ জমিন লইচস। পুষ্কুনির মাছ রাইতে তুলি নিতি। এই জাগাডার মালিকেরও জমিন নিজের নামে করছস। তর অপর আল্লার গজব পইরবো!

ভাড়াটিয়ারা লতার কথা শুনছিলো। নিজ ঘরের সামনে এসে দাঁড়ায় ভাড়াটিয়া সাজেদা। তার দিকে তাকায় লতা। পোয়াতি খোদেজা বের হয়ে আসে। বিচার চাওয়ার ভঙ্গিতে বলে

– বুইজ্জেননি ভাবী, খানকির পুত ইজ্জইতায় হক্কলরে জালাছে! যেই চাচা হেরে নিজের পোলা মনে কইরা পালচে হেরেও চারে নাই। মাডির মানুস ইরম চাচার জমি জাল করি নিজের নামে লেইক্কা নিচে! হেই দুক্কে চাচাডা মরি গেলো! জোয়ান মাগী দেকলে হেতের জিব্বা লকলক করে! বানসার মানুষ হের অত্যাচারে শ্যাস। এহন বারি যায় না ডরে। গেলে পিডি হোতাই লাইবো। জাউরা কোনাইয়ার!

লতা মাটিতে বসা আকলিমার কাছে এগিয়ে যায়।

– ক কাইল রাইতে কিয়া অইচে? আকলিমা থেমে থেমে বলে

– রাইতে নানা কইলো, মনয়ারারে আর পা টিপি দে! হেতি পা টিপে, মাতা টিপে, পেট টিপে। নানা কয় দুই চলি যা। আর কয় অনদিক ঘুরি থাক। চাইস ন। আই কই এত রাইত কনাই যাউম? মনয়ারারে নানায় হুতি কইলো। মনয়ারা হুতি পইরলো। দেইকলাম নানা মনয়ারার পা টিপে বুক টিপে! আবার হেতিরে আদর করে। ও বাউরে বাউ!  কিচুক্ষণ পর দেহি নানা মনয়ারার পেডে উডি নাচে! এ কথা শুনে ভাড়াটিয়ারা মুচকিয়ে হাসে! কেউ লজ্জায় মুখ লুকায়।

খোদেজা জিহবা বের করে ঘর থেকে বেরিয়ে আসে। আকলিমার মুখ চেপে ধরে। আকলিমা ছুটে পালায়।

শীতের রাত। কুয়াশায় আচ্ছন্ন ঘরের বাহির। পুরুষ লোক থাকলে লতা কারো ঘরে ঢুকে না। ভাই নেই, তাই সাজেদা ভাবীর ঘরে গিয়ে কিছু সময় কাটায় আজও সন্ধ্যায়। দু’জনে গল্প করে। রাত প্রায় পৌনে এগারোটা। ভাড়াটিয়া প্রায় সবাই লেপ ঘুমে। পাঁচ মাসের পোয়াতি খোদেজা গভীর নিদ্রায়। শরীর ব্যথার যন্ত্রণায় জেগে আছে লতা। লতা ও খোদেজার ঘর বরাবর সাজেদার ঘর। হঠাৎ লোক হেঁটে যাওয়ার শব্দ অনুভব করলো লতা। মনে হলো শব্দটা সাজেদার ঘর থেকে আসছে! কি হতে যাচ্ছে? স্টিলের দরজাটা আস্তে করে টেনে ঘর থেকে বের হয় লতা। মাংস কাটার ছুরিটা সন্ধ্যার সময় ধারিয়ে রেখেছিলো সে। ওটা হাতে নেয়। বের হয়ে লতা দেখে সাজেদার ঘরের বারান্দায় দু’জন মাটিতে ধস্তাধস্তিÍ করছে। সাজেদাকে ঝাপটে ধরেছে ইজ্জত। ধস্তাধস্তিতে খুলে গেছে ইজ্জত মিয়ার লুঙ্গি। একটি চাদর পড়ে আছে মাটিতে। হাঁপানো ইজ্জতের কাছে সবেগে এগিয়ে গিয়ে যায় লতা। বা হাতে ধরে ফেলে স্বামীর মধ্যাঞ্চলের মাংসালো ইজ্জত। মোটেও সে দেরি করে না। আর ডান হাতে থাকা ধারালো ছুরিটা বসিয়ে দেয় দীর্ঘদিনের সর্বনাশা দজ্জালটার ওপর। কতল হয়ে যায় ইজ্জতের জননযন্ত্র। সজোরে চিৎকার দিতে থাকে ইজ্জত। জেগে যায় অনেকে। ঘরে ঘরে লাইট জ¦লে ওঠে!

-মনয়ারা! ও খদেজা তরা কোনাই গেলি? য়ায়ারে মারি হালাইছে লতা চুতমারানি। মাটিতে ছটফট করতে থাকে ইজ্জত। মুখ শাড়ীর আচঁল দিয়ে ঢেকে সাজেদা উঠে দাড়াঁয়। ডুকরে ওঠে সাজেদা। ফুপানো কান্নায় লতাকে বলে, আমি পায়খানায় যাইতেছিলাম ভাবী।

রক্তাক্ত ইজ্জতের লুঙ্গি। ছুরিটা ফেলে দিয়ে লতা তার বুকের মধ্যে হাতে রেখে বলতে থাকে

– আল্লা য়ারে মাপ করি দিও। আই বাইচতে পারি নাই হেতার থাই! ইজ্জতের হাততাই এগগা মাইয়ারে বাচাইতে পাইছি! য়ারে মাপ করি দিও। য়ারে মাপ করি দিও!

%d bloggers like this: