বাংলাদেশের সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার তিন দশক / মফিদা আকবর
দক্ষিণ এশিয়ার নারীদের ভাগ্য সাধারণত নির্ধারিত হয় পিতৃতান্ত্রিক ও পুরনো সংস্কার, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক জীবনকে প্রভাবিত করে। এ পর্যায়ে পিতা বা স্বামীর ইচ্ছের কাছেই বলী হতে হয় নারীদের। সে নারী যত মেধাবী বা সাহসী হোক না কেন? এ রকম বাধানিষেধকে উপেক্ষা করে কিছুসংখ্যক নারী যে সমাজে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেনি তাও নয়। তাঁদের একজন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি ব্যক্তিজীবনে নিজের সুখ-সুবিধা বঞ্চিত হয়ে শত-সহস্র বাধা অতিক্রম করে এ বাংলার দুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়ানোর ব্রত নিয়ে বাংলার মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তাই বাংলার জনমানুষও রায় দিয়ে তাঁকে বাংলার প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছেন তাদের নিজেদের স্বার্থেই। পর পর তিন তিনবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তিনি। বর্তমানে চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী। বিষয়টি বাংলাদেশের ইতিহাসে বিরল ঘটনা। শুধু প্রধানমন্ত্রী হয়েই বসে থাকেননি তিনি। বাংলাদেশের সর্বত্র উন্নয়নের জন্য জীবন বাজি রেখেছেন তিনি। সেই অর্থে তাঁকে বাংলাদেশের সফল রাষ্ট্রনায়ক বলা যায়।
আন্তর্জাতিক ফোরামে, দক্ষিণ এশিয়ায়, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন অগ্রণী রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। কারণ বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়ন, ও দ্বিপক্ষীয় সমস্যাবলীর শান্তিপূর্ণ সমাধানে তিনি বদ্ধপরিকর। আজ তাঁর স্থলসীমান্ত চুক্তি ও সমুদ্র বিজয় সবার কাছে বড় জয় হিসেবে প্রতিভাত হচ্ছে; কিন্তু তার চেয়েও বড় বিজয় বা সাফল্য, আদর্শের ভিত্তিতে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করা। অভ্যন্তরীণ প্রতিরোধ ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করা ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে রাষ্ট্র পরিচালনার প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা। এসব বিষয় বিবেচনায় না আনলে আজকের সাফল্য সঠিকভাবে প্রতিভাত হবে না।
রাষ্ট্র স্থাপন করা যত কঠিন তার চেয়েও কঠিন রাষ্ট্র রক্ষা করা। তাদের আন্তর্জাতিক প্রতিভ‚কে পরাজিত করে রাষ্ট্র টিকিয়ে রাখা। রাষ্ট্র রক্ষার অর্থ শুধু তার সীমান্ত অক্ষত রাখা নয়। এর অর্থ যে মৌলিক আদর্শের ভিত্তিতে রাষ্ট্র গঠিত হয়েছিল তা অক্ষত রাখা। বাংলাদেশ পাকিস্তানের অন্তর্গত হবে না, সেদিক থেকে রাষ্ট্র অক্ষত; কিন্তু যখন রাষ্ট্রের মৌলিক আদর্শ জায়গাাঁ হারিয়েছিল। তা পুনরুদ্ধারে নেতৃত্ব দিয়েছেন আওয়ামী লীগ ও এর নেতা শেখ হাসিনা এবং তার মিত্র কিছু শুধু বাম দল। বলা চলে সেই থেকে। যখন তিনি ফিরে এসেছিলেন সেই ১৯৮১ সালেফিরেই তিনি লড়াই শুরু করেছিলেন সে লড়াই এখনও চলছে।
লড়াই শুরু করতে হয়েছিল শেখ হাসিনাকে নিজের দলে নেতৃত্ব দৃঢ় করতে। দলকে পুনর্গঠনে তিনি গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতেই অগ্রসর হয়েছেন। গণতন্ত্রে প্রথম পদক্ষেপ নির্বাচন। আওয়ামী লীগ প্রায় প্রতিটি নির্বাচনেই যোগ দিয়েছে, নির্বাচন কমিশন ও সরকার ষড়যন্ত্র করবে জেনেও। কেননা রাষ্ট্রে তাঁকে থাকতে হলে সেখানে তাঁর একটি জায়গা করে নিতে হবে এবং সংসদীয় পদ্ধতিতে ফিরে আসতে হবে। সেই লড়াইটা শেখ হাসিনা ১৯৯১ সালেই শুরু করেছিলেন সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশাধনী করে। রাষ্ট্রপতি শাসন চালু হওয়ার ১৫ বছর পর দেশ সংসদীয় রাজনীতিতে ফিরে এসেছে। ২৫ বছর আমরা দেখছি সব ধরনের রাজনীতিবিদ এবং সাধারণ মানুষদের দুটি বিষয় মেনে নিতে হয়েছে। যে কারণে, নির্বাচনে না গেলেও নির্বাচনের কথাই বলছে বিএনপি এখন।
‘১৯৭৫ সালের একটি বড় বৈশিষ্ট্য খুনিদের খুন করার অবাধ লাইসেন্স বা দায়হীনতা। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন ঘটনা পকিস্তান ছাড়া আর কোথাও ঘটেনি।
গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় দায়হীনতা থাকতে পারে না। শেখ হাসিনা তাই ইনডেমনিটি বাতিলের সংবিধান সংশোধন করেছেন। এটি নিঃসন্দেহে বড় পদক্ষেপ। শুধু ইনডেমনিটি বাতিল নয়, তিনি বঙ্গবন্ধু ও তাঁর সহযোগীদের হত্যার বিচারও শুরু করেছিলেন। প্রতিশোধ বাসনা থাকলে দ্রæত বিচার ট্রাইব্যুনাল সৃষ্টি করে বিচার করতে পারতেন। তা তিনি করেননি, বিচারের দীর্ঘপথই বেছে নিয়েছিলেন, অপরাধীদের শাস্তিরও বিধান করেছিলেন।
বাংলাদেশের রাজনীতি দুটি ধারায় বিভক্ত। বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান, বাঙালি মানস বনাম পাকিস্তানি মানস। শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ও বাঙালি মানসের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে। লক্ষ্য, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অক্ষত রাখা, জনগণের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করা, ভোট ও ভাতের অধিকার নিশ্চিত করা। সেই লক্ষে নিত্য লড়াইয়ে অবতীর্ণ তিনি। শান্তিচুক্তি করার পর গঙ্গার পানিচুক্তিও ছিল শেখ হাসিনার প্রথম সরকারের একটি বড় ধরনের সাফল্য। তারপর ছিটমহল চুক্তি, সমুদ্র বিজয়, এসবই ছিল ধাপে ধাপে হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কূটনৈতিক প্রজ্ঞায়। সীমান্ত প্রতিবেশিদের বদলানো যায় না এই সত্য মেনে সীমান্ত প্রতিবেশিদের সমঝোতা চুক্তিও একটি বড় পদক্ষেপ। ৫০ বছর ধরে আমাদের এ কথাই বোঝানো হয়েছে যে, ভারত হিন্দু রাষ্ট্র, তাই মুসলমানদের শত্রæ। বাংলাদেশের অনেক মানুষ তা বিশ্বাস করতেন। তাই ভারতের সাথে দুটি বিষয়ে সমঝোতা ছিল সাহসের ব্যাপার। কেননা, তা ছিল সা¤প্রদায়িকতা থেকেও বেরিয়ে আসার চেষ্টা। এ ঘটনা ঘটেছিল ১৮ বছর আগে। খালেদা জিয়া তখনও বলেছিলেন, ফেনী থেকে খাগড়াছড়ি ভারতের হয়ে গেল। এও বলেছেন, হাসিনা ক্ষমতায় গেলে মসজিদে উলুধ্বনি হবে। এ ধরনের মিথ্যাচার রাজনীতি নয়, মানুষকে বিভ্রান্ত করার রাজনীতি এবং এগুলো তৃতীয় শ্রেণির নষ্টামি।
২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ হেরে যায়। ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে যে নারকীয় অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল তা ভুলে যাওয়া যায় না। পত্রিকায় যাদের সুশীল সমাজ বলে বা এলিটরা, যারা কথায় কথায় রক্ষীবাহিনী ও ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের কথা তোলেন, সেই সব ব্যক্তি কিন্তু ওই পাঁচ বছরের অত্যাচার-নির্যাতনের কথা বেমালুম ভুলে যান। তাদের এসব পদক্ষেপ বরং তাদের নষ্ট চরিত্র পরিস্ফুট করছে।
কয়েক মাস আগে ভারতের সংসদ সীমান্ত নির্ধারণ ও ছিটমহল বিনিময় চুক্তি অনুমোদন করেছে। এটি বড় ধরনের বিজয়। এর সাথে সমুদ্রসীমা নির্ধারণ। মিয়ানমারের সাথেও এ ধরনের দুটি নিষ্পত্তি হয়েছে শেখ হাসিনার আমলে। গত ৭০ বছরে যার মীমাংসা করা যায়নি তা করতে পেরেছেন শেখ হাসিনা।
এখন ভারত পাবে ১১৪টি ছিটমহল বা ২৭ হাজার ১৫৯ একর আর বাংলাদেশ পাবে ৫৪টি বা ৭ হাজার ১১০ একর। এ ছাড়া নদী ভাঙন ও নানা কারণে সমাধান হবে ভারতের দখলে থাকা ভারতের ২ হাজার ৮৫৩ একর। সমুদ্রসীমা নিয়েও একই সমস্যা ছিল।
প্রকৃতপক্ষে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই বঙ্গবন্ধু সরকারই প্রথম বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের কর্তৃত্ব নিরূপণে পদক্ষেপ নেয়।
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু নিহত না হলে হয়তো দুপক্ষ একটি সমঝোতায় পৌঁছাত অনেক আগেই। কিন্তু, সে সুযোগ আর ফিরে আসেনি। উল্লেখ্য, ওই সময় সমুদ্রসীমা নির্ধারণ নিয়ে অভ্যন্তরীণ কোনো রাজনীতি হয়নি। বাংলাদেশ চেয়েছে তার ন্যায্য স্বার্থ রক্ষা হোক। ভারত চেয়েছে বঙ্গোপসাগরে তার কর্তৃত্ব থাকুক।
সমুদ্রে মালিকানা পাওয়ার আগে অবস্থাটা কী ছিল? ছিল পাকিস্তান আমলের মতো। মিয়ানমার ও ভারতের কর্তৃত্বেই ছিল সমুদ্রের মহীসোপান। বাংলাদেশ সরকার তেল-গ্যাস উত্তোলনের জন্য বিভিন্ন বøকের কাজ শুরু করলেও ভারত-মিয়ানমারের জন্য কোনো কাজ করতে পারেনি তেমনভাবে। বিদেশি কোম্পানিগুলোও এতে উৎসাহিত হয়নি। বরং বিরোধপূর্ণ এলাকায় ভারত কাজ শুরু করেছিল। এ পর্যন্ত বাংলাদেশে বেশি দিন শাসন ক্ষমতায় ছিল বিএনপি এবং বিএনপি-জামাত। তারা এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিয়ে কিছুই করতে পারেনি। সে ইচ্ছেও তাদের ছিল না। তারা সে কাজটিও শুরু করেনি।
শেখ হাসিনার কৃতিত্ব এই যে, তিনি তাঁর পিতার আরদ্ধ কাজ শুরু করেছিলেন। তাঁর কৃতিত্ব এ কারণে বেশি যে, যে দুটি দেশের সাথে বাংলাদেশের বিরোধ সে দুটি দেশকেই তিনি হেগে সালিশি আদালতে নিয়ে যেতে পেরেছিলেন। তারা সালিশে যেতে রাজি না হলে বাংলাদেশের কিছু করার ছিল না। এই ক‚টনৈতিক কৃতিত্বের কথা কিন্তু অনালোচিত রয়ে গেছে। শেখ হাসিনার সাফল্যের কথাটি বলতে অনেকেই কুণ্ঠিত হন।
সমুদ্রসীমার টেলিগ্রাফে বলা হয়েছে ৪ লাখ ৬ হাজার ৮৩৩ বর্গকিলোমিটারের মধ্যে ভারত পেয়েছে ৩ লাখ ২২০ বর্গকিলোমিটার এবং বাংলাদেশ ১ লাখ ৬ হাজার ৬১৩ বর্গকিলোমিটার। এ পরিসংখ্যান কারণ, ভারতকে যে ২ লাখ বর্গকিলোমিটার দেয়া হয়েছে তা কখনই বিতর্কিত ছিল না। আসলে বিতর্কিত এলাকা ছিল ১ লাখ ৭২ হাজার ১৯৭ বর্গকিলোমিটার এবং এর মধ্যে ভারত হারিয়েছে ১ লাখ ৬ হাজার ৬১৩ বর্গকিলোমিটার।’
তা হলে ব্যাপারটা কী দাঁড়াল? বাংলাদেশে আগামী এক দশকে গ্যাস শেষ হয়ে যাবে। এতদিন সমুদ্রে বøক ভাগ করেও বাংলাদেশ মিয়ানমার আর ভারতের আপত্তির কারণে গ্যাসক্ষেত্র অনুসন্ধান করতে পারেনি। বাংলাদেশ ১০টি বøক করেছিল। ভারত বলেছিল এগুলো তাদের। এখন দেখা যাচ্ছে সবই বাংলাদেশেরমাত্র ৫টিতে ভারতে সামান্য অংশ আছে।
সমুদ্রের মৎস্য সম্পদেরও বিরাট অংশ এখন বাংলাদেশের। উন্মুক্ত সাগর ছাড়া, হাড়িয়াভাঙ্গার অর্ধেক পর্যন্ত যেতে পারবে বাংলাদেশের জেলেরা। গভীর সমুদ্রবন্দরও নির্মাণ করা যাবে। এক কথায়, বর্তমান সরকার নতুন প্রজন্মের জন্য এ সম্পদের স্বর্ণ দুয়ার উন্মুক্ত করে দিয়ে গেল। এখন সম্পদ আহরণের সুষ্ঠু পরিকল্পনা শুধু দরকার।
সমুদ্র জয়ের পরও আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনাকে তীব্রভাবে গাল-মন্দ করতে ভোলেননি খালেদা জিয়া ও বিএনপি এবং বাংলার কিছুসংখ্যক জনমানুষও। কারণ যত সুনামই শেখ হাসিনা করুন না কেন ভাল তারা বলবে না।
বিএনপির সবচেয়ে বড় অপরাধ এবং যে অপরাধ ক্ষমার অযোগ্য, তা হলো গোলাম আযম-নিজামী বা জামাত বা ১৯৭১ সালের খুনিদের ক্ষমতায় বসানো। বিশ্বে এ ধরনের ঘটনা কখনও ঘটেনি। কিন্তু তাও এলিট ও মিডিয়া দেশের ৩০ শতাংশ মানুষ মেনে নিয়েছিল।
স্বাধীনতা বিরোধীদের সাথে আঁতাত করা তো রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে এক ধরনের ষড়যন্ত্র। এটি কেন গ্রহণযোগ্য হলো গণতন্ত্রের নামে? আজকে যারা নির্বাচনে গণতন্ত্র পরাজিত হয়েছে বলে বড় কথা বলেন, তাদের কেন তখন মনে হয়নি স্বাধীনতা বিসর্জিত হচ্ছে? ওই সময় তারা যে কাজটি করেছিল গণতন্ত্রের নামে, তা হলো মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বদলে দেয়া এবং ১৯৪৭ সালকে ১৯৭৫ সালের সাথে যুক্ত করা। পাকিস্তানি মানসের প্রধান বৈশিষ্ট্য আবার তারা ফিরিয়ে এনেছিল, আওয়ামী লীগ ভারতের দালাল অর্থাৎ হিন্দুদের দালাল অর্থাৎ এরা ধর্মবিরোধি। এই মিথ্যা প্রচারে বড় ভ‚মিকা পালন করেছে ধর্মব্যবসায়ী। এই মিথ্যার বড় ভ‚মিকা পালন করেছে ধর্মব্যবসায়ী স্বার্থান্বেষী একটি বিশেষ গোষ্ঠী। শুধু তাই না, আওয়ামী লীগ বা সেক্যুলারপন্থিদের দমনের জন্য ফ্রণ্ট হিসেবে জঙ্গিদের সৃষ্টি করা হয়েছে সুচতুরভাবে। সরকারি উদ্যোগে সে সময়ের বিরোধীদলের নেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করেছে। ওই পাঁচ বছরে তারা যা করেছিল, তাঁকে অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের নেতা বা দলের পক্ষে টিকে থাকা মুশকিল হতো। আওয়ামী লীগ বা হাসিনাকে তখন কোনো বিদেশি সরকার এমনকি ভারত সরকারও সমর্থন করেনি। কিন্তু শেখ হাসিনা দলকে ধরে রেখেছিলেন, নিজেও টিকে ছিলেন মনের জোরে, বাঙালির ভালোবাসার জোরে এবং আদর্শের জোরে। অন্তর্বর্তীকালীন সামরিক শাসকরাও তাঁকে দমাতে পারেনি। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের জয় অনিবার্য ছিল। ২০০১ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত খালেদা-নিজামী-মইনের অত্যাচার ও লুটপাটে বিএনপি-জামাত সমর্থকও অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। ফলে বিএনপি-জামাতরা এমনভাবে পরাজিত হলো যে, দল হিসেবে টিকে থাকাই তাদের জন্য এক কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে গেল।
শেখ হাসিনা যখন কঠোরভাবে জঙ্গি সন্ত্রাস দমন করেছেন, তখন আবার আন্তর্জাতিক সমর্থন ফিরে পেতে থাকেন। কারণ পাশ্চাত্যে এবং অনেক জায়গায় ধর্মের নামে সন্ত্রাসের সংখ্যা বাড়ছিল। নিজেরা সন্ত্রাসের শিকার হওয়ায় তারা অনুধাবন করতে পেরেছিল কিছুটা যে, সন্ত্রাসী রাজনৈতিক দল সমর্থন করা যায় না।
জঙ্গিবাদ নির্মূল ও রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যেই কিন্তু মানবতা-বিরোধী অপরাধের বিচার বর্তমান সরকার শুরু করেছিল। শেখ হাসিনা দলের ও সরকারের নেতৃত্বে না থাকলে এ বিচার যে হতো না, এটি হলফ করে বলা যায়। এটি একটি আদর্শগত অবস্থান। একই সাথে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমেও যে ১৯৭২ সালের রাষ্ট্রীয় মূলনীতিগুলো সংবিধানে সংযোজন করেছেন, তাও একটি অর্জন।
১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় না আসতে পারলে যে রাষ্ট্রনায়কোচিত সিদ্ধান্তগুলো নিতে পেরেছেন আজকে সময়ের প্রেক্ষাপটে শেখ হাসিনা তা কি সম্ভব হতো? তিনি যে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা ছিল অত্যন্ত দ্বিধাহীন এবং পরীক্ষিত। তিনি ভেবে-চিন্তে সুদৃঢ় পদক্ষেপের মাধ্যমে এ সিদ্ধান্তগুলো নিয়েছিলেন যা আজকের বাংলাদেশের জন্য মাইলফলক দৃষ্টান্ত হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। কারণ, পদ্মা সেতু নিয়ে যে কাÐ হলো তা ছিল সুপারপাওয়াররা যা চায় দুর্বল দেশ তা মেনে নেবে কী নেবে না তার পরীক্ষা। এই দ্ব›েদ্ব আমরা জিততে না পারলে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান দৃঢ় হতো না। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এই জেতার জন্য যে লড়াইটা করেছেন শেখ হাসিনা তা যে জ্ঞান রাজনীতিবিদের জন্য দৃষ্টান্তস্বরূপ। শেখ হাসিনা যে সাহস দেখিয়েছিলেন আজ তা মাইলফলক। ১৯৭১’৭২ সালে সে সাহস দেখিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু ও তাজউদ্দিন আহমদ। হ্যাঁ, তার ফল প্রথমোক্ত দুজন ভোগ করেছেন। বাংলাদেশের মতো একটি ক্ষুদ্র উন্নয়নশীল দেশের জন্য বিরল ঘটনাযুক্তরাষ্ট্রের ডিকটেক্ট শেখ হাসিনা মানেননি, এটি যুক্তরাষ্ট্রের এস্টাবলিশমেন্ট কখনও ভুলবে না। তারা প্রতিশোধ নেবে। কিন্তু শেখ হাসিনা এতেও ভ্রƒক্ষেপ করেননি। শুধু তাই নয়, নিজ অর্থায়নে পদ্মা সেতু তৈরির উদ্যোগ ও বিশ্বব্যাংকের বিপরীতে চীনের নেতৃত্বে যে ব্যাংক গড়ে উঠছে, তাতে যুক্ত হওয়ার সাহস ও প্রজ্ঞার ব্যাপার ছিল।
এ রাষ্ট্র নির্মাণে বঙ্গবন্ধু মুজিবকে আত্মত্যাগ শুধু নয়, রাষ্ট্রের জন্মের পর থেকেই প্রবল বিরোধিতার সম্মুখীন হতে হয়েছে তাঁর দল ও বিরোধীদের থেকে। শেখ হাসিনা যখন দেশে ফেরেন, তখন তাঁর নিকটজন কেউ এদেশে ছিলেন না স্বামী ছাড়া। বিশ্বাস করার মতো লোকও ছিল না। জেনারেল জিয়া তাঁকে দেশে আসতে দিতে বাধ্য হয়েছিলেন। এরশাদ পরিষ্কার ভাষায় বলেছিলেন, আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন না। সেই আমল থেকে এ পর্যন্ত তাঁকে বারবার মৃত্যুর সম্মুখীন হতে হয়েছে। এরশাদ আমলে প্রথম তাঁকে হত্যার চেষ্টা করা হয়। ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি চট্টগ্রামে এরশাদ পুলিশের সাহায্যে শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করেন। ওই দিন সেখানে আট দলের এক সমাবেশ ছিল। মিছিলে নেতৃত্ব দিয়ে শেখ হাসিনা সমাবেশস্থলে যাচ্ছিলেন। বিনা উসকানিতে পুলিশ, আর্মড পুলিশ আর বিডিআর মিছিলের ওপর গুলি চালায়। ২৪ জন মৃত্যুবরণ করেন, আহত হন ৫৬ জন। ওই ৫৬ জনের মধ্যে পরে আরও অনেকের মৃত্য হয়। এটি চট্টগ্রাম হত্যাকাÐ নামে পরিচিত। এ নিয়ে মামলা হয়েছিল। সে মামলার নিষ্পত্তি এখনও হয়নি।
খালেদা জিয়া এবং খালেদা জিয়া ও নিজামীর আমলে শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য কয়েকবার চেষ্টা চালানো হয়। সবচেয়ে বড় চেষ্টা ছিল টুঙ্গিপাড়া ও গুলিস্তানে। ২১ আগস্ট ২০০৪ গুলিস্তানে শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য খালেদা জিয়া ও তার পরিবার এবং গোয়েন্দা সংস্থা সরাসরি জড়িত ছিল। তিনি প্রাণে বেঁচেছেন। তবে মৃত্যু হয়েছে দলের অনেকের। এসব ঘটনায় মামলা হয়েছে। কোনো মামলাই নিষ্পত্তি হয়নি। এটি গ্রহণযোগ্য কোনো ব্যাপার নয়।
শেখ হাসিনা যতবার ক্ষমতায় থেকেছেন, ততবারই তাঁকে অজস্র প্রতিক‚লতার সম্মুখীন হতে হয়েছে। এদেশের সামরিক, বেসামরিক আমলাকুলের এবং এলিটদের আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার প্রতি গোপন একটি বিদ্বেষ-ভাব আছে। ২০০৭ সাল থেকে প্রতিক‚লতার সম্মুখীন তাঁকে বেশি হতে হয়েছে। ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরপরই বিডিআর হত্যাকাÐের ঘটনা ঘটে। তারপর খালেদা-নিজামীর জ্বালাও-পোড়াও সন্ত্রাসের রাজনীতি। নির্মমভাবে হেফাজতের ঢাকা দখল চেষ্টা। মিডিয়ার বিরুদ্ধাচরণ। আন্তর্জাতিকভাবে বিরুদ্ধাচরণ। সব প্রতিক‚লতা তিনি মোকাবিলা করেছেন এক হাতে এবং একা। এবং বাঙালিত্বের বৈশিষ্ট্যগুলো আবার পুনর্স্থাপন করেছেন। বঙ্গবন্ধু এই রাষ্ট্র গঠন ও তার কাঠামো নির্মাণ করে দিয়েছিলেন, তাঁর কন্যা তা দৃঢ় করেছেন। গত প্রায় ৪৫ বছরে শেখ হাসিনার সময়ই বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশ এখন যত সমৃদ্ধ গত ৫০০ বছরে তত সমৃদ্ধ ছিল না। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি রূপকল্প ২০২১-এর ভিশন এবং ২০৪১-এর মিশন সালের সফল করার সময় পান তাহলে বলা যায় অবশ্যম্ভাবী আগামীর বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ থেকে উন্নত দেশে পরিণত হবে। একটানা ৯২ দিন দেশের বিরুদ্ধে অবরোধ-হরতাল চালিয়েও খালেদা কিছু করতে পারেননি। কেন পারেননি তা এদেশের জনগণ ভালোভাবেই উপলব্ধি করতে পারেন। কারণ বর্তমান প্রধানমন্ত্রী এদেশের উন্নয়নের জন্য প্রতিটি ক্ষেত্রে অত্যন্ত ভেবেচিন্তে পদক্ষেপ নিয়েছেন যার জন্য এদেশের আপামর মানুষ দীর্ঘ অপেক্ষায় ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ক্রমাগত উন্নতির পথে এগিয়ে গেলেও এখনও তার পথ কোনোদিন কুসুমাস্তীর্ণ ছিল না। বরং বড় বেশি কণ্টকাকীর্ণ, বিপদসংকুল। স্বদেশে, প্রিয় মাতৃভ‚মিতে প্রত্যাবর্তনের পর শেখ হাসিনাকে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করতে হয়েছে ও হচ্ছে। একদিনে বিএনপি-জামাতের মৌলবাদী জঙ্গি তৎপরতা ও প্রবল বিরোধিতা; অন্যদিকে প্রশাসন ও বিভিন্ন দল, গ্রæপ ও ব্যক্তির পাকিস্তানি ও হেজাবি মনোভাব এসবই মোকাবিলা করতে হচ্ছে তাঁকে। এর পাশাপাশি সচল রাখতে হচ্ছে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন। ঘরে-বাইরে শত বাধা-বিঘœ, শত প্রতিক‚লতা অতিক্রম করে কিন্তু এই রাষ্ট্র গঠন হয়েছিল বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে। এ রাষ্ট্র যখন তার মৌলিকত্ব হারাচ্ছিল এবং রাষ্ট্র ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছিল, তখন শেখ হাসিনা সেই রাষ্ট্রের মৌলিকত্ব ফিরিয়ে ব্যর্থ রাষ্ট্র থেকে তা সম্ভাবনাময় রাষ্ট্রে পরিণত করার কৃতিত্বও শেখ হাসিনার। এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও মতৈক্য হয়েছে। আগামীতে তাঁকে আরও লড়াই চালিয়ে যেতে হবে, মিশন ও ভিশনকে চ‚ড়ান্ত সাফল্যের দিকে নিয়ে যেতে হলে। তাঁর পিতা আজন্ম সামরিক বা স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। তিনিও সেই ঐতিহ্য বজায় রেখেছেন এবং সেনারা যাতে উচ্চাকাক্সক্ষাী না হয় সে কারণে পঞ্চদশ সংশোধনী এনেছেন, যার একটি ধারায় আছে যিনি বন্দুকের সাহায্যে ক্ষমতা দখল করবেন, তিনি ক্ষমতাচ্যুত যখন হবেন [হতেই হবে বাংলাদেশের ঐতিহ্যই তা] তখন তাঁকে দেশদ্রোহিতার অভিযোগে বিচারের সম্মুখীন হতে হবে। প্রতিবেশীদের সাথে বন্ধুত্ব ও জঙ্গিবাদ এবং সন্ত্রাস দমনের কারণে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে তার গ্রহণযোগ্যতা বেড়েছে। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন পদক্ষেপের দরুন বিশেষ করে অর্থনৈতিক উন্নয়ন, স্বাস্থ্যসেবা ও নারী উন্নয়নের কারণে বাংলাদেশ অনেকটা রোল মডেলের অভিধা পেয়েছে। বাংলাদেশকে এখন উপেক্ষা করা যায় না। তিনি দেশের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি করেছেন। বাংলাদেশের নিরাপত্তা সংরক্ষণ করেছেন, বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মৌলিকত্ব ফিরিয়ে আনছেন। তিনি সাধারণ মানুষের মর্যাদা ফিরিয়ে এনেছেন। দু’বেলা দু’মুঠো অন্নের ব্যবস্থা, করেছেন। অর্থাৎ মোটা ভাত-মোটা কাপড়ের ব্যবস্থা করেছেন। উন্নয়নের রোল মডেল হয়েছেন। বাংলাদেশের এখন বিদেশি সাহায্য না পেলেও চলবে, মুখ থুবড়ে পড়বে না। আলু থেকে জাহাজ সবকিছুই রপ্তানি করছে বাংলাদেশ। এখন বাংলাদেশের কোনো জেলায় মঙ্গা নেই। দারিদ্র্যের হার কমছে। দারিদ্য আছে; কিন্তু ক্ষুধার্ত হয়ে বাংলাদেশে আর কারও মৃত্যু হবে কিনা সন্দেহ। নারীর ক্ষমতায়ন হয়েছে, শিক্ষার হার বাড়ছে, যেদিকে তাকাই সেদিকেই উন্নয়ন আর উন্নয়ন। গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি পাবে, উন্নয়ন যত অগ্রগতি পাবে। রাষ্ট্রের সা¤প্রদায়িকীকরণ তিনি প্রতিরোধ করছেন। এজন্য তাঁকে নিত্য লড়াই করতে হয়েছে এবং হচ্ছে পাকিস্তানি- বাঙালি, রাজনৈতিক দুর্বৃত্ত ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে। বাংলাদেশের সবচেয়ে ক্ষতি করেছেন জিয়াউর রহমান। সেই ক্ষতি ও সেই ক্ষত থেকে পাকিস্তানি মানসের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনা যে লড়াই শুরু করেছিলেন, তা এখনও শেষ হয়নি। সেটি চালাতে হবে অবিরাম, চলবে। রাজনৈতিকভাবে শেখ হাসিনার রাজনীতি বা বাঙালিত্বের লড়াইয়ের বিষয়টা নতুন জেনারেশনের মনে প্রোথিত করতে হবে। মনোজগতে আধিপত্য বিস্তার করতে হবে। বাংলাদেশকে শেখ হাসিনা ফিরিয়ে এনেছেন মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে। সামরিক শাসক ও বিএনপি-জামাত বাংলাদেশকে প্রায় ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। অথচ শেখ হাসিনা এখন বাংলাদেশকে সবল রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন। আমি যা বর্ণনা করলাম তা হলো একটি সংক্ষিপ্তসার মাত্র। ১৯৭৫ সালের পর বাংলাদেশের আর কোনো রাজনীতিবিদ বা সরকারপ্রধানের এত অর্জন বা সাফল্য নেই। শেখ হাসিনার আরও অনেক করার আছে দেশের জন্য তাই নিত্য লড়াই করে যেতে হবে তাঁকেএ কামনাই করি।
বাঙালিরা বাঙালিত্ব দর্শনে বিশ্বাসী এবং সে কারণে তার নেতৃত্বে আস্থাশীল। মানবতাবিরোধি অপরাধের বিচার তিনি করছেন, এ কারণেও তাঁর প্রতি এ বাংলার মানুষ কৃতজ্ঞ।
বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা টানা তৃতীয়বারের এবং চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী। বারবারই তাঁর আমলেই যত সফলতা এসেছে। স্বাধীনতার সময়ে এদেশে লোকসংখ্যা ছিল সাড়ে সাত কোটি। আর এখন সেটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ষোল কোটি। এই ষোল কোটি মানুষের জন্য তিনিই এদেশে সর্বপ্রথম খাদ্যে সফলতা এনেছেন। বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধান করেছেন, নারী শিক্ষার হারসহ শিক্ষার হার বাড়িয়ে আজকে দেশকে অনেকটাই নিরক্ষরমুক্ত করেছেন, মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করেছেন, ৪১ বছরের ঝুলে থাকা স্থলসীমান্ত চুক্তি, সমুদ্র বিজয়, স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ বাংলাভাষাকে আন্তর্জাতিক মর্যাদায় উন্নীত করেছেন।
অনুন্নত বাংলাদেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তর করা হয়েছে। তৃণমূল পর্যায়ের গ্রামে-গঞ্জে পর্যন্ত তথ্য-প্রযুক্তির বিস্ময়ের আলো ছড়িয়ে পড়েছে, যোগাযোগে অসামান্য-সাফল্য এসেছে। কুড়িল ফ্লাইওভার, মৌচাক ফ্লাইওভার, যাত্রাবাড়ি ফ্লাইওভার, হাতির ঝিলের মনোরম রাস্তা, গঙ্গার পানি চুক্তি, চট্টগ্রামে শান্তিচুক্তি, বঙ্গবন্ধুর হত্যার ইনডেমনিটি বিল বাতিল, বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার এবং যুদ্ধাপরাধীর বিচারসহ অসংখ্য সাফল্য। বর্তমানে কোভিড ১৯-কেও তিনি মোকাবেলা করছেন শক্ত হাতে।
২০২১ সালের ভিশন আর ২০৪১-এর মিশন যদি এদেশে সফল হয়, যদিও এ মিশন এবং ভিশন চলমান কার্যাক্রমের প্রক্রিয়াধীন। এসব কার্যক্রম চলছে দ্রæতগতিতে। এর ধারাবাহিক সাফল্যই এদেশকে প্রাচ্যের সুইজারল্যান্ডে পরিণত করবে। সুতরাং দ্বিধাহীন ভাষায় বলা যায় যে, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের সফল রাষ্ট্রনায়ক। আমরা তাঁর দীর্ঘায়ু কামনা করি।
Facebook Comments Sync